এতদিন কোনও মানুষের অঙ্গ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে 'ব্লাড গ্রুপ'-এর মিল হওয়া জরুরি ছিল। কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে এই প্রথম এক যুগান্তকারী নজির গড়লেন কানাডার ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিটিশ কলম্বিয়ার বিজ্ঞানীরা। তাঁরা একটি দান করা মানুষের কিডনির রক্তের গ্রুপ সফলভাবে পরিবর্তন করেছেন। গবেষণায় 'এ' গ্রুপের একটি কিডনিকে তাঁরা 'ও' গ্রুপে রূপান্তরিত করেছেন।
2
5
রক্তের গ্রুপ ঠিক হয় কোষের উপরে থাকা বিশেষ এক ধরনের শর্করা কণা বা অ্যান্টিজেনের মাধ্যমে। গবেষকরা ল্যাবে তৈরি বিশেষ 'এনজাইম' ব্যবহার করে সেই অ্যান্টিজেনগুলিকেই কিডনি থেকে ছেঁটে ফেলেছেন। এর ফলে এমন একটি অঙ্গ তৈরি হয়েছে, যা প্রায় যে কোনও মানুষের শরীর গ্রহণ করতে পারবে। এতে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পর তাতে ঝুঁকিও বহুলাংশে কমে যাবে।
3
5
'নেচার বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং' নামক জার্নালে এই যুগান্তকারী গবেষণার কথা বিস্তারিত জানানো হয়েছে। এই প্রথম কোনও মানুষের অঙ্গের রক্তের গ্রুপ বদল করে সেটিকে একটি 'হিউম্যান মডেল'-এ (মানুষের শরীরে) সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হলো। শুধু তাই নয় তাতে সাফল্যও মিলল।
4
5
এই পরিবর্তিত কিডনিটি একজন 'ব্রেন-ডেড' (মস্তিষ্কের মৃত্যু হয়েছে এমন) রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। দেখা যায়, দু'দিন পর্যন্ত কিডনিটি কোনওরকম শারীরিক লক্ষণ ছাড়াই কাজ করেছে। তৃতীয় দিনে সামান্য কিছু প্রতিক্রিয়া দেখা গেলেও তুলনামূলক তা অনেক বেশি স্থিতিশীল ছিল।
5
5
কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য অপেক্ষায় থাকা রোগীদের অর্ধেকেরও বেশি হলেন 'ও' গ্রুপের। তাই এই 'সার্বজনীন' অঙ্গের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমতি মিললে তাঁরা এই পদ্ধতিটিকে আরও উন্নত করার চেষ্টা করবেন। শুধু কিডনি নয়, এই একই পদ্ধতি অন্যান্য অঙ্গ এবং সার্বজনীন রক্তের জোগান তৈরির ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যাবে। এহেন 'প্রতিস্থাপন চিকিৎসা' বিজ্ঞানে এটি এক বৈপ্লবিক পদক্ষেপ হতে চলেছে।