আজকাল ওয়েবডেস্ক: অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানালেন ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে নতুন করে আধার কার্ড ইস্যু হবে না এক বছর। তিনি বলেন, রাজ্য মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে আগামী এক বছর ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সাধারণ মানুষকে নতুন আধার কার্ড দেওয়া হবে না। তবে তফসিলি জাতি, তফসিলি উপজাতি এবং চা-বাগান শ্রমিকরা এই নিয়মের বাইরে থাকবেন। অন্য সম্প্রদায়ের যেসব মানুষ এখনও আধার কার্ড পাননি তারা সেপ্টেম্বর মাসে নির্দিষ্ট সময়ে আবেদন করার সুযোগ পাবেন।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, খুবই ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে জেলা শাসক আধার কার্ড দেওয়ার অনুমতি দিতে পারবেন। তবে সেই ক্ষেত্রে স্পেশাল ব্রাঞ্চ রিপোর্ট এবং ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের রিপোর্ট যাচাই করার পরেই অনুমোদন দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: আর মানিয়ে নিতে পারছে না, মুছে যাবে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’
হিমন্ত বিশ্বশর্মা ব্যাখ্যা করেন, এই সিদ্ধান্তের মূল উদ্দেশ্য হল অবৈধ বিদেশিদের, বিশেষ করে বাংলাদেশি নাগরিকদের, অসমে আধার কার্ড সংগ্রহ করে ভুয়োভাবে ভারতীয় নাগরিকত্ব দাবি করা রোধ করা। তিনি জোর দিয়ে বলেন, অসম সরকার ধারাবাহিকভাবে সীমান্তে অনুপ্রবেশকারীদের ঠেকিয়েছে এবং এখন সম্পূর্ণভাবে এমন সব সম্ভাবনা বন্ধ করা হয়েছে যাতে কোনও বিদেশি অসমে আধার কার্ড পেতে না পারে।

তিনি আরও যোগ করেন, আমরা ক্রমাগত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের সীমান্তে ঠেকিয়েছি। আমাদের সুরক্ষা ব্যবস্থা এমনভাবে গড়ে তোলা হয়েছে যাতে কোনও অবৈধ বিদেশি অসমে প্রবেশ করে আধার কার্ড নিয়ে ভারতীয় নাগরিক দাবি করতে না পারে। আমরা সেই পথ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করেছি।
অসম সরকারের সিদ্ধান্ত, এখন থেকে, রাজ্য সরকারের সাধারণ প্রশাসন বিভাগ আধার আবেদনকারীদের যাচাইকরণের জন্য নোডাল সংস্থা হবে এবং প্রতিটি জেলায় একজন অতিরিক্ত জেলা কমিশনার নিয়োগ করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিস্বশর্মার কথায়, "প্রাথমিক আবেদনের পর, ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (ইউআইডিএআই) এটি যাচাইয়ের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে পাঠাবে। স্থানীয় সার্কেল অফিসার (সিও) প্রথমে পরীক্ষা করে দেখবেন আবেদনকারী বা তার বাবা-মা বা পরিবার এনআরসি-তে অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন করেছেন কিনা।" যদি এনআরসি-র জন্য কোনও আবেদন না থাকে, তবে আধারের জন্য অনুরোধ অবিলম্বে প্রত্যাখ্যাত হবে এবং কেন্দ্রে একটি প্রতিবেদন জমা করা হবে।

মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, "যদি দেখা যায় যে, এনআরসি-র জন্য আবেদন করা ছিল, তখন সিও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে সরজমিনে যাচাইয়ের জন্য যাবেন। সংশ্লিষ্ট আধিকারিক সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিত হওয়ার পরে, আধার অনুমোদন করা হবে।" নতুন নির্দেশ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য হবে না। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, "এইভাবে, আমরা আমাদের আধার প্রদানের ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য একটি কঠোর ব্যবস্থা প্রয়োগ করব, যাতে কোনও সন্দেহজনক ব্যক্তি পরিচয়পত্র পেতে না পারে।"
