নিজস্ব সংবাদদাতা: জগদ্ধাত্রী এখন হুইল চেয়ারে। এদিকে বাইরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কে? হুবহু জগদ্ধাত্রীর মতোই দেখতে! সে আর কেউ নয়, তার মেয়ে দুর্গা। অন্যদিকে, স্বয়ম্ভূরও নাজেহাল দশা। মেয়েকে চিনতে পারবে কি সে? জানতে আজকাল টেলিভিশন পৌঁছে গিয়েছিল বলাকা স্টুডিওতে, জি বাংলার ধারাবাহিক 'জগদ্বাত্রী'র শুটিং ফ্লোরে।

 

 

ভয়ের নাম 'জগদ্বাত্রী' 

 

ফ্লোরে এখন জগদ্ধাত্রীর মেকআপ চলছে। এখনও এসে পৌঁছননি স্বয়ম্ভূ। এক ধারাবাহিকে তিন ধরনের চরিত্রে দেখা যাচ্ছে পর্দার জগদ্ধাত্রী ওরফে অঙ্কিতা মল্লিককে। কীভাবে সবদিক সামলাচ্ছেন? মেকআপ করতে করতেই অঙ্কিতার জবাব, "আসলে 'জগদ্ধাত্রী', 'জ্যাস সান্যাল' ও 'দুর্গা' এই তিন চরিত্রই বড্ড কাছের। গল্পের খাতিরে এইভাবে রদবদল বেশ ভাল লাগছে।" 'জ্যাস সান্যাল'-এর মতো অঙ্কিতাকেও নাকি প্রেম নিবেদন করতে ভয় পায় সবাই? হাসতে হাসতে নায়িকার জবাব, "আর প্রেম নিবেদন! এই তো সেদিন শুটিংয়ের সময় একটা লোক হাঁ করে তাকিয়ে ছিল আমি ঘুরে তাকাতেই থতমত খেয়ে বলল, 'সরি ম্যাডাম, এক্ষুনি চলে যাচ্ছি।' বলেই নিমেষে দৌড়ে পালালো। অথচ আমি কিচ্ছু বলিনি, শুধু তাকিয়েছি। মানে, এমন ইম্প্রেশন তৈরি হয়েছে, যে লোকজন এমনই পালিয়ে যাচ্ছে। প্রেম নিবেদন তো অনেক দূরের কথা।"

 

 

ধারাবাহিক ছাড়ছেন সৌম্যদীপ?

 

 

ফ্লোর রেডি, ডাক পড়ল অঙ্কিতার। হুইলচেয়ারকেই সিংহাসন বানিয়ে পরবর্তী দৃশ্যের শুটিংয়ে চললেন নায়িকা। এদিকে এসে হাজির স্বয়ম্ভূ ওরফে সৌম্যদীপ। সমাজমাধ্যমে প্রতিদিন অঙ্কিতার সঙ্গে আপনার সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, কীভাবে মানিয়ে নেন? একটু চুপ থেকে সৌম্যদীপের জবাব, " আজ সব বলে দেব। প্রথমত, আমার সঙ্গে অঙ্কিতার কোনও রাগারাগি নেই। আমরা খুব ভাল বন্ধু। দ্বিতীয়ত, আমি ধারাবাহিক ছাড়ছি না। আমার জায়গায় কোনও নতুন হিরো আসছেন না। আর তৃতীয়ত, আমি সিঙ্গল। এই প্রশ্নগুলো আর সঙ্গে নিজেদের মন গড়া উত্তর সমাজমাধ্যমে রোজ দেখতে দেখতে ক্লান্ত আমি।" এই জবাব তো, এক ঢিলে তিন পাখি! আবারও কিন্তু নানা মন্তব্য আসবে, তৈরি? "একদম। রোজ নিজেকে তৈরি করি এইসবের জন্য। কিন্তু সবসময় সব কথা বলা হয় না। আজ বললাম।"-বললেন সৌম্যদীপ। 'স্বয়ম্ভূ'র চরিত্রটা করতে গিয়ে দর্শকের থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাচ্ছেন, তার মধ্যে কোনটা সবচেয়ে কাছের? নায়কের জবাব, "কিছুদিন আগে এক বয়স্ক দম্পতির সঙ্গে দেখা হয়, ওঁরা আমায় চিনতে পারেন। আমি নিজে গিয়ে কথা বলি। তখন ওঁরা কেঁদে ফেলেন। জানান, ওঁদের ছেলে বিদেশে থাকে কিন্তু একদম যোগাযোগ রাখে না। দেখাশোনা পর্যন্ত করে না। একবার যেন আমি ওঁদের ছেলেকে ফোন করে বলি কলকাতায় আসতে। আমিও সঙ্গে সঙ্গে ফোন করি। অনেকবার ফোন করলাম, ওঁদের নম্বর থেকেও চেষ্টা করলাম একবারও ধরেনি। খুব খারাপ লেগেছিল সেদিন। যেখানে 'স্বয়ম্ভূ' নিজের মাকে হারিয়ে এইভাবে কষ্ট পাচ্ছে, সেখানে বাস্তবে একজন ছেলে কীভাবে বাবা-মাকে মর্যাদা দিচ্ছে না।" 

 

 

কথা বলতে বলতেই চোখের কোনায় জল চিকচিক করে উঠল সৌম্যদীপের। ফ্লোর ম্যানেজারের ডাকে নিজেকে সামলে নিয়ে 'ব্যাক টু ক্যামেরা'।