আজকাল ওয়েবডেস্ক: সময়টা তিন দশকের বেশি আগে। ঘরে ঘরে টিভি পৌঁছে যায়নি তখন। তবুও আচমকা একটি সুর ছড়িয়ে পড়েছিল। বিজ্ঞাপনের সুর। ক্যাডবেরি, চকোলেট সংস্থার বিজ্ঞাপন। দৃশ্যপটে খেলার মাঠ। ব্যাকগ্রাউন্ডে 'কুছ খাস হ্যায়...'।

 

২০২৫ এও সেই সুর অমলিন। ওই বিজ্ঞাপনের লাইন মুখস্থ বহু মানুষের। কিংবা মনে পড়ছে পন্ডস-এর 'গুগলি উগলি উষ...'। ২০১০-এ তৈরি এই বিজ্ঞাপন ছড়িয়ে গিয়েছিল ব্যাপক হারে। গোটা শীত মানুষ মেতেছিলেন বিজ্ঞাপনের ছন্দে। দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে তৈরি এই দুই বিজ্ঞাপন ছাড়াও,  মাঝের সময়টুকুতেও বারে বারে তাক লাগিয়েছিলেন তিনি। ৭০ বছর বয়সে প্রয়াত এই সম বিজ্ঞাপনের সৃষ্টিকর্তা, বিজ্ঞাপন দুনিয়ার জনক পীযূষ পান্ডে। 

?ref_src=twsrc%5Etfw">October 24, 2025

 

 বিজ্ঞাপন দুনিয়ায় পা রেখেছিলেন বছর ২৭-এর যুবক। তারপর এক দুই তিন, দিনে দিনে বদলে ফেলেছিলেন গোটা বিজ্ঞাপন দুনিয়াটাকেই। অসামান্য ভাবনা, ক্যাচলাইন দিয়ে কলেজ পড়ুয়া থেকে, সারাজীবনের সঞ্চয়  দিয়ে বাড়ি বানানো মানুষটি, সকলের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন।

 পীযূষ পান্ডে। জন্ম জয়পুরে। খুব ছোট বয়স থেকেই ঝোঁক যায় বিজ্ঞাপনের দিকে। নানা সময়ে তিনি বলেছেন, তিনি এবং তাঁর ভাই প্রসূন ছোটবেলায় রেডিও জিঙ্গলে গলা মিলিয়েছিলেন। সেখান থেকেই ঝোঁক শুরু। ১৯৮২ সালে ওগিলভিতে যোগদানের আগে, তিনি একাধিক কাজ করেছেন। তালিকায় টি-টেস্টিং-ও। 

পুরনো ঝোঁক সামনে এসে দাঁড়ায় ১৯৮২ সালে।  ১৯৮২ সালে ওগিলভি অ্যান্ড ম্যাথার ইন্ডিয়া (বর্তমানে ওগিলভি ইন্ডিয়া) 'য় একজন ট্রেনি অ্যাকাউন্ট এক্সিকিউটিভ হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন এবং পরে ক্রিয়েটিভ(সৃজনশীল) বিভাগে স্থানান্তরিত হন। সেই শুরু। একের পর এক বিজ্ঞাপনের কাজে নিজের সৃজনশীলতার পরিচয় দিয়েছেন।

যে সময় তিনি কাজ শুরু করেছিলেন, তখন বিজ্ঞাপন দুনিয়া মূলত ইংরেজি নির্ভর। সেই সময়ে একের পর এক হিন্দি বিজ্ঞাপন বানাতে শুরু করেন তিনি। যেমন এশিয়ান পেন্টস-এর 'হর ঘর কুছ কেহতা হ্যায়', ক্যাডবেরি ডেয়ারি মিল্ক, 'কুছ খাস হ্যায় হাম সবহি মে'।  পীযূষ ক্যারিশমায় বহু দশক পেরিয়েও সেগুলি এখনও মুখস্থ লক্ষ লক্ষ মানুষের। তাঁর বানানো প্রচার-স্লোগানের তালিকায় 'আব কী বার, মোদি সরকার'ও। 

আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে ফের নিম্নচাপ, সপ্তাহান্তে বাংলায় আবারও বৃষ্টির পূর্বাভাস

তাঁর নেতৃত্বে, ওগিলভি ইন্ডিয়া বিশ্বের অন্যতম ভরসাযোগ্য, জনপ্রিয় সংস্থা হয়ে ওঠে। ২০১৮ সালে, তিনি এবং তাঁর ভাই প্রসূন পান্ডে প্রথম এশীয় হিসেবে লায়ন অফ সেন্ট মার্ক-কান লায়ন্সের লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট সম্মাননা লাভ করেন, বিশ্ব মঞ্চে ভারতীয় সৃজনশীলতাকে তুলে ধরার জন্য।

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন পীযূষ পান্ডের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। তাঁকে 'ভারতীয় বিজ্ঞাপনের একজন কীংবদন্তি' বলে অভিহিত করেছেন।