বলিউডে বরাবরই নিজেকে ‘আউটসাইডার’ বলে দাবি করেছেন কঙ্গনা রানাওয়াত। বহু বছর ধরে লড়াই করে জায়গা করে নেওয়ার অভিজ্ঞতা একাধিকবার ভাগ করে নিয়েছেন তিনি। এবার ঋতুস্রাবের সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিয়ে এক বিস্তর সমস্যার কথা প্রকাশ্যে আনলেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানান, অভিনয় জীবনে শুটিং সেটে যত বিলাসবহুল সুযোগ-সুবিধা মেলে, সাংসদ জীবনে তার কিছুই নেই।

 

 

কঙ্গনার কথায়, “শুটিং সেটে আমার জন্য সবসময় ভ্যান থাকে, যেখানে পেটে ব্যাথা হলে বিশ্রাম নেওয়া যায়। গরম মিনারেল ওয়াটার মেলে, স্নানের সুবিধাও থাকে। কিন্তু এখন আমরা রাজনৈতিক সফরে দিনে প্রায় ১২ ঘণ্টা ভ্রমণ করি, আর অনেক সময় এমন জায়গায় থাকতে হয় যেখানে মহিলাদের জন্য কোনও শৌচালয় নেই। শুধু আমার নয়, অনেক সাংসদের জন্যই এটি বড় সমস্যা। এটা একেবারেই ভয়াবহ পরিস্থিতি, এভাবে চলা সম্ভব নয়।”

 

আরও পড়ুন: 'মাত্র ১৯ বছর বয়স ছিল, তাই ভুল হয়ে গিয়েছে..,' বিপাশার শরীর নিয়ে কটাক্ষ করে ক্ষমা চাইলেন ম্রুণাল


তিনি আরও জানান, দীর্ঘ ভ্রমণের সময় এই অসুবিধা মোকাবিলা করা অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়, বিশেষ করে ঋতুস্রাব চলাকালীন। কঙ্গনার মতে, এই সমস্যার দ্রুত সমাধান না হলে নারী সাংসদদের জন্য কাজের পরিবেশ আরও কঠিন হয়ে উঠবে।

 

ওই সাক্ষাৎকারে তিনি ঋতুস্রাব নিয়ে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্যও তুলে ধরেন। পশ্চিমা সংস্কৃতিতে একে প্রাকৃতিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া হিসেবে দেখা হয়, কিন্তু ভারতের বহু স্থানে এখনও এটি রহস্যময় ও আধ্যাত্মিক কিছু বলে মনে করা হয়। কঙ্গনার বক্তব্য, “গ্রামাঞ্চলে এখনও ঋতুস্রাব নিয়ে অনেক কুসংস্কার আছে, যা নারীদের প্রতি আচরণে প্রভাব ফেলে। অন্যদিকে পাশ্চাত্যে এ নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়।”

 

আরও পড়ুন: ‘বেরোও, বেরোও বলছি! এটা তোমাদের বাড়ি নয়’—ছবিশিকারিদের কোন কাণ্ডে সম্পূর্ণ মেজাজ হারালেন আলিয়া?

 

নারী সাংসদদের জন্য পর্যাপ্ত স্যানিটারি ও স্বাস্থ্যবিধি-সংক্রান্ত অবকাঠামোর দাবি জানিয়ে কঙ্গনা বলেন, “আমাদের মতো জনসেবামূলক কাজের ক্ষেত্রে এসব মৌলিক প্রয়োজনীয়তা অবহেলিত থাকা উচিৎ নয়।”

 

প্রসঙ্গত, কঙ্গনার ফিল্মি কেরিয়ারকে এককথায় বলা যায়, 'গ্যাংস্টার' থেকে 'কুইন'। ২০০৬-এ অনুরাগ বসু পরিচালিত ও মহেশ ভাট প্রযোজিত গ্যাংস্টার দিয়ে বলিউডে পা রাখেন কঙ্গনা। এরপর ওহ লমহে (২০০৬), লাইফ ইন এ মেট্রো (২০০৭)-এর মতো ছবিতে নজর কাড়েন। ২০০৮-এ মধুর ভান্ডারকর-এর ফ্যাশন-এ অভিনয়ের জন্য পান প্রথম জাতীয় পুরস্কার। পরে কুইন (২০১৪) ও তনু ওয়েডস মনু রিটার্নস (২০১৫)-তে অভিনয় তাঁকে বলিউডের প্রথম সারিতে তুলে আনে। মোট চারটি জাতীয় পুরস্কার জিতেছেন তিনি।

 

সর্বশেষ তাঁকে দেখা গিয়েছে 'ইমার্জেন্সি' ছবিতে— যেখানে তিনি শুধু নায়িকা নন, পরিচালক, সহপ্রযোজক ও চিত্রনাট্যকারও।