আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজস্থানে বাসে অগ্নিকাণ্ডে আরও বাড়ল মৃত্যুমিছিল। সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, জয়সালমের - যোধপুর হাইওয়েতে নতুন বাসে অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২১। জানা গেছে, এই অগ্নিকাণ্ডেই একসঙ্গে নাতিকে হারিয়েছেন এক ব্যক্তি। তাঁর ছেলে ও পুত্রবধূ আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, পীর মহম্মদ সংসারে একাই রোজগেরে ছিলেন। স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে জয়সালমেরে মেডিক্যাল চেক-আপের জন্য গিয়েছিলেন। বামবারো কি ধানি গ্রামে বাড়িতেই তিন নাতির ঘরে ফেরার জন্য অপেক্ষা করছিলেন ঠাকুরদা ৭৩ বছরের সোহরাব খান। অপেক্ষাই সার! আর বাড়ি ফিরলেন না কেউ। 

 

জানা গেছে, জীবন্ত দগ্ধ হয়ে ১০ বছরের হাসিনা ও পাঁচ বছরের নাতির মৃত্যু হয়েছে বাসেই। চিকিৎসা চলাকালীন হাসপাতালে প্রাণ হারায় ইউনুস নামের আরেক শিশু। এই পরিবারের এক আত্মীয় জানিয়েছেন, 'ইউনুসের মৃত্যুর খবর এখনও জানেন না বৃদ্ধ। তিনি চেয়ারে বসে সকলের জন্য অপেক্ষা করছেন। ভাবছেন, তিন নাতি-নাতনি সহ বাকিরাও বাড়ি ফিরে আসবেন।' 

 

আরও পড়ুন: সুখের সংসার টিকল না ৬ মাস! চিকিৎসক স্ত্রীকে অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে খুন চিকিৎসক স্বামীর, ছয় মাস পর কেচ্ছা ফাঁস

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানে। মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে আজ বিকেলে জয়সালমের - যোধপুর হাইওয়েতে। বাসটি জয়সালমের থেকে যোধপুরের দিকে যাচ্ছিল। মাঝ পথেই চলন্ত বাসে দাউদাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। পালানোর সুযোগ পাননি বহু যাত্রী। বাসের মধ্যেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে ১৯ জন যাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন। 

 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাসটি জয়সালমের থেকে দুপুর তিনটে নাগাদ যোধপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। বাসে মোট ৫৭ জন যাত্রী ছিলেন। জয়সালমের - যোধপুর হাইওয়েতে চলন্ত বাসের পিছনের দিকে কালো ধোঁয়া দেখা গিয়েছিল প্রথমে। কালো ধোঁয়া নজরে পড়তেই বাসটি হাইওয়ের একপাশে থামান চালক। নিমেষের মধ্যে গোটা বাসে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। 

 

বাসটি দাউদাউ করে জ্বলতে দেখেই স্থানীয়রা ও পথচলতি মানুষ উদ্ধারকাজে ছুটে আসেন। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের একাধিক ইঞ্জিন ও বিশাল পুলিশ বাহিনী। দ্রুত আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। কিন্তু ততক্ষণে বাসের মধ্যেই আটকে পড়েন বহু যাত্রী।‌ জীবন্ত দগ্ধ হন ২১ জন যাত্রী। আহতদের তড়িঘড়ি করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। 

 

পুলিশ ও দমকলের প্রাথমিক অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই বাসটিতে আগুন ধরে যায়। এমনকী জানা গেছে, বাসটি মাত্র পাঁচদিন আগেই কেনা হয়েছিল। মঙ্গলবার রাতেই জয়সালমেরে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজন লাল শর্মা। পুড়ে খাক হয়ে যাওয়া বাসটি ও দুর্ঘটনাস্থল তিনি পরিদর্শন করেছেন। 

 

সর্বশেষে পাওয়া খবর অনুযায়ী, অগ্নিদগ্ধ হয়ে আরও ১৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁরা সকলেই হাসপাতালে যমে-মানুষে টানাটানি অবস্থায় রয়েছেন। গুরুতর আহতদের মধ্যে চারজন মহিলা ও দু'জন শিশু রয়েছে। বাকিদের শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তিনটি অ্যাম্বুল্যান্সে করে প্রথমে জয়সালমেরের জহর হাসপাতালে আহতদের নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হতেই তাঁদের যোধপুরের হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।