প্রবাদপ্রতিম গীতিকার ও চিত্রনাট্যকার জাভেদ আখতার সম্প্রতি হাজির হয়েছিলেন কলকাতায়।  কবিতা, গান নিয়ে নানান কথা-আলোচনা শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই এ শহরে এসেছিলেন তিনি। অনুষ্ঠানের মঞ্চ জাভেদ আখতারের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিলেন শ্রীজাত। দক্ষিণ কলকাতায় আয়োজিত এক জনপ্রিয় প্রেক্ষাগৃহে তাঁদের কথোপকথন শুনতে বৃষ্টি মাথায় করে হল ভরিয়েছিল দর্শক। এবং সেই দর্শকের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সৃজিত মুখোপাধ্যায় এবং অভিনেত্রী সুস্মিতা  চট্টোপাধ্যায়।

 

এইমুহূর্তে টলিপাড়া মশগুল সৃজিত-সুস্মিতার সম্পর্ক নিয়ে। দু’জনেই অবশ্য নিজেদেরকে পরস্পরের 'ভাল বন্ধু' হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। আর ঠিক এই বিষয়টি নিয়েই প্রকাশ্যেই সৃজিতকে খোঁচা দিলেন শ্রীজাত! খুলেই বলা যাক বিষয়টা। সেই অনুষ্ঠান শেষে জাভেদ আখতারের সঙ্গে তাঁর একটি ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন সৃজিত। সেখানে দেখা যায় তাঁর পাশাপাশি একদিকে রয়েছেন সুস্মিতা এবং অন্যদিকে রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং অবশ্যি শ্রীজাত ও দূর্বা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

 

তবে আসল মজা শুরু হয় ছবি বার্তা বাক্সে। যেখানে শ্রীজাত আচমকা তাঁর বন্ধু সৃজিতের উদ্দেশ্যে লেখেন – “দু’জন ভাল গীতিকারের সঙ্গে তোমার একটা ছবি থেকে গেল।” এখানে দুজন গীতিকার বলতে যে জাভেদের পাশাপাশি তাঁর নিজের দিকে ইঙ্গিত করছেন শ্রীজাত, তা স্পষ্ট। তবে সৃজিত তো দমে যাওয়ার পাত্র নন। পাল্টা জবাবে লেখেন, “তোমার দু’জন ভাল চিত্রনাট্যকারের সঙ্গে একটা ছবি থেকে গেল।” এখানে ইঙ্গিত স্পষ্ট—নিজে পরিচালক হয়েও নিজের ছবির চিত্রনাট্য লেখেন সৃজিত, আর জাভেদ আখতার তো ভারতীয় সিনেমার চিত্রনাট্যকার জগতে এক আইকন। এরপরেই মোক্ষম খোঁচাটা দেন শ্রীজাত- “কী আশ্চর্য, জাভেদ সাহেবেরও দু’জন ভাল বন্ধুর সঙ্গে একটা ছবি থেকে গেল।” ব্যাস! সৃজিত সেখানেই চুপ করে গিয়েছেন। চিরকাল স্পষ্টভাষী সৃজিত এ বার কিন্তু আর কোনও জবাব দেননি। নীরবতাই যেন অনেক কথা বলে গেল! ‘ভাল বন্ধু’ বলতে যে শ্রীজাত কোন দু'জন মানুষকে বুঝিয়েছেন তা বলার জন্য কোনও পুরস্কার নেই। শ্রীজাত তো ইঙ্গিত দিয়ে দিয়েছেন…এবার অপেক্ষা, এই ‘বন্ধুত্বের গল্প’ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়! 

 


উল্লেখ্য, বছর চারেক আগে জাভেদ আখতারের উর্দুতে লেখা কবিতার বাংলা অনুবাদ প্রকাশ হয়েছিল। জাভেদ আখতারের কবিতাগুলি অনুবাদ করেছিলেন শ্রীজাত। বইটির নাম ‘ইন আদার ওয়ার্ডস’। সেই বইপ্রকাশ উপলক্ষে কলকাতায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠান মঞ্চ একসঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিলেন এই দু'জন। 

 

 

অন্যদিকে, সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ছবি নিয়ে যেমন আলোচনা হয়, ঠিক তেমনই চর্চায় থাকে পরিচালকের ব্যক্তিগত জীবনও। নায়িকাদের সঙ্গে প্রেম কিংবা সম্পর্কের গুঞ্জন, সৃজিতের জন্য নতুন নয়। সম্প্রতি অভিনেত্রী সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের প্রেম নিয়ে নতুন শোরগোল টলিপাড়ায়। 

 

'লহ গৌরাঙ্গের নাম রে' ছবির শুটিংয়ের জন্য  একসঙ্গে পুরীতে অনেকটা সময় কাটিয়েছেন সৃজিত ও সুস্মিতা। সেখান থেকেই পরিচালকের সঙ্গে একটি ছবি সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করেন সুস্মিতা। ছবিতে সমুদ্রের ধারে বেশ মিষ্টি মুহূর্তে দেখা যায় দু'জনকে। ছবির মতো ক্যাপশনও ছিল বেশ রঙিন। সুস্মিতা লিখেছেন, ‘স্যার আঁখো পর’। স্যার বলতে এখানে সৃজিতকেই বুঝিয়েছেন অভিনেত্রী। এই ছবি এবং ক্যাপশন দেওয়ার পর থেকেই টলিপাড়ায় কানাঘুষো শুরু হয়েছে, পরিচালক ও নায়িকা নাকি চুটিয়ে প্রেম করছেন! এমনকী এও শোনা যাচ্ছে, দু’জনে পুরীতে একান্ত সময়ও কাটিয়েছেন। এরপর অনিরুদ্ধ রায় পরিচালিত 'ডিয়ার মা' ছবির প্রিমিয়ার। সেখানেই সুস্মিতার সঙ্গে হাত ধরে ঢুকতে দেখা গেল সৃজিত মুখোপাধ্যায়কে। গোটা প্রিমিয়ারে তাঁরা একসঙ্গেই ছিলেন। এমনকী সুস্মিতাকে যেন চোখের আড়াল করতেই চাইছিলেন না সৃজিত। 


এরপরই তাঁদের ভাইরাল ছবি নিয়ে দু'জনকে প্রশ্ন করা হয়, তাঁরা কি সত্যিই প্রেম করছেন? প্রশ্ন শুনে হাসিমুখে সুস্মিতার দিকে তাকিয়ে সৃজিত বলেন, “সুস্মিতা কী বলবে তুমি?” সুস্মিতাও বেশ হাসির ছলে উত্তর দেন। বলেন, “আমি আর কী বলব, আমরা দু’জনে খুব ভাল বন্ধু, কয়েকদিনের মধ্যে খুব কাছের বন্ধু হয়ে গিয়েছি। এরপর যারা যা কিছু বলছেন বা লিখছেন তা নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না"” বিষয়টিকে যেন বেশ এড়িয়েও গেলেন সৃজিত-সুস্মিতা। তবে এই ক’দিনেই তাঁরা যে একে অপরের ‘ঘনিষ্ঠ’ হয়েছেন উঠেছেন, তা অবশ্য স্বীকার করেছেন। এদিন দু’জনকে প্রথমবার এত কাছাকাছি দেখা গেল। সুস্মিতার হাত ছেড়ে পরিচালককে সেদিন খুব একটা অন্য কোথাও যেতে দেখা যায়নি।