আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) পশ্চিমাঞ্চলে উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ভারত ও চীন নতুন করে কমান্ডার-স্তরের বৈঠক করল। গত ২৫ অক্টোবর (শনিবার) ভারতের মলডো-চুশুল বর্ডার মিটিং পয়েন্টে দুই দেশের সেনার মধ্যে বৈঠকটি হয়। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতি অনুযায়ী, আলোচনাগুলি ‘ইতিবাচক এবং সবিস্তার’ ছিল। উভয়পক্ষই আলোচনা এবং কূটনীতির মাধ্যমে সীমান্ত অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার বিষয়ে একমত হয়েছে। ১৯ আগস্ট নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত বিশেষ প্রতিনিধি (এসআর) পর্যায়ের ২৪তম দফার আলোচনার পর লাদাখে সামরিক-স্তরের এটিই প্রথম বৈঠক।
ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, “২৫ অক্টোবর এলএসি-এর পাশে চুশুল-মোলদো সীমান্ত বৈঠকস্থলে ভারত-চীন কর্পস কমান্ডার-স্তরের ২৩তম দফার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।”
রবিবার, চার বছরেরও বেশি সময় বিরতির পর ভারত ও চীনের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল পুনরায় শুরু করেছে। কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে স্থগিত হওয়ার আগে ২০২০ সালের প্রথম দিকে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল চালু ছিল। পূর্ব লাদাখ সীমান্ত বিরোধের কারণে পরিষেবাগুলি স্থগিত রাখা হয়েছিল।
সাম্প্রতিক কূটনৈতিক উদ্যোগের পর, বেসরকারি বিমান সংস্থা ইন্ডিগো ২৬ অক্টোবর থেকে চীনের সঙ্গে পুনরায় পরিষেবা শুরু করেছে। কলকাতা থেকে গুয়াংজু দৈনিক, বিরতিহীন পরিষেবা চালু করা হয়েছে। কলকাতায় নিযুক্ত চীনা ডেপুটি কনসাল জেনারেল, কিন ইয়ং, কলকাতা এবং গুয়াংজু শহরের রুটে ভারত ও চীনের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল পুনরায় শুরু হওয়ার বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন’ বলে অভিহিত করেছেন।
২০২০ সালের এপ্রিল থেকে এলএসি পেরিয়ে পূর্ব লাদাখের বিভিন্ন এলাকায় অনুপ্রবেশের অভিযোগ উঠেছিল চীনা ফৌজের বিরুদ্ধে। ওই বছরের ১৫ জুন গলওয়ানে চীনা হামলায় নিহত হয়েছিলেন ২০ জন ভারতীয় সেনা। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতীয় জওয়ানদের পাল্টা হামলায় বেশ কয়েক জন চীনা সেনাও নিহত হয়েছিলেন। সেই থেকেই সীমান্তে উত্তেজনার পারদ চড়চড়িয়ে বাড়তে থাকে। ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর সীমান্তে উত্তেজনা হ্রাসের ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছয় ভারত এবং চীন।
গত আগস্টে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে চীনের তিয়ানজিন সফর করেন। গলওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষের পর প্রতিবেশী দেশটিতে এটি তাঁর প্রথম সফর ছিল। শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে, প্রধানমন্ত্রী মোদী চীনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। জিনপিং সেই সময় ভারত ও চীনের সম্পর্কের প্রশংসা করে ‘ড্রাগন এবং হাতি’কে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
