বলিউডে তিনি ছিলেন এক ভিন্ন নাম— ববি ডার্লিং। ২০০০-এর দশকে ‘স্টাইল’, ‘চলতে চলতে’, ‘পেজ ৩’ আর ‘ক্যায়া কুল হ্যায় হম’–এর মতো ছবিতে নিজের আলাদা উপস্থিতি তৈরি করেছিলেন। ‘দিল নে জিসে অপনা কহা’, ‘অপনা সপনা মানি মানি’, ‘ট্র্যাফিক সিগনাল’-এর মতো ছবিতেও অভিনয় করেছেন ববি। সেই সময় ভারতের দর্শক সমকামীদের নিয়ে খুব বেশি জানত না। কিন্তু ববি সেরকম সাহসী চরিত্রে অভিনয় করে, খানিক হাসির মাধ্যমেও দর্শকের সামনে আনতে পেরেছিলেন বিষয়টাকে। তবে বহু বছর তাঁকে আর পর্দায় দেখা যায় না।
কিন্তু এবার তিনি খুলে দিলেন টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির অন্দরমহলের কেচ্ছা। এক সাক্ষাৎকারে ববি ডার্লিং অভিযোগ তুললেন—“কপিল শর্মার শো-তে আমাকে নিয়ে গড়ে ওঠা কৌতুক, গালাগাল—সব আমি মেনে নিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম এভাবেই মানুষ হাসছে, আমিও খুশি। কিন্তু যখন আমি কাজ চাইতে গেলাম, কপিল একবারও আমার মেসেজের জবাব দিল না।”
তিনি আরও বলেন—“একসময় তো সবাই আমাকে নোংরা চোখে দেখত, কারণ তখন দেশের মানুষ সমকামীদের নিয়ে তেমন কিছু জানত না। আর আজ সেই একই অভিনেতারাই কপিলের শো-তে আমার মতো চরিত্র সেজে সংসার চালাচ্ছে। যারা একসময় আমার মজা করত, তারা আজ আমার চরিত্রে খেয়ে-পরে বেঁচে আছে।”
ববির বিস্ফোরক দাবি— “আমি কপিলকে বলেছিলাম, আমি টাকার জন্য হাত পাতছি না, আমি কাজ চাইছি, কাজের ভিক্ষা করছি। কিন্তু সে আমার মেসেজের কোনও উত্তর দেয়নি। আমি তোর কাছে সাহায্যের জন্য গিয়েছিলাম, তুই আমাকে পাত্তাটুকু দিসনি, আর আজ ওর ক্যাফে-তে যা যা অ্যাটাক হচ্ছে, ওগুলোই ভাগ্যেরই দেওয়া উত্তর! মনে রাখ, তোর সঙ্গেও একই হবে।” ববি জানিয়েছেন, এর আগে প্রযোজক একতা কাপুরকেও মেসেজ করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, “আমি আপনার পায়ে পড়ি, আমি খুব কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। দয়া করে আমাকে কাজ দিন। আমি অবসাদে ভুগছি। আমি বিষণ্ণ হয়ে পড়ছি। আমি আত্মহত্যা করব। হয়তো সুশান্তের মতোই পথ বেছে নিতে হবে আমাকে।” তবু একটা নাকি তাঁর মেসেজের কোনও পাল্টা জবাব দেননি, দাবি ববির।
কানাডায় কপিল শর্মার ক্যাফেতে এক মাসেরও কম সময় দু’বার হামলা। ভারতীয় সময় অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সেখানে ২৫ রাউন্ড গুলি চলে। কোনও প্রাণহানি হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। তবে পরপর হামলায় ভারতের অন্যতম কৌতুকলিল্পীর আতঙ্ক আরও বেড়ে গেল।
অভিযোগ অনুযায়ী, এবার হামলা চালিয়েছে লরেন্স বিষ্ণোইয়ের দলের লোকজন। কপিল তাঁর শো 'দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শো'-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলিউড তারকা সলমন খানকে আমন্ত্রণ জানান। সেই কারণেই নাকি লরেন্সের দলের রোষদৃষ্টিতে পড়েন তিনি। সম্প্রতি একটি অডিও রেকর্ডিংয়ে এই হামলা সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
সেটিতে যে ব্যক্তির গলা শোনা গিয়েছে, সে বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্য হ্যারি বক্সার বলে দাবি। জানানো হয়, কপিল শর্মার ক্যাফেতে দু’বার গুলি চালানো হয়েছে কারণ তিনি নেটফ্লিক্সের একটি শোয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সলমনকে ডেকেছিলেন। বলিউড অভিনেতা 'দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শো'-এর তৃতীয় সিজনের প্রথম পর্বে উপস্থিত ছিলেন, যা শুরু হয়েছিল ২১ জুন।
সলমন-ঘনিষ্ঠদের সতর্ক করে হ্যারি। তার কথায়, "কেউ যদি সলমনের সঙ্গে কাজ করে, সে ছোট অভিনেতা হোক বা পরিচালক, আমরা কাউকেই রেহাই দেব না। আমরা তাদের হত্যা করব। তাদের হত্যা করার জন্য আমরা যে কোনও সীমা অতিক্রম করতে পারি।“
পাঞ্জাব পুলিশ এবং এনআইএ-র ওয়ান্টেড বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্য গোল্ডি ঢিল্লোঁ সোশ্যাল মিডিয়ায় এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। জানা গিয়েছে, বর্তমানে সে জার্মানিতে। পাঞ্জাবে তার বিরুদ্ধে তোলাবাজি এবং খুনের একাধিক মামলা রয়েছে।
