আজকাল ওয়েবডেস্ক:  মঙ্গলবারের লেনদেনেও ভারতের শেয়ারবাজার টানা চতুর্থ দিনের মতো উর্ধ্বমুখী ধারা বজায় রেখেছে। তবে দিনের শেষভাগে মুনাফা বুকিং ও খাতভিত্তিক ওঠানামার কারণে সূচকের লাভ সীমিত থেকেছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকের আয়ের প্রত্যাশা তুলনামূলকভাবে ম্লান থাকায় বিনিয়োগকারীরা সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন। এর ফলে প্রাথমিক উত্থানের পর ফ্ল্যাট ধরণের লাভে বাজার দিন শেষ করে।


সেন্সেক্স দিনশেষে ১৩৬.৬৩ পয়েন্ট বা ০.১৭% বেড়ে ৮১,৯২৬.৭৫-এ স্থির হয়। লেনদেন চলাকালে এটি সর্বোচ্চ ৮২,৩০৯.৫৬ পর্যন্ত উঠেছিল — অর্থাৎ দিনের উচ্চতম স্তর থেকে প্রায় ৪০০ পয়েন্ট নিচে নামতে হয় সূচককে। অন্যদিকে, নিফটি ৩০.৬৫ পয়েন্ট বা ০.১২% বেড়ে ২৫,১০৮.৩০-এ বন্ধ হয়।


দিনভর ওঠানামার মধ্যে কিছু বড় স্টকে লাভ দেখা যায়। ভারতি এয়ারটেল, এইচসিএল টেক, আল্ট্রাটেক সিমেন্ট, পাওয়ার গ্রিড, এইচডিএফসি ব্যাংক, বাজাজ ফাইন্যান্স, টাটা স্টিল এবং আইসিআইসিআই ব্যাংক ছিল উল্লেখযোগ্য গেইনার। বিপরীতে, অ্যাক্সিস ব্যাংক, টাটা মোটরস, ট্রেন্ট এবং ইনফোসিস-এর শেয়ারে বিক্রির চাপ দেখা যায়।

আরও পড়ুন: জাতীয় সেভিংস সার্টিফিকেট: অক্টোবর-ডিসেম্বর সুদের হার দেখেই লাফিয়ে উঠবেন


নির্বাচিত শেয়ারে মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রবণতা বাজারের গতি কিছুটা কমিয়ে দেয়। বিশেষ করে অ্যাক্সিস ব্যাংক, টাটা মোটরস, ট্রেন্ট ও ইনফোসিস-এ বিনিয়োগকারীরা আংশিক মুনাফা তোলেন। একইসঙ্গে, এফএমসিজি খাতেও দুর্বলতা দেখা যায়।


বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দ্বিতীয় প্রান্তিকের আয় নিয়ে বাজারের প্রত্যাশা সীমিত থাকায় সূচক প্রায় স্থিতিশীল লাভে শেষ হয়েছে। এখন বাজারের স্বল্পমেয়াদি নজর কর্পোরেট মন্তব্য ও তৃতীয় প্রান্তিকে সম্ভাব্য পুনরুদ্ধারের দিকেই ঘুরবে। আর্থিক খাতের স্টকগুলো আরবিআই-এর সাম্প্রতিক নীতি সংস্কারের ফলে ইতিবাচক গতি পেয়েছে, তবে এফএমসিজি খাতে প্রাক-ফলাফল আপডেট দুর্বল থাকায় সেক্টরটি পিছিয়ে পড়েছে।”


মঙ্গলবার বাজারে অস্থিরতা বেড়ে যায় কারণ এটি ছিল নিফটি ডেরিভেটিভসের সাপ্তাহিক এক্সপায়ারি। বাজার অংশগ্রহণকারীরা জানিয়েছেন, এক্সপায়ারির আগে ট্রেডাররা তাদের পুরনো পজিশন বন্ধ করে বা পরবর্তী কন্ট্রাক্টে রোলওভার করেন, যার ফলে তীব্র ওঠানামা দেখা দেয়। এই ধরণের সেশন সাধারণত ভোলাটাইল থাকে, এবং স্বল্পমেয়াদী ব্যবসায়ীরা এতে দ্রুত লাভ-ক্ষতির মুখোমুখি হন।


বাজারে বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা আবারও নেট বিক্রেতা হিসেবে সক্রিয় ছিলেন। সোমবার তারা প্রায় ৩১৩.৭৭ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে। এই ধারাবাহিক বিক্রি বিনিয়োগকারীদের মনোভাবের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিদেশি তহবিলের বহিঃপ্রবাহ সাধারণত রুপি দুর্বল করে এবং বাজারে চাপ সৃষ্টি করে।


মঙ্গলবারের লেনদেনে সেন্সেক্স ও নিফটি উভয়েই সামান্য লাভে বন্ধ হলেও বাজারের গতিপ্রকৃতি ছিল অনিশ্চিত। মুনাফা বুকিং, এক্সপায়ারির প্রভাব এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিক্রি — এই তিনটি কারণ মিলিয়ে সূচককে প্রাথমিক লাভ ধরে রাখতে বাধা দেয়। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আসন্ন Q2 FY26 কর্পোরেট আয়ের বাজারের দিকনির্দেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। আর্থিক খাতের ইতিবাচক প্রবণতা বাজারকে কিছুটা স্থিতিশীল রাখলেও, আইটি ও এফএমসিজি খাতের দুর্বল পারফরম্যান্স সূচকের গতি সীমিত করতে পারে।