আজকাল ওয়েবডেস্ক: হার্ড ডিস্কে জমিয়ে রাখা অশ্লীল ছবির জেরে সর্বনাশ ৩২ বছর বয়সি ইউপিএসসি পরীক্ষার্থীর। লিভ ইন সঙ্গী প্রাক্তন প্রেমিকের সঙ্গে পরিকল্পনা করে খুন করেছে তাঁকে। তিন সপ্তাহ আগের ঘটনার তদন্তে নেমে রীতিমতো শিউরে উঠেছে পুলিশ। সেই হার্ড ডিস্কে আরও ১৫ জনের অশ্লীল, নগ্ন ছবি জমা ছিল বলে জানিয়েছে তারা।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ৩২ বছরের রাম কেশ মীনার হার্ড ডিস্কে লিভ ইন সঙ্গী ছাড়াও আরও ১৫ জনের নগ্ন ছবি জমা ছিল। বিকৃত মানসিকতার জেরে আতঙ্কে ছিলেন তরুণী। দীর্ঘ জেরায় ধৃত তরুণী জানিয়েছেন, অনুমতি না নিয়েই তাঁর নগ্ন ছবি, ভিডিও তুলেছিলেন ওই যুবক। সেই অশ্লীল ছবি হার্ড ডিস্কে জমা করে রেখেছিলেন। বলার পরেও যা ডিলিট করেননি।
সেই হার্ড ডিস্কে আরও ১৫ জন তরুণী, যাঁরা সকলেই যুবকের পরিচত, তাঁদের নগ্ন ছবি, ভিডিও জমা করা ছিল। সেই ১৫ জন তরুণীকে না জানিয়েই অশ্লীল ছবিগুলি তুলেছিলেন রাম। তাঁদের অনুমতি না নিয়েই সেগুলো জমা করে রেখেছিলেন। ধৃত লিভ ইন সঙ্গী আতঙ্কে ছিলেন তাই। স্পেশাল কমিশনার রবীন্দ্র যাদব জানিয়েছেন, ধৃত অমৃতার আতঙ্ক ছিল এই নগ্ন ছবি, ভিডিও রাম সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিতে পারেন। সেই আতঙ্কেই খুনের পরিকল্পনা করেন।
লুকিয়ে লুকিয়ে অশ্লীল ছবি তুলেছিলেন প্রেমিক, ডিলিটও করেননি! বারবার অনুরোধ করলেও ছবি মুছে দিতে রাজি হননি যুবক। অবশেষে চরম প্রতিশোধ নিল তরুণী ও তার প্রাক্তন প্রেমিক। যুবককে নৃশংসভাবে খুন করে, গায়ে ঘি, ওয়াইন ঢেলে জ্বালিয়ে দিল তারা। যুবকের অগ্নিদগ্ধ দেহ দেখে পুলিশের ধারণা ছিল, দুর্ঘটনা। কিন্তু তিন সপ্তাহ পর খুনের কিনারা করতেই শিউরে উঠলেন তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন: বিয়ের মরশুমের আগেই স্বস্তি, সোনার দামে আরও চমক, ২২ ক্যারাটের দর জানলে দোকানে ছুটবেন
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ৩২ বছর বয়সি এক চাকরি পরীক্ষার্থীর অগ্নিদগ্ধ দেহ নর্থ দিল্লির তিমারপুর এলাকা থেকে উদ্শধার করা হয়েছিল। এই ঘটনার তিন সপ্তাহ পর ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডের কিনারা করল দিল্লি পুলিশ। যে খুনের ঘটনায় রীতিমতো চমকে গেছে পুলিশও।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্তরা হলেন, ২১ বছর বয়সি এক তরুণী ও তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক, এবং তাঁদের এক বন্ধু। মৃত যুবকের সঙ্গে তরুণী লিভ ইন সম্পর্কে ছিলেন। তরুণীর কিছু অশ্লীল ছবি, ভিডিও এবং অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ডিলিট করতে অস্বীকার করেছিলেন তাঁর লিভ ইন সঙ্গী। যুবকের এহেন আচরণের জেরেই তরুণী খুনের পরিকল্পনা করেন। যে কাণ্ডে মদত দিয়েছিলেন তাঁদের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তিন অভিযুক্তকেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত ৬ অক্টোবর তিমারপুরের গান্ধী বিহার এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। একটি ফ্ল্যাটের পাঁচ তলার ঘরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর যুবকের অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার করে তারা। মৃত যুবকের নাম, রাম কেশ মীনা। তিনি ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। যুবকের পরিবারের তরফে রহস্যমৃত্যু ঘিরে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার আগেরদিন রাতে দুই তরুণ মুখ ঢেকে ওই ফ্ল্যাটে ঢোকে। কিছুক্ষণ পর একজনকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। তার আরও কিছুক্ষণ পর এক তরুণী ও এক তরুণ ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যায়। তরুণীকেও শনাক্ত করা যায় সহজে। সে রামের লিভ ইন সঙ্গী অমৃতা চৌহান।
তিনজন ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার খানিকক্ষণ পরেই ওই ফ্ল্যাটে দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে শুরু করে। অমৃতার ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করেও জানা যায়, ঘটনার সময় সে আশেপাশেই ছিল। এরপরই খুনের মামলা রুজু করে পুলিশ। পরিকল্পনামাফিক খুনের ঘটনায় জোরকদমে তদন্ত শুরু করে তারা।
ঘটনার পর থেকেই অমৃতার ফোন বন্ধ ছিল। একাধিক জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে অবশেষে ১৮ অক্টোবর তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দীর্ঘ জেরায় সে জানায়, এই ঘটনায় আরও দু'জন জড়িত। একজন তার প্রাক্তন প্রেমিক সুমিত কাশ্যপ, আরেকজন সন্দীপ কুমার। ২১ অক্টোবর সুমিতকে এবং ২৩ অক্টোবর সন্দীপকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশি জেরায় অমৃতা জানিয়েছেন, চলতি বছরে মে মাসে রামের সঙ্গে তার আলাপ হয়। কিছুদিনের মধ্যেই প্রেমের সম্পর্কের শুরু। গান্ধী বিহারের ফ্ল্যাটে তারা একসঙ্গে থাকত। এর মাঝেই অমৃতার কিছু অশ্লীল ভিডিও, ছবি তুলেছিলেন রাম। যা হার্ড ডিস্কে জমা করে রেখেছিলেন। বিষয়টি জানতেই সেই ছবি, ভিডিও ডিলিট করার জন্য অনুরোধ করে সে। কিন্তু রাম তাতে রাজি হননি। এরপরই প্রাক্তন প্রেমিককে বিষয়টি জানায় সে। এরপর খুনের পরিকল্পনা করে তারা।
৫ অক্টোবর রাতে সুমিত ও সন্দীপ মিলে রামকে মারধর করে, গলা টিপে খুন করে। এরপর তাঁর শরীরে তেল, ঘি, ওয়াইন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এরপর গ্যাস সিলিন্ডারটি তাঁর মাথার কাছে রেখে দেয়। এলপিজি গ্যাসের ধোঁয়ায় ঘরটি ভরে যায়। খুনের পর রামের ল্যাপটপ, হার্ড ডিস্ক আরও কিছু সামগ্রী নিয়ে তারা পালিয়ে যায়। ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে, আবারও আগুন জ্বালিয়ে দেয় তারা। এর জেরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। ইতিমধ্যেই পুলিশ রামের চুরি যাওয়া সামগ্রী উদ্ধার করে তদন্ত চালাচ্ছে।
