আজকাল ওয়েবডেস্ক: পিয়ন চিকিৎসক সেজে অবৈধভাবে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ পরীক্ষা করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছেন। ঘটনা শুক্রবারের। মোরেনা শহরের জৌরা রোডের গাদোরা পুরার কাছে গোয়ালিয়র এবং মোরেনার স্বাস্থ্য বিভাগের দল এবং সমাজকর্মী মীনা শর্মার যৌথ অভিযানে অভিযুক্ত সঞ্জু শর্মা (৩০)-কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রধান চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. পদ্মেশ উপাধ্যায় বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মোরেনা জেলা কালেক্টর লোকেশ জাঙ্গিদের নির্দেশে অভিযান চালানো হয়।
অভিযুক্তকে ফাঁদে ফেলার জন্য সাদা পোশাকে একজন পুলিশকর্মীর সঙ্গে একজন প্রতারিত মহিলাকেও পাঠানো হয়েছিল। তদন্তকারী দলটি শর্মাকে একটি পোর্টেবল আল্ট্রাসাউন্ড মেশিন-সহ খুঁজে পায় এবং তল্লাশি শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে হাতেনাতে ধরে ফেলে।
সিভিল লাইনস থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং পোর্টেবল আল্ট্রাসাউন্ড মেশিনটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আপাতত মোরেনা পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন ধৃত সঞ্জু শর্মা।
পুলিশের মতে, সঞ্জু শর্মা জেলা শিক্ষা বিভাগের পিয়ন হিসেবে কর্মরত ছিলেন । বিলগাঁও মিডল স্কুলে কর্মরত ছিলেন তিনি। অবৈধ কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০২৪ সালের নভেম্বরে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
এরপর সঞ্জু অভিযুক্ত ব্যক্তি কয়েক মাস গোয়ালিয়রের স্বাস্থ্য বিভাগের সদস্য ডা. প্রভাল প্রতাপ সিংয়ের সঙ্গে কাজ করেছেন। তিনি বলেন, "প্রায় ছয় মাস আগে, জয়পুরে একজন ব্যক্তিকে একটি পোর্টেবল আল্ট্রাসাউন্ড মেশিন বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়ে। তার কাছে সঞ্জু শর্মার একটি ছবি ছিল এবং তিনি পুলিশকে বলেছিলেন যে সঞ্জু শর্মা অবৈধভাবে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ পরীক্ষা করছিলেন। তখন থেকেই আমরা ওকে নজরে রেখেছিলাম।"
ডা. প্রভাল প্রতাপ সিং জানান যে, চলতি বছর ২রা মে একই ধরণের অপরাধের জন্য পঙ্কজ তিওয়ারি এবং একজন আশা কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তিনি বলেন, "সঞ্জু শর্মার নেতৃত্বে এই ধরণের অবৈধ পরীক্ষার সঙ্গে জড়িত এটা দ্বিতীয় দল।"
সমাজকর্মী মীনা শর্মা বলেন, অভিযুক্ত এবং তার এজেন্টরা পোর্টেবল মেশিন ব্যবহার করে ঘরে ঘরে লিঙ্গ নির্ধারণ পরীক্ষা করত, প্রতিটি পরীক্ষায় ২০০০ থেকে ৪০০০ টাকা নিতেন। তিনি বলেন, "যদি কোনও ভ্রূণ কন্যা বলে প্রমাণিত হয়, তাহলে তারা গর্ভপাতের জন্য মোটা অঙ্কের টাকা নিত। তাদের নেটওয়ার্ক উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং দিল্লি জুড়ে রয়েছে।"
উল্লেখ্য, মোরেনা এখনও মধ্যপ্রদেশের সবচেয়ে কম লিঙ্গ অনুপাতের একটি অঞ্চল। প্রশানের খবর অনুসারে, ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, জেলায় প্রতি ১,০০০ পুরুষের মধ্যে ৮৪০ জন মহিলা ছিল, যেখানে ২০০১ সালে এই সংখ্যা ছিল ৮২২। পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক। কিছু গ্রামে প্রতি ১,০০০ পুরুষের মধ্যে ৫৪১ জন মহিলার রিপোর্ট করা হয়েছে। তবে বর্তামানে প্রতি ১,০০০ পুরুষের মধ্যে ৯২২ জন মহিলা রয়েছেব বলে খবর।
