আজকাল ওয়েবডেস্ক: ক্লাসের সময় ছাত্রছাত্রীরা বাইরে খেলাধুলো করছে কেন? এই প্রশ্ন করতেই মেজাজ হারালেন শিক্ষিকা। সাংবাদিকের উপর চপ্পল হাতে তেড়ে গেলেন, মারধরও করলেন। মধ্যপ্রদেশের দামো জেলার হিনোতি আজম গ্রামের এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে। গোটা ঘটনাটির ভিডিও রেকর্ডিং হওয়ায় তা নেটদুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগেনি। শিক্ষিকার এমন আচরণে নিন্দার ঝড় উঠেছে।

 

ঘটনাটি রেকর্ড করেছেন স্বয়ং ওই সাংবাদিকই। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, স্কুলের শিশুরা ক্লাসে না গিয়ে চত্বরের মধ্যেই খেলাধুলো করে বেড়াচ্ছে। সাংবাদিক সেদিকে ক্যামেরা তাক করে বলেন, "এই দেখুন বাচ্চারা কেমন বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে।"

 

এর পরেই তিনি এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলা ওই শিক্ষিকার দিকে এগিয়ে গিয়ে প্রশ্ন করেন, "ম্যাডাম, আপনার ছাত্রছাত্রীরা বাইরে ঘুরছে কেন?"

প্রশ্ন শুনেই তেতে ওঠেন ওই শিক্ষিকা। ঝাঁঝালো গলায় বলেন, "আপনার সঙ্গে কি ফালতু কথা বলছি আমি?" এর পরেই পা থেকে চপ্পল খুলে শাসানি দেন, "চপ্পল দিয়ে মারব কিন্তু!" কথা শেষ না হতেই তিনি সাংবাদিককে মারতে শুরু করেন।

?ref_src=twsrc%5Etfw">October 15, 2025

সাংবাদিক পিছিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন এবং বলেন, "গায়ে হাত দেবেন না ম্যাডাম।" কিন্তু তাতেও থামেননি ওই শিক্ষিকা।

 

উপস্থিত গ্রামবাসীরা, যাঁদের মধ্যে কয়েকজন মহিলাও ছিলেন, এই দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে যান। তাঁরা শিক্ষিকাকে আটকানোর চেষ্টা করেন। বচসার মধ্যেই শিক্ষিকা চিৎকার করে বলতে থাকেন, "এই লোকটি অভদ্রতা করছে!" উত্তরে সাংবাদিক স্পষ্ট বলেন, "কী অভদ্রতা করলাম? গায়ে হাত দেবেন না, সব রেকর্ড হয়ে গিয়েছে।" তিনি আরও হুঁশিয়ারি দেন, "একটা থাপ্পড়ও যদি মারেন, আমিও কিন্তু পালটা মারব।"

 

ভিডিওটি 'এক্স' (টুইটার) মাধ্যমে শেয়ার হতেই নিমেষের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। শিক্ষিকার এহেন আচরণের তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। এক জন মন্তব্য করেছেন, "ইনি শিক্ষিকা? যদি তাই হন, তা হলে ওই গ্রামের ভবিষ্যৎ শুধু অনিশ্চিত নয়, অন্ধকারাচ্ছন্ন।" আর এক জন লিখেছেন, "উনি হয়তো সারাদিন কিছুই না করে বেতন পান।" অন্য এক ব্যক্তির কথায়, "এক জন মহিলা হয়ে শারীরিক ভাবে হেনস্থা করছেন, অথচ ইনিই দেশের ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্বে রয়েছেন। আমাদের পরের প্রজন্ম কেন আরও খারাপ হচ্ছে, তা নিয়ে আর আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।"

আরও পড়ুন: সিনেমার চিত্রনাট্যও হার মানে! প্রেমিকাকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে ৪৮ বছর পর অবশেষে জালে সত্তরোর্ধ্ব প্রেমিক!

ঘটনার পর ওই সাংবাদিক স্থানীয় মহিলা এবং গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের অভিযোগ, ওই শিক্ষিকা প্রায়শই ক্লাস নেন না এবং পড়ুয়াদের বাইরে খেলতে ছেড়ে দেন। সাংবাদিকের প্রশ্ন করাটা অনুচিত ছিল কি না, এই প্রশ্নের জবাবে গ্রামবাসীরা সাফ জানান, তিনি কোনও ভুল করেননি। এক জন সাংবাদিক হিসাবে প্রশ্ন করার অধিকার তাঁর রয়েছে। শিক্ষিকার উচিত ছিল শান্ত ভাবে উত্তর দেওয়া, হিংসার আশ্রয় নেওয়া নয়।