আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রেমের সম্পর্কে আচমকা ঝড়। মুহূর্তে ছারখার। অন্যত্র বিয়ে করতে চলেছেন প্রেমিকা। খবর পেয়েই মুষড়ে পড়েন তরুণ। এমন বিশ্বাসঘাতকতা মেনে নিতে পারেননি। মানসিকভাবে ভেঙেও পড়েন। এরপরই চরম পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত। পরিবারের ও প্রতিবেশীদের চোখের সামনে জলের ট্যাঙ্কে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হলেন তিনি। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অনুপশহরে ২২ বছরের এক তরুণ জলের ট্যাঙ্কে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। প্রেমিকার বিয়ের খবর পেয়েই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। সেই কারণেই চরম পদক্ষেপ করেন এই তরুণ। 

 

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, তরুণের নাম, সাজিদ। তিনি সিরাউরা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। বহুতলের জলের ট্যাঙ্কে উঠে আত্মহত্যার হুমকি দেন প্রথমে। সেই সময়েই গ্রামবাসীরা ও পরিবারের সদস্যরা তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন। বারবার নীচে নেমে আসার অনুরোধ করেন সকলে। শেষমেশ সেই জলের ট্যাঙ্কেই ঝাঁপিয়ে পড়েন তরুণ। 

 

কিছুক্ষণের মধ্যেই জলের ট্যাঙ্ক থেকে তরুণকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ আধিকারিক ধর্মেন্দ্র কুমার শর্মা জানিয়েছেন, সাজিদ ও তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। সম্প্রতি ওই তরুণীর অন্যত্র বিয়ের কথা ওঠে। সেখানে বিয়ে স্থির হয়। প্রেমিকার বিয়ের খবর পেয়েছিলেন সাজিদ। এর জেরেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। প্রেমিকার বিয়ের রুখতে না পারায়, তিনি সকলের চোখের সামনে চরম পদক্ষেপ করেন। ঘটনাটি ঘিরে তদন্ত জারি রয়েছে। এই ঘটনায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। 

 

আরও পড়ুন: সর্বকালের রেকর্ড ছুঁল সোনার দাম! ধনতেরাসের আগে দেশের কোন শহরে ২২ ক্যারাটের দর সবচেয়ে কম?

 

প্রসঙ্গত, গত আগস্ট মাসে প্রেমিকার বিয়ের খবর পেয়ে আরও এক যুবক আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের ভাদোহী জেলায়। রবিবার ওই জেলাতেই এক মোবাইল টাওয়ারে উঠে বিয়ের জন্য কাকুতিমিনতি শুরু করেন এক যুবক। বিয়ে না হলে, তিনি ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করবেন বলেও জানান। পাঁচ ঘণ্টা ধরে চলে এই নাটকীয় মুহূর্ত। 

 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, যুবকের নাম, পবন পান্ডে। টানা পাঁচ ঘণ্টা এমন পরিস্থিতি ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। পুলিশ, দমকল মিলে উদ্ধার করার চেষ্টা করে। অবশেষে পুলিশের বুদ্ধিতেই নীচে নামতে বাধ্য হন পবন। পুলিশ আধিকারিক অশোক কুমার মিশ্র জানিয়েছেন, পবনের একটা ছোট্ট পানের দোকান আছে। রবিবার সকাল ৯টা নাগাদ ইয়াকুবপুরের কাছে একটি মোবাইল টাওয়ারে তিনি উঠে যান। উঁচু থেকেই খুশবু নামের এক মহিলাকে ডাকাডাকি করেন। খুশবকে বিয়ে করতে চান বলেও বারবার জানান। খুশবু ওই জায়গায় না এলে তিনি আত্মহত্যা করবেন বলে হুমকি দেন। 

 

জানা গেছে, দমকল কর্মীরা ও পুলিশ বারবার বোঝানো সত্ত্বেও নীচে নামতে রাজি হননি পবন। এদিকে খুশবু নামের কোনও তরুণীর খোঁজ পাওয়া যায়নি। এরপর এক মহিলা পুলিশ কর্মীকে খুশবু সাজিয়ে যুবকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয়। খুশবুর গলার স্বর শুনে দুপুর ২টো নাগাদ মোবাইল টাওয়ার থেকে নীচে নেমে আসেন যুবক। 

 

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, পবন আসলে প্রতারণার শিকার। গত দুই বছর ধরে ইনস্টাগ্রামে এক মহিলার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আদতে সেটি ছিল একটি ভুয়ো প্রোফাইল। সেই প্রোফাইলে একটি মেয়ের ছবি ছিল। তার প্রেমেই হাবুডুবু খেতেন পবন। মেয়েটি নিজেকে খুশবু নামে পরিচয় দিয়েছিল। বিয়ের টোপ দিয়ে পবনের থেকে একাধিকবার টাকা হাতিয়েছে এই মেয়েটি। 

 

পবনের ধারণা ছিল, খুশবুও তাঁকে ভালবাসে। কিন্তু অনেকেরই এই বিয়েতে মত নেই। তাই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারছেন না তাঁরা। কিন্তু অবশেষে জানা গেলে অনলাইনে প্রতারণার শিকার হয়েছেন তিনি। এদিকে পবনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ভুয়ো প্রোফাইলের পিছনে কে বা কারা জড়িত তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘিরে তদন্ত জারি রয়েছে।