আজকাল ওয়েবডেস্ক: অনেক অপেক্ষার পর এবার ভারতের হাতে আসতে চলেছে অ্যাপাচে চপার। ১৫ মাসের অপেক্ষার পর ভারতের হাতে আসছে চলেছে এই চপার। জানা গিয়েছে ২২ জুলাই অর্থাৎ মঙ্গলবার ভারতের হাতে আসবে প্রথম তিনটি চপার। আমেরিকা থেকে এই হেলিকপ্টার ভারতে এলেই তা পাঠিয়ে দেওয়া হবে উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে। ভারতীয় সেনার এভিয়েশন কর্পসের যোধপুর ইউনিটের মাধ্যমেই কাজ করবে এই অ্যাপাচে হেলিকপ্টারগুলি।
১৫ মাস আগে অর্থাৎ ২০২৪ সালের মার্চ মাসে প্রথম অ্যাপাচে অ্যাটাক হেলিকপ্টার স্কোয়াড্রন গঠন হয় যোধপুরে। কিন্তু আমেরিকা থেকে ভারতে এসে পৌঁছয়নি হেলিকপ্টারগুলি। চিন ও পাকিস্তানকে নজরে রেখে ২০২০ সালে ছটি অ্যাপাচে এএইচ-৬৪ই হেলিকপ্টার কেনার জন্য মার্কিন সংস্থা বোয়িংয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় স্থলসেনা। প্রায় ৪ হাজার ১০০ কোটি টাকার ওই চুক্তি মোতাবেক ২০২৪ সালের মে বা জুনেই প্রথম ব্যাচের তিনটি কপ্টার পাওয়ার কথা। কিন্তু সেই তারিখ পিছিয়ে হয় ডিসেম্বর। এরপরও অনেকটা সময় পেরিয়ে গিয়েছে। সেনার উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা জানিয়েছিলেন, অ্যাপাচে হেলিকপ্টারের প্রথম ব্যাচ চলতি বছরের মে মাসে আসবে। কিন্তু সেটাও হয়নি।
আমেরিকার তরফ থেকে বলা হয়, প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণেই অ্যাপাচে অ্যাটাক হেলিকপ্টারগুলি ভারতের হাতে তুলে দিতে দেরি হচ্ছে। তবে চলতি মাসেই প্রথম ব্যাচের অ্যাপাচে কপ্টারগুলি ভারতে চলে আসবে। অপারেশন সিঁদুরের পর থেকে পাক সীমান্তের নিরাপত্তায় অনেক বেশি কড়াকড়ি করছে সেনা। তাই প্রথম ব্যাচের অ্যাপাচেগুলি পাঠানো হবে পাক সীমান্তে। ইতিমধ্যেই ভারতীয় বিমান চালক ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্যরা অ্যাপাচের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন। তাঁরা অভিযানের জন্য প্রস্তুত।

উল্লেখ্য, বিশ্বে মোট ১৭টি দেশ এই কপ্টার ব্যবহার করে। একসঙ্গে একাধিক কাজ করতে পারে কপ্টারগুলো। এই মুহূর্তে ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে রয়েছে ২২টি অ্যাপাচে অ্যাটাক হেলিকপ্টার। এর মধ্যে ১১টিতে রয়েছে শত্রু শিবিরে বিভীষিকা তৈরি করা লং বো ফায়ার কন্ট্রোল রাডার। রয়েছে হেলফায়ার (নরকের আগুন) মিসাইল। প্রতিপক্ষের ট্যাঙ্ক ধ্বংসে এর জুড়ি মেলা ভার। তাই অ্যাপাচে হেলিকপ্টারগুলোকে ‘ট্যাঙ্ক কিলার’ নাম দেওয়া হয়েছে। প্রায় অভেদ্য বর্মের জন্য ‘উড়ন্ত ট্যাঙ্ক’ হিসাবেও জানা যায় অ্যাপাচেকে।
যদি ভারতের হাতে এই চপার চলে আসে তাহলে সেখান থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনী অনেক বেশি শক্তিশালী হবে। পাকিস্তানকে কিছুদিন আগেই নাস্তানাবুদ করেছে ভারত। এরপর সীমান্তে যদি এই হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয় তাহলে সেটা পাকিস্তানের কাছে হবে বাড়তি চাপ। তারা এবার কোনদিকে যাবে সেটাই ভেবে পাবে না।
আরও পড়ুন: অপারেশন সিঁদুর নিয়ে বাদল অধিবেশনে আলোচনা হবে, জানিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী
পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলার পর ভারতের অপারেশন সিঁদুরের ঠেলা পাকিস্তান এখনও সামলে উঠতে পারছে না। সেখান থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে এই অস্ত্র চলে এলে তা হবে পাকিস্তানের কাছে বিরাট চাপের। এই চপার যেকোনও অবস্থায় শত্রুকে শেষ করে দিতে পটু। সেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনী সীমান্তে নজরদারি যে আরও কঠোর এবং শক্তিশালী হবে সেকথা বলাই যায়।
পাকিস্তান এখন চিন এবং আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে চাইছে। তবে সেদিকে যে তাদের বেশি লাভ হবে না সেটি এই দুই দেশের কাছে স্পষ্ট। তবে সন্ত্রাস রোধে ভারতের হাতে আসা এই চপার যে অনেকটা সক্রিয়ভাবে কাজ করবে সেটা বলাই বাহুল্য।
