আজকাল ওয়েবডেস্ক: আধুনিকীকরণের যাত্রায় আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল ভারতীয় রেল। দেশের রাজ্যগুলির মধ্যে আঞ্চলিক সংযোগ আরও মজবুত করতে রেল মন্ত্রক এবার অনুমোদন দিয়েছে চারটি নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর।
এই নতুন ট্রেনগুলি চালু হলে দেশজুড়ে মোট বন্দে ভারত এক্সপ্রেস পরিষেবার সংখ্যা দাঁড়াবে ১৬৪, যা ভারতীয় রেলের আধুনিক পরিকাঠামো গঠনের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
রেল মন্ত্রকের তরফে নয়া চারটি ট্রেনের যাত্রাপথের কথা ঘোষণা করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। নতুন ট্রেনগুলি চলবে চারটি গুরুত্বপূর্ণ রুটে।
ফিরোজপুর ক্যান্ট থেকে দিল্লি, বারাণসী থেকে খাজুরাহো, লখনউ থেকে সাহারানপুর এবং বেঙ্গালুরু (কেএসআর) থেকে এর্নাকুলাম পর্যন্ত চালানো হবে অত্যাধুনিক মানের বন্দে ভারত এক্সপ্রেস।
এর ফলে একদিকে যেমন পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, কর্ণাটক ও কেরালার মধ্যে যোগাযোগ আরও সহজ হবে, তেমনই যাত্রীদের ভ্রমণের অভিজ্ঞতাও হবে দ্রুত, আরামদায়ক ও নিরাপদ।
বন্দে ভারত ট্রেনগুলির নকশা ও প্রযুক্তি ভারতের রেল ব্যবস্থাকে এক নতুন যুগে নিয়ে গেছে। প্রতিটি ট্রেনে থাকছে আধুনিক KAVACH অটোমেটিক ট্রেন প্রোটেকশন সিস্টেম, যা দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর।
ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার বেগে চলার সক্ষমতা থাকলেও, রেললাইন অর্থাৎ ট্র্যাকের উন্নয়ন হলে ১৮০ কিলোমিটার গতিতেও চলতে পারবে এই ট্রেন।
যাত্রীদের নিরাপত্তা ও আরামদায়ক যাত্রা নিশ্চিত করতে প্রতিটি কোচেই রাখা হয়েছে অত্যাধুনিক এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম (UV-C ডিসইনফেকশন প্রযুক্তিসহ), সম্পূর্ণ সিলড গ্যাংওয়ে, স্বয়ংক্রিয় প্লাগ দরজা, উন্নত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা, সিসিটিভি ক্যামেরা, জরুরি অ্যালার্ম বাটন এবং ট্রেন স্টাফদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের টক-ব্যাক ইউনিট।
পাশাপাশি, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন যাত্রীদের জন্য ড্রাইভিং কোচে আলাদা ল্যাভেটরির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।ভারতীয় রেল সূত্রে জানা গেছে, বন্দে ভারত পরিষেবার জনপ্রিয়তা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪–২৫ অর্থবছরে এই ট্রেনগুলির গড় আসন পূর্ণতার হার ছিল ১০২.০১%, আর ২০২৫–২৬ সালের জুন পর্যন্ত তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৫.০৩%।
এই পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে, বন্দে ভারত এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ও নির্ভরযোগ্য ট্রেন পরিষেবা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
ভারতীয় রেলের দাবি, নতুন এই রুটগুলি চালু হলে শুধু যাত্রীদের আরাম ও সময় বাঁচবে না, পাশাপাশি রাজ্যগুলির মধ্যে অর্থনৈতিক সংযোগও আরও দৃঢ় হবে।
যদিও চারটি নতুন ট্রেনের সঠিক উদ্বোধনের তারিখ, সময়সূচি ও স্টপেজের তালিকা এখনও ঘোষণা করা হয়নি, তবুও এই অনুমোদন ভারতীয় রেলের আধুনিকীকরণ ও যাত্রীসেবা উন্নয়নের পথে এক বড় পদক্ষেপ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
