আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্ত্রী বাপেরবাড়ি থেকে না ফেরায় আত্মহত্যা? ঠিক এমনই এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে। হতাশায় আত্মঘাতী হলেন এক যুবক। পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে, স্ত্রী বাপের বাড়ি থেকে ফিরতে না চাওয়ার জেরে দীর্ঘদিন ধরে হতাশায় ভুগছিলেন এক ৩০ বছর বয়সী যুবক। আর সেই অবসাদেই উত্তরপ্রদেশের বালিয়া জেলায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে মঙ্গলবার জানিয়েছে পুলিশ।

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে, যুবকের নাম রাহুল যাদব। তিনি সোমবার রাতে জিউতপুরা গ্রামে নিজের বাড়ির কাছেই একটি গাছ থেকে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন। মঙ্গলবার ভোরে পরিবারের সদস্যরা তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। তৎক্ষণাৎ পুলিশে খবর দেন।

 

স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সঞ্জয় শুক্লা জানিয়েছেন, খবর পেয়েই পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য দেহটি পাঠান হয় স্থানীয় এক হাসপাতালে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, রাহুল যাদব সীতাপুরে কর্মরত পিএসি কনস্টেবল কোমল যাদবের বড় ছেলে ছিলেন। খবর অনুযায়ী, তাঁর দু’বার বিয়ে হয়। প্রথম বিয়ে আগেই ভেঙে যায়। এরপর সম্প্রতি কিছু মাস আগে তিনি দ্বিতীয়বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

 

পরিবারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে থানার আধিকারিক জানিয়েছেন, রাহুল ক্রমাগত তাঁর স্ত্রীকে তাঁর বাপেরবাড়ি থেকে ফিরে আসার জন্য বলছিলেন, কিন্তু তিনি নাকি ফিরে আসতে রাজি হননি। এই কারণে হতাশ হয়েই তিনি এই চরম পদক্ষেপ করেন বলে অভিযোগ। আধিকারিক আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত বর্তমানে জারি রয়েছে।

আরও পড়ুন: বাজারে গিয়েছিল কিশোরী! হঠাৎ চার পাষণ্ড এসে জোর করে টেনে নিয়ে গিয়ে গাড়িতে চলল ধর্ষণ, হাড়হিম কাণ্ড এই রাজ্যে 

প্রসঙ্গত, ভাই, তিন বোনের অশ্লীল ভিডিও, ছবি দেখিয়ে হুমকি। এআই করা এই ছবিগুলো দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতানোর পরিকল্পনা ছিল একাধিক যুবকের। ফোনে একাধিকবার হুমকি দেওয়া হয়। এমনকী টাকা না দিলে সোশ্যাল মিডিয়ায় তিন বোনের অশালীন ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। মানসিক চাপে শেষমেশ চরম পদক্ষেপ করলেন এক তরুণ। ঘটনার দুই সপ্তাহ পর ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মঘাতী হলেন তিনি। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে হরিয়ানার ফরিদাবাদে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই-এর মাধ্যমে তিন বোনের অশ্লীল ছবি, ভিডিও দেখিয়ে ১৯ বছরের এক তরুণকে ব্ল্যাকমেল করা হয়েছিল। এআই করা অশ্লীল ছবিগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস করার হুমকি দিয়ে লক্ষাধিক টাকা দাবি করা হয়েছিল তরুণের থেকে। এই ঘটনায় মানসিক চাপে আত্মঘাতী হয়েছেন ১৯ বছরের ওই তরুণ। 

 

পুলিশ আরও জানিয়েছে, মৃত তরুণের নাম, রাহুল ভারতি ডিএভি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। গত দুই সপ্তাহ ধরেই মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ছিলেন তিনি। রাহুলের বাবা মনোজ ভারতি জানিয়েছেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে ছেলে কিছুই খাওয়াদাওয়া করছিলেন না। ঘরের মধ্যে চুপচাপ বসে থাকতেন। কারো সঙ্গে কথাও বলতেন। 

 

জানা গেছে, রাহুলের ফোন হ্যাক করে তাঁর ও তিন বোনের অশ্লীল ভিডিও, ছবি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে বানানো হয়েছিল। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, সাহিল নামের এক যুবক সেই ছবি, ভিডিও রাহুলকে পাঠিয়ে ২০ হাজার টাকা চেয়েছিল। হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে একাধিকবার তাঁদের মধ্যে ভিডিও ও অডিও করে কথোপকথন হয়। 

 

শেষ কথোপকথনে দেখা গেছে, রাহুলকে সাহিল টাকার জন্য হুমকি দিয়েছিল। টাকা না দিলে তিন বোনের অশ্লীল ভিডিও, ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিল সে। টাকা দিতে না পারলে আত্মহত্যার প্ররোচনাও দেয় সে। এই ঘটনার পরেই মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন রাহুল। 

 

গত শনিবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ একাধিক ওষুধ খান তিনি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হতেই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবার। হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, নীরজ ভারতি নামের আরেক যুবক এই ঘটনায় জড়িত রয়েছে। আত্মহত্যার আগে রাহুল নীরজের সঙ্গেও কথা বলেছিলেন। রাহুলের মা জানিয়েছেন, তাঁর দেওর এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে। ছ'মাস আগে দেওরের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছিল তাঁর। এক যুবতীর সঙ্গে মিলে দেওর তাঁর সন্তানদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছে। 

 

পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে দু'জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। তদন্তকারী আধিকারিক সুনীল কুমার জানিয়েছেন, 'রাহুল গত শনিবার সন্ধ্যায় বিষপান করেছিলেন। এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তিও ছিলেন তিনি। চিকিৎসা চলাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে জোরকদমে। মোবাইল ফোনের তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তের শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপ করা হবে।'