আজকাল ওয়েবডেস্ক: তুরস্কে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে শান্তি আলোচনা অচলাবস্থায় পৌঁছেছে বলে মনে হচ্ছে। যদিও সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের শুরুতে সংক্ষিপ্ত যুদ্ধের পর অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি বহাল ছিল। আফগানিস্তানের টোলো নিউজের মতে, আলোচনার সময় পাকিস্তান একটি বিরল স্বীকারোক্তি করেছে। ইসলামাবাদ জানিয়েছে, তাদের একটি বিদেশী দেশের সঙ্গে একটি চুক্তি রয়েছে যার কারণে কাবুলে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছিল। একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানি প্রতিনিধিদল আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে ড্রোন হামলা প্রতিরোধে অসহায়তা প্রকাশ করেছে। কারণ, তারা তৃতীয় একটি দেশের সঙ্গে একটি চুক্তিতে আবদ্ধ ছিল।
তুরস্কের আঙ্কারায় অনুষ্ঠিত শান্তি আলোচনা সম্পর্কে টোলো নিউজ তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, “বৈঠকে প্রথমবার পাকিস্তান স্বীকার করেছে যে ড্রোন হামলার অনুমতি দেওয়ার জন্য একটি বিদেশী দেশের সঙ্গে তাদের একটি চুক্তি রয়েছে এবং তারা এই ধরনের হামলা রোধ করতে পারে না কারণ চুক্তি ভঙ্গ করা সম্ভব নয়।” যদিও কোনও দেশের সঙ্গে পাকিস্তানের চুক্তি রয়েছে সেই বিষয়ে খোলসা হয়নি বৈঠকে।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, টিটিপির হামলার সময় আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে হামলা চালানোর অধিকার ইসলামাবাদের রয়েছে, এই বিষয়ে পাকিস্তানি প্রতিনিধিদল আফগান দলকে একমত হতে বললেও চুক্তি অধরা রয়ে গিয়েছে। সূত্রের খবর, বৈঠকে পাকিস্তানি প্রতিনিধিদলটিকে অসংগঠিত বলে মনে হয়েছিল, কোনও সুসংগত যুক্তি উপস্থাপন করেনি এবং আলোচনা থেকে সরে আসার দিকেই বেশি মনোযোগী বলে মনে হয়েছিল। টোলো নিউজ জানিয়েছে, এক পর্যায়ে তারা এমনকি আফগান পক্ষকে অনুরোধ করেছিল যে টিটিপির হামলার প্রতিক্রিয়ায় আফগান ভূখণ্ডে হামলা চালানোর পাকিস্তানের অধিকার স্বীকার করতে হবে।
আরও পড়ুন: বিয়েবাড়ির আয়া হয়েই দৈনিক আয় ৮৮ হাজার টাকা! কী করতে হয়, ভারতে মেলে এই কাজ?
সেপ্টেম্বরে সৌদি আরবের সঙ্গে পাকিস্তান একটি ঐতিহাসিক কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করার কয়েক মাস পরেই এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। সৌদির সঙ্গে চুক্তিতে যে কোনও বহিরাগত হুমকির বিরুদ্ধে পারস্পরিক প্রতিরক্ষার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে এবং সামরিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক উভয়ই গভীর করা হয়েছে।
একই সঙ্গে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে ইসলামাবাদ তার প্রতিরক্ষা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক জোরদার করেছে। তাছাড়া, ট্রাম্প প্রকাশ্যে তালেবান-নিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তান থেকে বাগরাম বিমানঘাঁটি ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এমনকি তিনি হুমকিও দিয়েছেন যে, যদি বিমানঘাঁটিটি না পাওয়া যায়, তাহলে ‘খারাপ কিছু ঘটবে’। এদিকে, পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বারবার ‘ট্রাম্পের নেতৃত্বের’ প্রশংসা করেছেন। ‘ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি’তে তাঁর ভূমিকারও হিসেবে প্রশংসা করেছেন। এমনকি তিনি ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্য মনোনীত করেছেন।
ইস্তাম্বুলে আফগানিস্তান-পাকিস্তান আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। উভয় পক্ষই দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য একে অপরকে দোষারোপ করেছে। আলোচনার সঙ্গে জড়িত দু’টি অজ্ঞাত সূত্রকে উল্লেখ করে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে যে আলোচনার কোনও সমাধান হয়নি।
