আজকাল ওয়েবডেস্ক: ৫০ টাকার কয়েন নিয়ে বড় খবর সামনে এলো। অনেকদিন ধরেই চর্চা চলছিল যে, বাজারে নতুন ৫০ টাকার কয়েন আসবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে, আপাতত ৫০ টাকার কয়েন চালু করার কোনও পরিকল্পনা নেই। এমনকী বিবেচনার অধীনেও নেই এই প্রস্তাব। কেন্দ্রীয় সরকার দিল্লি হাইকোর্টে এই তথ্য জানিয়েছে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ৫০ টাকার কয়েনের অনুরোধ করা একটি আবেদনের জবাবে কেন্দ্রীয় সরকার এই তথ্য জানিয়েছে।
বর্তমানে বাজারে ১, ২, ৫, ১০ এবং ২০ টাকার কয়েন প্রচোলিত রয়েছে। তবে, ৫০ টাকার কোনও কয়েন নেই।
মানুষ মুদ্রার চেয়ে নোট বেশি পছন্দ করে
সরকার আদালতকে জানিয়েছে যে ২০২২ সালে, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (আরবিআই) একটি সমীক্ষা করেছিল। সেই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, মানুষ মুদ্রার চেয়ে ১০ এবং ২০ টাকার নোট বেশি পছন্দ করে। আরও দেখা গিয়েছে যে, মানুষ মুদ্রাকে খুব ভারী এবং আকারে বড় বলে মনে করে। এই কারণে, সরকার এখনই ৫০ টাকার কয়েন চালু করার কোনও পরিকল্পনা করেনি।
শুধু জিজ্ঞাসা করেই মুদ্রা তৈরি হয় না
সরকার বলেছে যে নতুন মুদ্রা তৈরির আগে অনেক কিছু পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষা করে দেখা হয় যে, মানুষ ৫০ টাকার কয়েন ব্যবহার করবে কিনা এবং দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য তা সহায়ক কিনা। তবেই সেই নতুন মুদ্রা তৈরি করা হয়।
আবেদনে কী ছিল?
আইনজীবী রোহিত ডন্ড্রিয়াল এবং মিনি আগরওয়ালের দায়ের করা একটি অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে কেন্দ্রের প্রতিক্রিয়া জানা গিয়েছে ৫০ টাকার কয়েন আনার বিষয়ে। এই অভিযোগে বলা হয়েছিল যে ৫০ টাকার নোটের নকশার কারণে দৃষ্টিহীন ব্যক্তিরা যারপরনাই দুর্দশার মুখোমুখি হচ্ছেন, বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। আর তাদের জন্য মূল্যের পার্থক্য করা কঠিন হয়ে পড়েছে। সেই কারণে ৫০ টাকার কয়েন প্রবর্তন করা উচিত বলে দাবি তুলেছিলেন এই দুই আইনজীবী।
আবেদনকারীদের দাবি, এই ৫০ টাকার নোট ১০০ টাকা কিংবা ৫০০ টাকার নোটের থেকে দৃশ্যত আলাদা করা যায় না। আর বর্তমানে ৫০ টাকার কোনও মুদ্রা বিকল্প হিসেবে বাজারে পাওয়া যায় না। ৫০ টাকার নোটে এমন কোনও অলঙ্করণ বা স্পর্শগ্রাহ্য চিহ্ন নেই যার ফলে দৃষ্টিহীন ব্যক্তিরা এটিকে চিনতে পারে।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক স্বীকার করেছে যে মহাত্মা গান্ধী সিরিজের নতুন নোটগুলিতে ১০ টাকা, ২০ টাকা ও ৫০ টাকার ক্ষেত্রে উঁচু হয়ে থাকা মুদ্রণের আকারে শনাক্তকরণের কোনও চিহ্ন নেই যা ১০০ টাকা, ২০০ টাকা কিংবা ৫০০ টাকার নোটে রয়েছে।
আরবিআইয়ের MANI অ্যাপ দৃষ্টিহীনদের সাহায্য করে
সরকার বলেছে যে, আরবিআই MANI নামে একটি মোবাইল অ্যাপ তৈরি করেছে। এই অ্যাপটি অন্ধদের নোটের মূল্য জানতে সাহায্য করে। নোট স্ক্যান করার সময় অ্যাপটি পরিমাণ বলে। তাই, সরকার বলেছে যে- এখনই ৫০ টাকার মুদ্রা আনার দরকার নেই।
এ বছর বাজেটের আগে থেকেই এই নিয়ে চলছিল জল্পনা। অনেকের মুখেই শোনা যাচ্ছিল, ১০ ও ২০ টাকার কয়েন নাকি উঠে যাবে। অর্থমন্ত্রকেও এ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে, অর্থ মন্ত্রক বলেছিল, আজও দেশে ১০ এবং ২০ টাকার কয়েন ও নোট ছাপা হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত, ২,৫২,৮৮৬ লক্ষ ১০ টাকার নোট বাজারে প্রচলিত রয়েছে, যার মূল্য ২৫২৮৯ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বাজারে ৭৯,৫০২ লক্ষ ১০ টাকার কয়েন রয়েছে, যার মূল্য ৭৯৫০ কোটি টাকা।
২০ টাকা নোট ছাপানো নিষিদ্ধ করা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রক জানিয়েছে যে, 'না', এরকম কিছু হয়নি। অর্থাৎ, এটা স্পষ্ট যে আপনি বাজারে ১০ টাকা এবং ২০ টাকার নোট ও কয়েন কম পেলেও সেগুলি এখনও প্রচলিত রয়েছে। তাই এগুলি বন্ধের বিষয়ে সময়ে সময়ে যেসব খবর আসে তা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।
