আজকাল ওয়েবডেস্ক: জামাইকে কব্জি ডুবিয়ে খাওয়াদাওয়ার নিমন্ত্রণ করেছিলেন শ্বশুর। নিমন্ত্রণ পেয়েই আনন্দে লাফাতে থাকেন তিনি। জামাই আদর পাওয়ার আশায় সেজেগুজে তড়িঘড়ি পৌঁছে গিয়েছিলেন শ্বশুরবাড়িতে। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পর শ্বশুরবাড়ি থেকে বেরোলেন ছেঁড়া ফাটা জামা পরে! যা দেখে স্তম্ভিত স্থানীয়রা। 

জানা গেছে, শ্বশুরবাড়িতে পা রাখা মাত্রই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন। শ্বশুর ও স্ত্রীর আত্মীয়রা বেধড়ক মারধর করেন তাঁকে। এমন মার, যা ঘিরে যুবকের মৃত্যুর আশঙ্কাও ছিল! শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়ের মারধর খেয়ে কোনও মতে পালিয়ে আসেন তিনি। কিন্তু অবাক কাণ্ড, যুবক কারও বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত অভিযোগ দায়ের করেননি। মারধরের ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই আঁতকে উঠেছেন নেটিজেনরা। পুলিশকে কড়া পদক্ষেপ করার জন্য আর্জিও জানিয়েছেন অনেকে। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের পিলিভিট জেলায়। আমারিয়া পুলিশ স্টেশনের অন্তর্গত বরা মাজলিয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, আহত যুবকের নাম মহম্মদ ইয়ামিন। শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন। যা দেখে স্থানীয়রাই জানিয়েছেন, তালিবান ঘরানায় অত্যাচার করা হয়েছে যুবককে। 

আরও পড়ুন: 'চারটে বউ না থাকলে, আর কিসের পুরুষ মানুষ!', মৌলানার বার্তায় হাততালি দিলেন সকলে, তাজ্জব নেটিজেনরা

ভিডিওতে দেখা গেছে, মৌলানার মতো পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তি ইয়ামিনের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তিনি বেল্ট দিয়ে একের পর এক আঘাত করছেন ইয়ামিনকে। বেল্ট দিয়ে মারতে মারতে ইয়ামিনকে মাটিতে ফেলে দেন। এরপর ইয়ামিনের গলায় পা দিয়ে চেপে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। দমবন্ধ হয়ে সে সময় মৃত্যুর আশঙ্কাও ছিল তাঁর। তাতেও পরোয়া করেননি অভিযুক্তরা। 

ভিডিওতে দেখা গেছে, সেই মারধরের সময় আরও দু'জন যুবক ঘটনাস্থলে আসেন। যিনি মারছিলেন, তাঁর কাছ থেকে বেল্টটি চান। তাঁরাই ইয়ামিনকে বেল্ট দিয়ে মারধর করবেন বলে জানান। তবে বেল্ট অন্য কারও হাতে তুলে দেননি ওই যুবক। আরও দুই যুবক এসে ইয়ামিনকে একের পর এক চড়, লাথি, ঘুষি, থাপ্পড় মারতে থাকেন। 

বেধড়ক মার খেতে খেতে প্রাণপণে চিৎকার করতে থাকেন ইয়ামিন। বারবার তাঁদের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চান। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন তিনি। তবুও কমেনি অত্যাচার। ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই, নির্যাতনের নমুনা দেখে শিউরে উঠেছেন নেটিজেনরা। 

তদন্তে নেমে জানা গেছে, যিনি বেল্ট দিয়ে, গলায় পা চেপে অত্যাচার করেছিলেন, তিনি সম্পর্কে ইয়ামিনের শ্বশুর। বাকি দু'জন ইয়ামিনের শ্বশুরবাড়ির আরও দু'জন সদস্য। জানা গেছে, ইয়ামিন মাদকাসক্ত ছিলেন। নিত্যদিন মাদকের নেশা করাকে কেন্দ্র করে স্ত্রীর সঙ্গে ঝামেলা হত তাঁর। 

সংসারে অশান্তির বিষয়টি বাড়িতে জানিয়েছিলেন ইয়ামিনের স্ত্রী।‌ এও জানিয়েছিলেন, আপত্তি থাকা সত্ত্বেও ইয়ামিন মাদকের নেশা ছাড়ছেন না। এই অভিযোগের পরে ইয়ামিনকে বাড়িতে নিমন্ত্রণ করেছিলেন শ্বশুর। খাওয়াদাওয়ার নিমন্ত্রণ পেয়ে আনন্দে লাফাতে লাফাতে শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন ইয়ামিন। কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে পা রাখা মাত্রই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হল তাঁকে। 

ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই পুলিশ কড়া পদক্ষেপ করেছে। অভিযুক্ত তিনজনকে আটক করেছে তারা। যদি ইয়ামিনের তরফে থানায় কোনও অভিযোগ করা হয়নি। পুলিশ তাই গ্রেপ্তার করেনি। কিন্তু ঘটনাটি ঘিরে তদন্ত জারি রেখেছে তারা।