আজকাল ওয়েবডেস্ক: ডিজিটাল যুগ আর অনলাইন ক্লাসের দৌলতে শিশুর শৈশব এখন স্মার্টফোন আর ল্যাপটপের স্ক্রিনেই সীমাবদ্ধ। একদিকে পড়াশোনার চাপ, অন্যদিকে বিনোদনের হাতছানি- দুইয়ের সাঁড়াশিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে একজোড়া কচি চোখ। অনেক অভিভাবকই সন্তানের পড়াশোনায় অমনোযোগ বা খামখেয়ালিপনা নিয়ে চিন্তিত, কিন্তু এর আড়ালে যে দৃষ্টিশক্তির সমস্যা লুকিয়ে থাকতে পারে, সেই বিষয়টি অনেক সময়ই চোখ এড়িয়ে যায়। শিশুরা নিজের অসুবিধা সব সময় ভাষায় প্রকাশ করতে পারে না। তাই তাদের কিছু আচরণ এবং শারীরিক উপসর্গের দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখাই হতে পারে সমাধানের প্রথম ধাপ।
কিন্তু কীভাবে বুঝবেন আপনার সন্তানের চোখে চশমার প্রয়োজন? বিশেষজ্ঞরা কিছু সুস্পষ্ট লক্ষণের কথা বলছেন, যা কোনও ভাবেই উপেক্ষা করা উচিত নয়।
আচরণগত লক্ষণ
কাছে গিয়ে দেখার প্রবণতা: এটি সবচেয়ে সাধারণ এবং স্পষ্ট লক্ষণ। আপনার সন্তান কি টিভি দেখার সময় পর্দার খুব কাছে চলে যাচ্ছে? অথবা বই পড়ার সময় বইয়ের উপর একেবারে ঝুঁকে পড়ছে? ক্লাসরুমে কি সে বারবার প্রথম বেঞ্চে বসার জন্য বায়না করে? এইগুলি ইঙ্গিত দেয় যে দূরের জিনিস দেখতে তার অসুবিধা হচ্ছে।
চোখ পিটপিট করা বা মাথা কাত করা: কোনও একটি নির্দিষ্ট দিকে তাকানোর সময় যদি আপনার সন্তানকে ঘন ঘন চোখ পিটপিট করতে বা মাথা একদিকে কাত করে দেখেন, তবে বুঝতে হবে খুদের ফোকাস করতে সমস্যা হচ্ছে। সেকারনেই মাথা ঘুরিয়ে দেখার চেষ্টা করছে সন্তান। এটি ‘অ্যাস্টিগমাটিজম’-এর লক্ষণ হতে পারে।
বারবার চোখ রগড়ানো: চোখে অস্বস্তি বা ঝাপসা দেখার কারণে শিশুরা বারবার চোখ রগড়াতে থাকে। তারা ভাবে এতে হয়তো দৃষ্টি পরিষ্কার হবে। কিন্তু চোখের পাওয়ার বাড়লে রগড়ালে দৃষ্টি পরিষ্কার হয় না। বরং এই অভ্যাস চোখের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে।
এক চোখ বন্ধ করে দেখা: অনেক সময় শিশুরা একটি চোখ হাত দিয়ে ঢেকে অন্য চোখ দিয়ে দেখার চেষ্টা করে। এটি ‘অ্যাম্ব্লায়োপিয়া’ বা ‘লেজি আই’-এর মতো সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। এই রোগে একটি চোখের দৃষ্টিশক্তি অন্যটির তুলনায় দুর্বল হয়। ফলে একটি চোখ ঢেকে রাখলে মনে হয় যেন দৃষ্টি কিছুটা স্বচ্ছ হল।
আরও পড়ুন: মধুচক্র চালানোয় অভিযুক্ত অভিনেত্রী অনুষ্কা দাস! সেক্স র্যাকেট থেকে উদ্ধার বাংলা সিরিয়ালের আরও ২ নায়িকা! তুলকালাম মহারাষ্ট্রে
শারীরিক ও অন্যান্য উপসর্গ
দৃষ্টিশক্তির সমস্যা শুধুমাত্র আচরণে নয়, শরীরেও কিছু উপসর্গ তৈরি করে। যেমন, স্কুল থেকে ফেরার পর বা কিছুক্ষণ পড়াশোনা করার পরেই তীব্র মাথাব্যথা হতে পারে। এছাড়াও, সামান্য আলোতে চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়া, চোখ থেকে অকারণে জল পড়া বা চোখ লাল হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে, যে শিশু পড়াশোনায় বরাবরই ভাল, সে হঠাৎই অমনোযোগী হয়ে পড়তে পারে। পড়ার সময় বারবার লাইন হারিয়ে ফেলা বা অক্ষর চিনতে ভুল করাও দৃষ্টিশক্তির সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।
আরও পড়ুন: মধুচক্র চালানোয় অভিযুক্ত অভিনেত্রী অনুষ্কা দাস! সেক্স র্যাকেট থেকে উদ্ধার বাংলা সিরিয়ালের আরও ২ নায়িকা! তুলকালাম মহারাষ্ট্রে
অভিভাবকদের কী করণীয়?
এই ধরনের এক বা একাধিক লক্ষণ চোখে পড়লে দেরি না করে অবশ্যই একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। মনে রাখবেন, শৈশবে দৃষ্টিশক্তির সমস্যা অবহেলা করলে তা ভবিষ্যতে স্থায়ী ক্ষতির কারণ হতে পারে। উপসর্গ না থাকলেও, স্কুলে যাওয়ার আগে এবং তারপর প্রতি এক থেকে দুই বছর অন্তর সন্তানের চোখ পরীক্ষা করানো বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি, সন্তানের স্ক্রিন টাইম নিয়ন্ত্রণ করুন এবং তাকে বাইরের খেলাধুলোয় উৎসাহ দিন।
