আজকাল ওয়েবডেস্ক: সোমবার থেকে জল্পনা ছিল। মঙ্গলবার ধাপে ধাপে ঘোষণার পর, হোয়াইট হাউস আনুষ্ঠানিকভাবে 'শাটডাউন' ঘোষণা করেছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত বারোটার পর, অর্থাৎ ক্যালেন্ডারে ১ অক্টোবর শুরু হতেই, শুরু হল শাটডাউন।
কেন এই শাটডাউন?
এককথায়, কারণ অর্থাবভাব। মার্কিন মুলুকে অর্থবর্ষ শুরু হয় ১ অক্টোবর থেকে। তার আগে সরকার চালানোর জন্য, আরও স্পষ্ট করে বলতে, সরকারের নানা দপ্তর সক্রিয় রাখতে কংগ্রেস নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থের অনুমোদন দেয়। ওই অঙ্কের টাকার জন্য সেনেট সদস্যদের সমর্থন নিয়ে বিল পাশ করাতে হয়। সেখানে ধাক্কা খেয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। মার্কিন মুলুকের সেনেট সদস্য সংখ্যা ১০০। বিল পাশের জন্য, তা প্রেসিডেন্টের টেবিলে পাঠাতে সমর্থন লাগবে অন্তত ৬০ জনের। রিপাবলিকানদের সদস্য সংখ্যা ৫৩। অর্থাৎ, অন্তত ৭ জন ডেমোক্র্যাট সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন ছিল ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া অর্থবর্ষের বরাদ্দ অর্থের জন্য। কিন্তু তা হয়নি। রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাটরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপস্থিত হতে না পারার জন্য, থমিকে গিয়েছে ওই ব্যবস্থা। ফলে ব্যয় বরাদ্দ স্থির করতে না পারায় শাটডাউন ট্রাম্প প্রশাসনের। এই আংশিক শাটডাউন সম্পূর্ণ শাটডাউনের দিকে যাবে কি না, তা নিয়েও জোর চর্চা নানা মহলে।
কী হবে শাটডাউনের ফলে?
Democrat Shutdown. pic.twitter.com/w5GKHQQDuj
— The White House (@WhiteHouse)Tweet by @WhiteHouse
মূলত সরকারের দতরগুলির কার্যক্রম সক্রিয় রাখার কারণেই প্রয়োজন অর্থের। তা না মেলায় সরকারের নানা দপ্তর বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে সরকারের নানা কার্যক্রম। সূত্রের তথ্য তেমনটাই। জরুরি পরিস্থিতিতে কেবল আপৎকালীন পরিষেবা চালু থাকার সম্ভাবনা। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে তথ্য, এই শাটডাউন জনসেবা এবং বৃহত্তর মার্কিন অর্থনীতির উপর প্রভাব ফেলতে পারে ব্যাপক হারে।
তথ্য, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের (ডিএইচএস) বেশিরভাগ কর্মী কাজ চালিয়ে যাবে। একইসঙ্গে তথ্য, হোমল্যান্ড ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছিল, যদি সরকারী অচলাবস্থা দেখা দেয় তবে সংস্থার প্রায় ২৭১,০০০ কর্মচারীর মধ্যে প্রায় ১৪,০০০ জনকে ছুটিতে পাঠানো হতে পারে। ডিএইচএস পরিকল্পনায় আরও বলা হয়েছে যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নিরাপত্তা পরিষেবা সুরক্ষা প্রদান, দেশে আগত যাত্রী এবং পণ্যসম্ভার প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন প্রয়োগের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে শাটডাউন পরিস্থিতি চললেও।
স্বাথ্য খাতের কী হবে?
তথ্য, ফেডারেল সরকারের কাছে পরবর্তী আর্থিক বছরের প্রথম প্রান্তিক পর্যন্ত মেডিকেডের তহবিল সরবরাহ করার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ রয়েছে। ফলে ওই দপ্তর খুব বেশি সমস্যার সম্মুখীন হবে না বলেই ধারনা।
এই সময়কালে বেশিরভাগ কর্মী বেতন পাবেন না। যাঁরা কাজ করবেন, তাঁদেরও অনেকে বেতন পাবেন না। শাটডাউন উঠে যাওয়ার পর, মিলতে পারে বেতন। আমেরিকার খাদ্য দপ্তরেও এই শাটডাউনের প্রভাব পড়বে। প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা মার্কিন মুলুকের শিক্ষা দপ্তরে।
এই গোটা ঘটনায় ট্রাম্প প্রশাসন আঙুল তুলেছে ডেমোক্র্যাটদের দিকেই। যদিও সোমবার থেকেই এই 'শাটডাউন' পরিস্থিতি স্পষ্ট হচ্ছিল ধীরে ধীরে। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ছ' বছর আগেও মার্কিন মুলুকে একবার এই পরিস্থিতি হয়েছিল। তখনও প্রশাসনের গদিতে ট্রাম্পই। মার্কিন মুলুকে সেই সময়ে টানা একমাসের বেশি সময় ধরে অচলাবস্থা ছিল। ৩৫ দিনের ওই অচলাবস্থা মার্কিন মুলুকের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে দীর্ঘ সময়কালের 'শাটডাউন।' ফের তাঁর সময়কালেই এই পরস্থিতি তৈরি হল মার্কিন মুলুকে।
