আজকাল ওয়েবডেস্ক: কোনও ব্যক্তির মৃত্যুর পরেও আয়কর দেওয়ার ইতি ঘটে না। ব্যক্তি মারা যেতে পারে, কিন্তু তার দায়িত্ব থেকে যায়। যদি ব্যক্তির পূর্ববর্তী আর্থিক বছরে করযোগ্য আয় থাকে, তাহলে আয়কর নিয়ম অনুসারে তাঁদের আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। পরিবারের একজন সদস্য বা আইনি উত্তরাধিকারী মৃতের পক্ষে রিটার্ন দাখিল করতে পারেন। যদি তা না করা হয়, তাহলে আয়কর বিভাগ একটি নোটিশ পাঠাতে পারে। জরিমানাও করা যেতে পারে এবং আইনি উত্তরাধিকারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
মৃত ব্যক্তির আটিআর কে দাখিল করতে পারে?
মৃত ব্যক্তির আইনি উত্তরাধিকারী বা পরিবারের সদস্য আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারেন। যদি ব্যক্তি একটি উইল লিখে থাকেন, তাহলে উইলে নাম থাকা ব্যক্তি রিটার্ন দাখিল করতে পারেন। যদি কোনও উইল না থাকে, তাহলে আদালত এটি দাখিল করার জন্য কাউকেও বেছে নিতে পারে।
যদি কোনও উইল বা আদালতের আদেশ না থাকে, তাহলে স্ত্রী, স্বামী, ছেলে, মেয়ে বা পরিবারের কোনও ঘনিষ্ঠ সদস্য রিটার্ন দাখিল করতে পারেন। আইনি উত্তরাধিকারীকে তাদের নিজস্ব প্যান নম্বর ব্যবহার করে আয়কর ওয়েবসাইটে নথিভুক্তকরণ করতে হবে। এরপর, তাঁরা মৃত ব্যক্তির জন্য রিটার্ন দাখিল করার অনুমতি চাইতে পারেন।
রিটার্ন দাখিল করার জন্য কি প্যান প্রয়োজন?
হ্যাঁ, মৃত ব্যক্তির প্যান কার্ড প্রয়োজন।
অন্যান্য প্রয়োজনীয় নথিগুলি হল-
- ফর্ম ১৬ (যদি ব্যক্তি কর্মরত থাকেন)
- কোন অর্থ বা বিনিয়োগের বিবরণ
- টিডিএস সার্টিফিকেট
- ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট
- কর ছাড়ের প্রমাণ
- মৃত্যুর শংসাপত্র
- আপনি যে আইনি উত্তরাধিকারী তার প্রমাণ
- আপনার পরিচয়পত্রের প্রমাণ
এই সমস্ত কাগজপত্র সংগ্রহ করার পরে, আইনি উত্তরাধিকারীকে রিটার্ন দাখিল করার জন্য আয়কর ওয়েবসাইটে লগ ইন করতে হবে।
রিটার্ন দাখিলের শেষ তারিখ?
আপনি কেবল সেই সময়ের জন্য রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন যতক্ষণ ব্যক্তি জীবিত ছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, যদি ব্যক্তি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে মারা যান, তাহলে আপনাকে ওই বঠরের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত অর্জিত আয়ের রিটার্ন দাখিল করতে হবে। সাধারণত, রিটার্ন দাখিলের শেষ তারিখ ৩১ জুলাই। কিন্তু এই বছর, শেষ তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর।
সতর্ক হোন
এই বছর আইটিআর জমা করার সময় আরও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, কারণ আয়কর বিভাগের তরফে নিয়মগুলি আগের থেকে আরও জটিল হয়ে গিয়েছে। এর অধীনে যদি কোনও করদাতা তাঁর আয় গোপন করেন বা ভুলভাবে কর ছাড়ের দাবি করেন, আয়ের উৎস সম্পর্কে সঠিক তথ্য না দেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে কেন্দ্র।
জরিমানার পাশাপাশি জেলও হতে পারে
আয়কর বিভাগের একটি শক্তিশালী ব্যবস্থা রয়েছে যার মাধ্যমে এই ধরনের আয়করের অনিয়ম ধরা পড়ে। ভুলটি অজান্তে হোক বা ইচ্ছাকৃতভাবে হোক, আয়ের উপরে প্রদেয় করের ২০০ শতাংশ জরিমানা আরোপ করা যেতে পারে। এর উপরে ২৪ শতাংশ হারে সুদও দিতে হবে। যদি কোনওভাবে আয়কর বিভাগ দেখতে পায় যে আপনি নিজেই জালিয়াতির চেষ্টা করছেন, তাহলে এই পরিস্থিতিতে আপনি জেলেও যেতে পারেন। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি যে যদি আপনি কোনও চার্টার্ড অ্যাকাউন্টান্ট বা অন্য কারও মাধ্যমে আইটিআর জমা করেন এবং কোথাও ভুল হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে তাঁর জন্য আপনাকেও দায়ী হতে পারে।
আইটিআর জমা করার সময় এই ভুলগুলি আপনার বিপদ বাড়াতে পারে-
- প্রথম ভুল হল আইটিআর ফর্ম নির্বাচন করা
- কোনও প্রমাণ ছাড়াই কর ছাড়ের দাবি করা
-ভাড়া বা সুদের আকারে অতিরিক্ত আয় প্রকাশ না করা
- ভ্রমণ বা খাবারের মত ব্যক্তিগত খরচ ব্যবসায়িক খরচ হিসেবে দেখানো
ভাড়ার রসিদ ছাড়াই জাল এইচআরএ দাবি করে।
এই ধরনের ভুল থেকে অত্যন্ত সতর্ক থাকুন কারণ যদি আয়কর বিভাগ থেকে জানতে পারে যে আপনি জালিয়াতির চেষ্টা করছেন তাহলে পরে রিটার্ন সংশোধন করেও কোনও লাভ হবে না। তবুও আপনাকে জরিমানা দিতে হবে।
[আরও পড়ুন- কিউআর কোড-সহ প্যান ২.০ কীভাবে পুরনোটির থেকে আলাদা? জানুন]
