আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভোট বিহারে। ভোটের দিনক্ষণ যেমন প্রকাশ্যে এসেছে, তেমনই শুরু হয়েছে আসন রফা-প্রার্থী নাম নিয়ে জল্পনা। হাইভোল্টেজ প্রার্থীরা আবার কে কোন আসন থেকে দাঁড়াচ্ছেন, সেখানে তাঁর জয়ের সম্ভাবনা কতটা, হিসেব চলছে তা নিয়েও। তার মাঝেই সামনে এসেছেন এই ব্যক্তি।
ছোটে লাল মাহাতো। কর্মসূত্রে, গ্যাস সিলিন্ডার পৌঁছে দেন ঘরে ঘরে। বিগত ২০ বছর ধরে ভোট লড়ছেন। মানুষের সমর্থনও পাচ্ছেন। কিষাণগঞ্জে এলপিজি সিলিন্ডার সরবরাহকারী ছোটে লাল, গত দু' দশকে প্রতিটি লোকসভা এবং বিহার বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। বারবার ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে থামছেন না। জিতে সাংসদ কিংবা বিধায়ক হবেন, কাজ করবেন সাধারণ মানুষের জন্য, এই স্বপ্ন নিয়ে তিনি ভোটে লড়াই করে চলেছেন বছরের পর বছর। এই নির্বাচনের আগে, ফের নজরে তিনি।
আরও পড়ুন: ট্রাম্প আদতে দু'মুখো! চীনের উপর আরও ১০০ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করতেই ক্ষেপে উঠল সে দেশ
কবে প্রথম ভোটে প্রার্থী হলেন?
ছোটে লাল প্রথম ভোট লড়ার কথা ভাবেন, যখন তাঁর বয়স ২৩ বছর। সালটা ২০০০। বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। তবে সেবার ভোট লড়তে পারেননি। বয়সের কারণে তা বাতিল হয়ে যায়। তবে শুরু আসলে সেখান থেকেই। তারপর থেকে বিহারের সব নির্বাচনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে চলেছেন। নানা সময়ে প্রয়াত তসলিমুদ্দিন এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সৈয়দ শাহনওয়াজ হোসেনের মতো অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদদেরও চ্যালেঞ্জ করেছেন। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, 'আমি ২০০৪ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আসছি। আমি এখনও জিতিনি, তবে কখনও হাল ছাড়িনি। এবারও আমি ইন্ডিপেনডেন্ট প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব।'
কিন্তু পুঁজি? ভোটের এই বিপুল খরচ চলবে কীভাবে?
তিনি নিজেই জানিয়েছেন সাক্ষাৎকারে, 'আমি প্রচুর জনসমর্থন পাই, এবং মানুষ আমাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সাহায্য করার জন্য অনুদান দেন। আমি মানুষের ঘরে ঘরে গ্যাস সিলিন্ডার পৌঁছে দিই। মানুষ আমার মতো নেতা চায়। এবার আমি অবশ্যই সফল হব। জনগণ তাঁদের ভোট দিয়ে জয় নিশ্চিত করবে।' শুধু সাধারণ মানুষ নয়, তাঁর এই দীর্ঘকালের লড়াইয়ে মুরগি, ডিম ইত্যাদি বিক্রি করে অর্থ সঞ্চয় করে সাহায্য করেন তাঁর স্ত্রীও। ছোটে লাল বলেন, যতদিন বেঁচে থাকবেন, মানুষের জন্য কিছু করে যেতে পারাটুকুকেই জীবনে অগ্রাধিকার দেবেন। তিনি বলেন, 'যদি আমি জিততে পারি, তাহলে আমি কেবল দরিদ্রদের চোখের জল মুছে দেওয়ার জন্যই কাজ করব না, বরং উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির জন্যও কাজ করব।'
কবে ভোট বিহারে?
নভেম্বরে দু' দফায় ভোট হবে বিহারে। ৬ এবং ১১ নভেম্বর হবে ভোট গ্রহণ। ফলাফল ঘোষণা ১৪ নভেম্বর। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুসারে, বিহারে ৭.৪৩ কোটি ভোটার রয়েছে, যার মধ্যে ৩.৯২ কোটি পুরুষ ভোটার এবং ৩.৫১ জন মহিলা ভোটার রয়েছে। রাজ্যে ১৪ লক্ষ নতুন ভোটার রয়েছেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশন নিশ্চিত করবে যে বিহার নির্বাচন সবচেয়ে স্বচ্ছভাবে অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, নির্বাচন ভোটারদের জন্য সুবিধাজনক হবে এবং রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। বিহারে মোট ৯০,৭১২টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে যেখানে একটি হেল্প ডেস্ক এবং ওয়েবকাস্টিং সুবিধা থাকবে।
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, বিহারে গত বিধানসভা ভোট, অর্থাৎ ২০২০-এর ভোটগ্রহণ তিনটি দফায় হয়েছিল। প্রথম দফা ২৮ অক্টোবর, ২০২০, দ্বিতীয় দফা ৩ নভেম্বর, ২০২০ এবং তৃতীয় দফা ৭ নভেম্বর, ২০২০ তারিখে হয়েছিল। ভোট গণনা হয়েছিল ১০ নভেম্বর।
