আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রায় দু'দশক ধরে ভারতীয় টেলিভিশনের সবচেয়ে চর্চিত শো-গুলির মধ্যে অন্যতম বিগ বস। ২০১০ সাল থেকে সলমন খানের সঞ্চালনায় এই শোয়ের জনপ্রিয়তা এবং পরিধি কেবল বেড়েই চলেছে। মূল শোয়ের পাশাপাশি তৈরি হয়েছে একাধিক ওটিটি সংস্করণ এবং আঞ্চলিক ভাষার স্পিন-অফ। বর্তমানে শোয়ের ১৯তম সিজন চলছে। এই প্রেক্ষাপটে শো এবং সঞ্চালক সলমন খানকে নিয়ে বড় বার্তা দিলেন প্রযোজক সংস্থার সিইও ঋষি নেগি। বিগ বসের নেপথ্যের জগৎ কী ভাবে কাজ করে, তার এক ঝলক তুলে ধরলেন তিনি।
বিগ বসের নতুন সিজনে একাধিক নতুন থিম এবং প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে ঘরের ভিতরের জাঁকজমক এবং নাটকের ঊর্ধ্বে নির্মাতাদের কাছে সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার পেয়েছে নিরাপত্তা, বিশেষত সলমন খানের উদ্দেশে সাম্প্রতিক হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে এই বিষয়টি নিয়েই সবচেয়ে চিন্তায় শো-এর নির্মাতারা।
ঋষি জানান, গত আড়াই বছরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট কঠোর করা হয়েছে। তাঁর কথায়, “সলমন খানের উপর হুমকির কারণেই আমরা নিরাপত্তা বাড়িয়েছি। এখন সলমন খান যখন সেটে থাকেন, তখন আমরা লাইভ অডিয়েন্স রাখি না। শো-তে যাঁরা আসেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও অত্যন্ত কড়া নিয়ম মানা হয়। আমরা যাঁদেরই নিয়োগ করি- স্থায়ী, অস্থায়ী বা ভেন্ডর- তাঁদের প্রত্যেকের সম্পর্কে আমরা কঠোর ভাবে খোঁজখবর নিই (ব্যাকগ্রাউন্ড চেক)।”
প্রযোজনার পরিধিও বিশাল। ঋষির মতে, প্রায় ৬০০ জন কর্মী তিনটি শিফটে ২৪ ঘণ্টা কাজ করেন। তিনি বলেন, “আমাদের কর্মী সংখ্যা প্রায় ৬০০। তিনটি শিফটে সাত দিন ২৪ ঘণ্টা কাজ চলে। কর্মীদের মধ্যে মহিলাদের প্রতিনিধিত্বও যথেষ্ট। কনটেন্টের নিরাপত্তা এবং লজিস্টিকসের ক্ষেত্রে আমরা কোনও রকম আপস করি না। দুটোই আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।”
আরও পড়ুন: মধুচক্র চালানোয় অভিযুক্ত অভিনেত্রী অনুষ্কা দাস! সেক্স র্যাকেট থেকে উদ্ধার বাংলা সিরিয়ালের আরও ২ নায়িকা! তুলকালাম মহারাষ্ট্রে
২০০৬ সালে এই প্রযোজনা সংস্থা ‘বিগ বস’-কে ভারতে এনেছিল একটি ‘সামাজিক পরীক্ষা’ (সোশ্যাল এক্সপেরিমেন্ট) হিসেবে। মূল উদ্দেশ্য ছিল নজরদারির অধীনে মানুষের আচরণ পর্যবেক্ষণ করা। বছরের পর বছর ধরে এটি দেশের অন্যতম বড় রিয়েলিটি শো ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে। এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে ক্রমাগত নিজেকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর ক্ষমতা।
ঋষি আরও জানান, প্রতিযোগীদের আচরণের উপর নির্ভর করে ক্রমাগত পরিবর্তন করা হয় শো পরিচালনা করার পদ্ধতি। ঘরের ভিতরে ২০০টিরও বেশি ক্যামেরা প্রতিটি পদক্ষেপ রেকর্ড করে, এবং সেই অনুযায়ী গল্প তৈরি করতে এডিটর ও প্রযোজক দলকে রিয়েল-টাইমে কাজ করতে হয়।
তিনি বলেন, “আপনি এই শো কখনও স্ক্রিপ্ট-এর মাধ্যমে পরিচালনা করতে পারবেন না, কারণ প্রতিযোগীরা কেমন প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন তার উপর কনটেন্টের প্রবাহ নির্ভর করে এবং তাঁদের প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতেই গল্প এগোয়। কখনও আমরা কিছু পরিকল্পনা করি, কিন্তু হঠাৎই ঘরের মধ্যে বড় কিছু ঘটে গেলে আমাদের সেই পরিকল্পনা বাতিল করে দিতে হয়। নতুন পরিস্থিতিকে ঘিরে নতুন পরিকল্পনা তৈরি করতে হয়।"
আরও পড়ুন: মধুচক্র চালানোয় অভিযুক্ত অভিনেত্রী অনুষ্কা দাস! সেক্স র্যাকেট থেকে উদ্ধার বাংলা সিরিয়ালের আরও ২ নায়িকা! তুলকালাম মহারাষ্ট্রে
শো-এর সঞ্চালনার যাত্রাপথটিও বেশ আকর্ষণীয়। প্রথম সিজনে আরশাদ ওয়ারসি থেকে শুরু করে পরবর্তী সংস্করণগুলিতে শিল্পা শেট্টি এবং অমিতাভ বচ্চন। বহু তারকা সঞ্চালকের দায়িত্ব সামলেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সলমন খানই হয়ে উঠেছেন ‘বিগ বস’-এর মুখ। বলিউডের ‘সুলতান’-ই এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই শো সঞ্চালনা করছেন। ঋষি জানান, কেবল সঞ্চালনা নয়, সলমন শো পরিচালনার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা নেন। তিনি প্রায়শই মিটিংয়ে বসেন। কাস্টিং নিয়ে পরামর্শও দেন। যদিও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সব সময় প্রযোজকরাই নেন বলে দাবি ঋষির।
