আজকাল ওয়েবডেস্ক: টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস ২০২৫–২৬ অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক ফলাফল প্রকাশ করেছে। কোম্পানিটি বৃহস্পতিবার জানায়, আগের বছরের তুলনায় তাদের নিট মুনাফা বেড়েছে ১.৪ শতাংশ। যদিও এই বৃদ্ধি প্রত্যাশার তুলনায় কিছুটা কম।


চলতি ত্রৈমাসিকে টি–সিএস-এর নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১২,০৭৫ কোটি টাকা, যেখানে আগের বছর একই সময়ে তা ছিল ১১,৯০৯ কোটি টাকা। বাজার বিশ্লেষকরা ধারণা করেছিলেন, কোম্পানির মুনাফা প্রায় ১২,৫৭৩ কোটি টাকায় পৌঁছাতে পারে, তবে বাস্তব ফল সেই অনুমানের চেয়ে খানিক নিচে এসেছে।


অপারেশনাল রাজস্বে কোম্পানির আয় বেড়েছে ২.৪ শতাংশ — ৬৪,২৫৯ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে তা দাঁড়িয়েছে ৬৫,৭৯৯ কোটি টাকায়। গত ত্রৈমাসিকের তুলনায় আয় বেড়েছে ৩.৭ শতাংশ, যা ছিল ৬৩,৪৩৭ কোটি টাকা। স্থিতিশীল মুদ্রা অনুযায়ী আয় বেড়েছে ০.৮ শতাংশ, যা বিশ্বের অনিশ্চয়তার মধ্যে তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি হিসেবে ধরা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: নজরে ২০২৬, ঘর গোছাল তৃণমূল কংগ্রেসের সামাজিক মাধ্যম


বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, টি–সিএস এই ত্রৈমাসিকে প্রতি ইকুইটি শেয়ারে ১১ টাকার দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ অক্টোবর ২০২৫, এবং লভ্যাংশ প্রদান করা হবে ৪ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে।


টি–সিএস জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক ব্যবসায় সংস্থার আয় স্থিতিশীল রয়েছে এবং গত ত্রৈমাসিকের তুলনায় ০.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মূল খাতগুলির মধ্যে ব্যাংকিং, ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস ও ইন্স্যুরেন্স (বিএফএসআই) সেগমেন্টে বৃদ্ধি ১.১ শতাংশ, টেকনোলজি ও সার্ভিসেস খাতে ১.৮ শতাংশ, লাইফ সায়েন্স ও হেলথকেয়ার খাতে ৩.৪ শতাংশ, ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে ১.৬ শতাংশ এবং কমিউনিকেশন, মিডিয়া ও ইনফরমেশন সার্ভিসেস সেগমেন্টে ০.৮ শতাংশ বৃদ্ধি দেখা গেছে।


চলতি ত্রৈমাসিকে টি–সিএস-এর অপারেটিং মার্জিন বেড়ে হয়েছে ২৫.২ শতাংশ, যা আগের ত্রৈমাসিকের তুলনায় ৭০ বেসিস পয়েন্ট বেশি। কোম্পানি জানিয়েছে, এই উন্নতির পেছনে মূল কারণ খরচ নিয়ন্ত্রণ ও অপারেশনাল দক্ষতা বৃদ্ধি। নিট মার্জিন দাঁড়িয়েছে ১৯.৬ শতাংশে।


অপারেশন থেকে নগদ প্রবাহ নিট আয়ের ১১০.১ শতাংশ, যা কোম্পানির শক্তিশালী নগদ সঞ্চয় ক্ষমতার প্রমাণ। এই সময় কোম্পানির মোট চুক্তি মূল্য দাঁড়িয়েছে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বিশ্বের বাজারে সতর্ক মনোভাব সত্ত্বেও স্থায়ী ব্যবসায়িক গতিকে প্রতিফলিত করে।


টি–সিএস-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে. কৃথিবাসন বলেন, “আমরা দীর্ঘমেয়াদি রূপান্তরের পথে এগোচ্ছি — কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং প্রযুক্তির সংহত প্রয়োগের মাধ্যমে। আমাদের লক্ষ্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় এআই-নির্ভর প্রযুক্তি সেবা সংস্থা হয়ে ওঠা।” তিনি আরও জানান, “এই রূপান্তর কেবল প্রযুক্তিতে নয়, বরং প্রতিভা উন্নয়ন, পরিকাঠামো, পার্টনারশিপ এবং গ্রাহক–মূল্য সৃষ্টির দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ।”
কোম্পানির বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী লভ্যাংশ ৪ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে প্রদান করা হবে, এবং ১৫ অক্টোবর ২০২৫–এ রেকর্ড ডেট অনুযায়ী যাদের নাম কোম্পানির সদস্য–রেজিস্টারে বা ডিপোজিটরির রেকর্ডে থাকবে, তারাই এই লভ্যাংশের যোগ্য হবেন।”


বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বের আইটি খাতে মন্দাভাব ও গ্রাহক ব্যয় হ্রাসের মধ্যেও টি–সিএস তার লাভজনকতা ও চুক্তি সংগ্রহের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পেরেছে। এটি সংস্থার আর্থিক স্থিতিশীলতা ও দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।