এক বলিউড অভিনেত্রী রুপোলি পর্দায় একবার বাবা এবং পরে তাঁর ছেলের সঙ্গে রোম্যান্স করে আলোচনায় এসেছিলেন। একদিকে, তাঁর এক সহ-অভিনেতার সঙ্গে করা চুম্বনের দৃশ্য আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল। অন্যদিকে, পরের প্রজন্মের নায়কের সঙ্গে তাঁর পর্দার রসায়ন দর্শকদের মন জয় করেছিল। তিনি সেই সাহসী এবং প্রতিভাবান অভিনেত্রী, যিনি নিজের গ্ল্যামার ও নির্ভীক অভিনয়ের মাধ্যমে বলিউডে আলাদা পরিচয় গড়ে তুলেছিলেন। কখনও সাহসী চরিত্রের জন্য প্রশংসা, আবার কখনও বিতর্কের জন্য সমালোচনা— তিনি মাধুরী দীক্ষিত।

ভারতীয় সিনেমায় অনেক অভিনেত্রীই শীর্ষস্থানীয় নায়কদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। তাঁদের জনপ্রিয়তার সঙ্গে পারিশ্রমিকও বেড়েছে। কিন্তু মাধুরী এমন এক অভিনেত্রী যিনি বাবা এবং ছেলে—দু’জন সুপারস্টারের সঙ্গেই রোম্যান্টিক ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।

মাধুরী দীক্ষিত মাত্র ১৭ বছর বয়সে চলচ্চিত্রজগতে প্রবেশ করেন। তাঁর প্রথম ছবি ছিল ‘অবোধ’, যেখানে তাঁর সহজ-সরল চরিত্র নজর কাড়ে। এরপর ‘তেজাব’ (১৯৮৮), ‘দিল’ (১৯৯০), ‘বেটা’ (১৯৯২), ‘হম আপকে হ্যায় কউন’ (১৯৯৪), এবং দিল তো পাগল হ্যায় (১৯৯৭)-এর মতো একের পর এক হিট ছবিতে অভিনয় করে তিনি বলিউডের শীর্ষনায়িকা হয়ে ওঠেন।

অন্য দিকে, ১৯৬৮ সালে অভিনয়জগতে পা রাখা বিনোদ খন্না প্রথমে ভিলেন হিসাবে আত্মপ্রকাশ করলেও পরে নায়ক হিসেবেও সমান সাফল্য পান। সুনীল দত্ত, অমিতাভ বচ্চন  এবংঋষি কাপুরের  মতো নায়কদের সময়েও তিনি নিজের জায়গা তৈরি করতে পেরেছিলেন।

১৯৮৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দয়াবান’  ছবিতে বিনোদ এবং মাধুরী দীক্ষিত একসঙ্গে অভিনয় করেন। সে সময় মাধুরীর বয়স মাত্র ২০, আর বিনোদ তখন বলিউডের প্রতিষ্ঠিত তারকা। ছবির জনপ্রিয় গান ‘আজ ফির তুম পে প্যায়ার আয়া হ্যায় ’-তে তাঁদের ঘনিষ্ঠ দৃশ্য ছিল। যার মধ্যে একটি চুম্বন দৃশ্য ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয়। জানা যায়, এই দৃশ্যের পর মাধুরী কেঁদে ফেলেছিলেন এবং ভবিষ্যতে এমন দৃশ্য না করার সিদ্ধান্ত নেন।

বিতর্ক এখানেই শেষ হয়নি। খবর ছিল, দৃশ্যের সময় পরিচালক ‘কাট’ বলার পরও বিনোদ মাধুরীকে চুম্বন করতে থাকেন, এমনকি মাধুরীর ঠোঁট কেটে যায়। ঘটনাটি আদালত পর্যন্ত গড়ায় এবং ছবিটি বিতর্কিত হয়। পরে বিনোদকে মাধুরীর কাছে ক্ষমা চাইতে হয়।

এর প্রায় এক দশক পরে ১৯৯৭ সালে, মাধুরী আবার অভিনয় করেন বিনোদের ছেলে অক্ষয় খন্নার বিপরীতে ‘মহব্বত’ ছবিতে। ছবিটি বক্স অফিসে গড়পড়তা ব্যবসা করলেও তাঁদের জুটির রসায়ন প্রশংসিত হয়। একই বছরে মুক্তি পাওয়া ‘দিল তো পাগল হ্যায় ’ বিশাল হিট হয়, যা আবারও মাধুরীর অপরাজেয় তারকাসত্তাকে প্রমাণ করে।

মাধুরীর এই যাত্রা প্রমাণ করে, তিনি এমন এক অভিনেত্রী, যিনি বিতর্ক, সমালোচনা এবং সময়ের বাধা পেরিয়ে আজও নিজের আলোকিত অবস্থান ধরে রেখেছেন।