আজকাল ওয়েবডেস্ক:  অনেকে মনে করেন, বিনিয়োগ না করাই তাদের অর্থকে সবচেয়ে নিরাপদ রাখে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা দেখিয়েছেন, এই “নিরাপত্তা”র ধারণা আসলে কতটা বিভ্রান্তিকর।


অদৃশ্য ক্ষতি: মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব
ভারতে বর্তমানে মুদ্রাস্ফীতির হার প্রায় ৬%, অথচ বেশিরভাগ সেভিংস অ্যাকাউন্টে সুদের হার মাত্র ২% থেকে ৩%।
এর মানে হল, আপনার ব্যাঙ্কে থাকা টাকার পরিমাণ ঠিক থাকলেও তার ক্রয়ক্ষমতা প্রতি বছর কমছে।


উদাহরণস্বরূপ, আজ যদি আপনার ১০ লাখ টাকায় যা কেনা যায়, এক বছর পর সেই একই জিনিস কিনতে লাগবে ১০.৬০ লাখ টাকা। কিন্তু আপনার ব্যাঙ্ক আপনাকে দেবে সর্বাধিক ১০.৩০ লাখ — অর্থাৎ আপনি প্রতি বছর প্রায় ৩০,০০০ টাকার প্রকৃত ক্ষতি করছেন, কোনও কিছু না করেই।


 “নিরাপত্তা” মানে স্থবিরতা নয়
নিরাপত্তা মানে ঝুঁকি এড়ানো নয়, বরং বুদ্ধিদীপ্ত ভারসাম্য বজায় রাখা। ধরে নিন ৩ লাখ রাখা হয়েছিল জরুরি প্রয়োজনে নগদ অর্থ হিসেবে, আর ৭ লাখ বিনিয়োগ করা হয়েছিল স্বল্পমেয়াদি ঋণ তহবিল ও ইনডেক্স ফান্ডে। ফলাফল? মাত্র এক বছরের মধ্যে ক্লায়েন্টটি সেভিংস অ্যাকাউন্টে রাখলে যা পেতেন, তার চেয়ে প্রায় ৬০,০০০ বেশি লাভ করেন  কোনও বড় ঝুঁকি না নিয়েই।

আরও পড়ুন: দীপাবলিতে সোনার কেনাবেচা ও উপহার: করের নিয়ম জানুন আগে, পরে নয়


 “কিছু না করা”ই আসল ঝুঁকি
অনেকেই মনে করেন কিছু না করা মানেই নিরাপদ থাকা। কিন্তু বাস্তবে এটা সবচেয়ে বড় ঝুঁকি। কারণ, বাজারের দাম, মুদ্রাস্ফীতি, ও জীবনযাত্রার খরচ থেমে থাকে না। আপনার টাকা যদি বাড়ে না, তাহলে সেটি অটোমেটিকভাবে কমছে। দীর্ঘ সময় ধরে বড় অঙ্কের টাকা সেভিংস অ্যাকাউন্টে ফেলে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। নিরাপদ কিন্তু লাভজনক বিকল্প যেমন Recurring Deposit, Debt Fund, Index Fund বা Liquid Fund — এগুলিও চেষ্টা করা যায়। বিনিয়োগ মানেই ঝুঁকি নয়; বরং ঝুঁকিকে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করা শেখা।


সোনা, গাড়ি বা গ্যাজেটের মতো, আপনার টাকাকেও কাজ করতে হয়। যদি সেটি শুধু ঘুমিয়ে থাকে ব্যাঙ্কে, তবে সময়ের সঙ্গে তার মান কমবেই। অর্থাৎ, অচল টাকা মানেই নীরব ক্ষতি। স্মার্ট বিনিয়োগই আপনার অর্থকে সত্যিকার নিরাপত্তা দেয় মুদ্রাস্ফীতির আগুনে গলে যাওয়া থেকে।