আজকাল ওয়েবডেস্ক: কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার গুরুত্বপূর্ণ এক সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিল। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ ৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। সংশোধিত হার কার্যকর হবে চলতি বছরের ১ জুলাই, ২০২৫ থেকে।


প্রায় এক কোটি মানুষের উপকার
এই সিদ্ধান্তে প্রায় এক কোটি কেন্দ্রীয় কর্মচারী ও অবসরপ্রাপ্ত পেনশনভোগী সরাসরি উপকৃত হবেন। ডিএ হল এক ধরনের জীবনযাত্রার ব্যয়ের সামঞ্জস্য ভাতা, যা সরকার কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের দেয় মুদ্রাস্ফীতির চাপে তাদের আর্থিক বোঝা কমাতে। কেন্দ্রের এই পদক্ষেপে যেমন বর্তমান কর্মচারীদের হাতে অতিরিক্ত অর্থ আসবে, তেমনি অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ পেনশনভোগীরাও আর্থিক স্বস্তি পাবেন।


মুদ্রাস্ফীতি সামলাতে ডিএ
মহার্ঘ ভাতার হিসাব করা হয় মূলত ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI)-এর ভিত্তিতে। শিল্প শ্রমিকদের জন্য তৈরি এই সূচক প্রতি ছয় মাস অন্তর সরকারের হাতে তথ্য তুলে ধরে, যা অনুযায়ী ডিএ সমন্বয় হয়। সাধারণত প্রতিবছর জানুয়ারি ও জুলাই মাসে ডিএ পুনর্বিবেচনা করা হয়। এর ফলে সরকারি কর্মচারীরা বাড়তি বাজারদরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ন্যূনতম কিছুটা আর্থিক সহায়তা পান।

আরও পড়ুন: শনির বড় প্রভাব পড়তে পারে পৃথিবীতে, কী বলছে নাসা


এবছরের আগের বৃদ্ধি
এর আগে চলতি বছরের মার্চ মাসে সরকার ডিএ ২ শতাংশ বাড়িয়েছিল। তখন ডিএর হার মূল বেতন ও পেনশনের ৫৩% থেকে বাড়িয়ে ৫৫% করা হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আরও ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেলে, কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের হাতে টেক-হোম আয় আরও বাড়বে। সরকারি হিসেবে দেখা যায়, যদি কোনও কর্মচারীর মূল বেতন হয় ৫০,০০০ টাকা, তবে মার্চ মাসের শেষ বৃদ্ধির পর তিনি ডিএ হিসেবে পাচ্ছিলেন ২৬,৫০০ টাকা। এখন নতুন বৃদ্ধির ফলে এই পরিমাণ আরও বাড়বে। ফলে জীবিকা নির্বাহের খরচ কিছুটা হলেও সহজ হবে।


উৎসবের মরসুমে বাড়তি স্বস্তি
এই বাড়তি অর্থ কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের হাতে পৌঁছবে উৎসবের মরসুমের আগেই। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এর ফলে কেবল কর্মচারী ও পেনশনভোগীরাই নয়, ভোক্তা ব্যয়ও বৃদ্ধি পাবে, যা বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।


একাধিক অর্থনীতিবিদের মতে, উৎসবের আগে অর্থনীতিতে অর্থপ্রবাহ বাড়ানো সরকারের কৌশলগত পদক্ষেপও বটে। একদিকে যেমন কর্মচারীদের হাতে বাড়তি অর্থ আসবে, অন্যদিকে বাজারও চাঙ্গা হবে।


সব মিলিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্ত সাধারণ কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের জন্য বড় স্বস্তি নিয়ে এল। ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার খরচের চাপে যেখানে পরিবারের বাজেট ভারী হচ্ছে, সেখানে ৩ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি অনেকটাই প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সরকারি মহলেও আশা করা হচ্ছে, এই পদক্ষেপ কেবল আর্থিক স্বস্তি দেবে না, বরং ভোক্তা ব্যয়ের গতি বাড়িয়ে সামগ্রিক অর্থনীতিকেও সক্রিয় করে তুলবে।