আজকাল ওয়েবডেস্ক: একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে প্রাপ্তবয়স্করা নাচছেন এবং পার্টি করছেন। এমন সময় একজন মহিলা এবং তাঁর দল অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাচ্চাদের দেখাশোনা করছেন, এমনই একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এই কাজের জন্য ওই মহিলার বেতনের পরিমাণ ইন্টারনেটকে অবাক করে দিয়েছে। চিনে নিন নিউ ইয়র্ক সিটির ‘ওয়েডিং ন্যানি’ স্যান্ড্রা ওয়েইরকে। তিনি বিয়ে এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানে বাচ্চাদের দেখাশোনা করে প্রতিদিন এক হাজার ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৮৮ হাজার টাকার কিছু বেশি) আয় করেন।
সান্ড্রা গত ১১ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাচ্চাদের দেখাশোনা করছেন। কিন্তু ২০২৪ সালে একটি সাধারণ কাজ তাঁর জীবনকে চিরতরে বদলে দিয়েছিল। একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে তাকে চারটি বাচ্চা দেখাশোনার জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানে সারা রাত ধরে অতিথিরা জিজ্ঞাসা করতে থাকেন যে তিনি এই ধরণের অনুষ্ঠানের জন্য বিশেষভাবে শিশু যত্নের ব্যবস্থা করেন কি না। সেখান থেকেই জন্ম ‘ওয়েডিং ন্যানি এনওয়াইসি’র।
এখন, স্যান্ড্রা এবং তাঁর দল তাদের ব্র্যান্ডের লোগোযুক্ত কালো টি-শার্ট পরে অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে যায়। ছোট অতিথিদের আপ্যায়ন করার জন্য তারা প্রস্তুত। বাবা-মায়েরা যাতে উপভোগ করেন। খেলাধুলা থেকে শুরু করে ঘুমানোর রুটিন পর্যন্ত তাদের নখদর্পণে। তারা সবকিছুই পরিচালনা করে যাতে বড়রা আরাম করতে পারেন এবং পার্টি করতে পারেন।
আরও পড়ুন: মাসাইমারা যাওয়ার পথেই সব শেষ! কেনিয়ার জঙ্গলে ভেঙে পড়ল পর্যটকদের বিমান, সকল যাত্রীর মৃত্যুর আশঙ্কা
১২ ঘণ্টার জন্য স্যান্ড্রার ফি এক হাজার ডলার। চাইলে কেউ অতিরিক্ত সময়ে পরিষেবা নিতেই পারেন। এছাড়াও বড় দলের সাহায্য চাইলেও নিতে পারেন। স্যান্ড্রা সাধারণ ১২টি বাচ্চা দেখাশোনার জন্য চার জন ন্যানির দল পরিচালনা করেন। যে গ্রুপে একাধিক সিটারের প্রয়োজন হয়, সেখানে প্রতি ঘণ্টায় ৬৫ ডলার (প্রায় ৫৮০০ টাকা) খরচ হবে।
স্যান্ড্রা বলেন, “আমরা বিমার জন্য অর্থ প্রদান করি এবং আমাদের অনেক খরচ হয়। তাই আমাদের পরিষেবার খরচ আহামরি কিছুই নয়।” সান্ড্রা জানিয়েছেন, প্রতিটি অনুষ্ঠানের আগে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে শিশুর নিরাপত্তা, অ্যালার্জি এবং এমনকি প্রতিটি সন্তানের ব্যক্তিত্ব নিয়ে আলোচনা করার জন্য একটি বিস্তারিত ফোন কলের ব্যবস্থা করা হয়।
ভারতে, ন্যানি রাখার ধারণাটি নতুন নয়। আমরা দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের আয়া বলে আসছি। এর উৎপত্তি ঔপনিবেশিক যুগে। সেই সময় ধনী ভারতীয় এবং ব্রিটিশ পরিবারগুলিতে আয়াদের উপর শিশুদের দায়িত্ব অর্পণ করা হত। তারা প্রায়শই পরিবারের সঙ্গে থাকতেন এবং তাঁদের নিজস্ব পরিবারের মতো শিশুদের যত্ন নিতেন।
কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। ছোট পরিবার, কর্মজীবী বাবা-মা এবং শহরের জীবন দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, আধুনিক যুগের অভিভাবকত্বে আয়ারা একটি বড় অংশ হয়ে উঠেছে। বর্ধিত পরিবারের সদস্যরা যারা আগে সবসময় সাহায্যের জন্য পাশে থাকতেন, তাদের পরিবর্তে, প্রশিক্ষিত এবং নির্ভরযোগ্য আয়ারা এখন বাচ্চাদের যত্ন নেওয়ার জন্য এগিয়ে আসছেন।
