আজকাল ওয়েবডেস্ক: 'নো কিংস'-এর ডাকে উত্তাল মার্কিন মুলুক। ট্রাম্পের একাধিক নীতিতে রুষ্ট মার্কিন জনতা। প্রতিবাদে লাখ লাখ মানুষ আমেরিকার বিভিন্ন শহরে পথে নেমেছেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ভাবে সরকার চালাচ্ছেন, তাতে অসন্তোষ প্রকাশ করেই এই বিক্ষোভ। 'নো কিংস' কর্মসূচির ওয়েবসাইটে লেখা রয়েছে, 'প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভাবেন তাঁর রাজত্বই সর্বশ্রেষ্ঠ। কিন্তু মনে রাখতে হবে, আমেরিকায় কোনও রাজা নেই। আর আমরা কোনও বিশৃঙ্খলা, দুর্নীতি এবং নিষ্ঠুরতা সহ্য করব না।'
????BREAKING????:???????? #NoKings Protest Takes Over Times Square NYC ????????
— The_Independent (@TheIndeWire)
Thousands gather in New York’s Times Square for the nationwide “No Kings” protests against what organizers say are authoritarian actions by the Trump administration. Events are planned in all 50 states today. pic.twitter.com/eTUxiXKRlATweet by @TheIndeWire
উদ্যোক্তাদের দাবি বিভিন্ন শহরে প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে পথে নেমেছেন।
আমেরিকানদের ফোঁস দেখে নড়েচড়ে বসেছেন ট্রাম্পও। তড়িঘড়ি নিজের ট্রুথ সোশ্যালে বার্তা দিয়েছেন তিনি। প্রথমে ফক্স বিজনেসকে এক সাক্ষাতে প্রেসিডেন্ট বলেছেন, 'তারা আমাকে একজন রাজা হিসাবে উল্লেখ করছে। আমি কোনও রাজা নই।' এরপরই ট্রুথ শোস্যালে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন তিনি। সেখানে রাজার মুকুট পরে রয়েছেন ট্রাম্প। তিনি যুদ্ধবিমান চালাচ্ছেন। পরমূুহূর্তেই দেখা যাচ্ছে, উড়ান থেকে খয়রি রঙের মাটির মতো থকথকে পদার্থ বিক্ষোভকারীদের উপর পড়ছে। অনেকেই ওই থকথকে পদার্থকে মাষের মল বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় কমেন্ট করেছেন।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন ডেমোক্র্যাট কর্মী হ্যারি সিসন - , যিনি প্রায়শই ট্রাম্পের সমালোচনা করেন। ভিডিও-ত দেখা যাচ্ছে সিসনের মাথাতেও উড়ান থেকে থকথকে পদার্থ পড়েছে।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের শেয়ার করা এআই-জেনারেটেড ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে ট্রাম্প মুকুট এবং কেপ পরে আছেন, আর ন্যান্সি পেলোসি এবং অন্যান্য ডেমোক্র্যাটরা তার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে আছেন।
সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, বিক্ষোভ চলাকালীন ট্রাম্প ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে তার বাড়িতে সপ্তাহান্ত কাটাচ্ছিলেন।
কেন পথে নেমে এই 'নো কিংস' বিক্ষোভ?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন, শিক্ষা এবং নিরাপত্তা নীতির বিরুদ্ধে এই ক্ষোভের প্রকাশ। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় বসার পর থেকে, ট্রাম্প অভিবাসন দমন অভিযান, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য ফেডারেল তহবিল হ্রাস করার হুমকি, এবং বেশ কয়েকটি রাজ্যে ন্যাশনাল গার্ড সেনা মোতায়েনের অনুমোদন দিয়েছেন। এই কয়েকটি ছাড়াও ট্রাম্পের আরও একাধিক সিদ্ধান্তে তিতিবিরক্ত সেখানকার বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, ট্রাম্প স্বৈরাচারী শাসন চালাচ্ছেন, আর ওই ব্যবস্থার বিরুদ্ধেই মূলত প্রতিবাদ।
বিক্ষোভকারীরা আমেরিকা জুড়ে ২,৫০০ টিরও বেশি সমাবেশ করছে বলে জানা গিয়েছে। অংশগ্রহণকারীরা ট্রাম্পের নেতৃত্বে মার্কিন সরকারের কর্তৃত্ববাদের দিকে দ্রুত ঝুঁকে পড়ার নিন্দা করছে। বিক্ষোভগুলি ওয়াশিংটন, বোস্টন, আটলান্টা, শিকাগো এবং লস অ্যাঞ্জেলেস-সহ অন্যান্য প্রদেশেও মিছিল করেছে। রিপাবলিকান নেতৃত্বাধীন বেশ কয়েকটি রাজ্যের শত শত ছোট পাবলিক স্পেসে পিকেটিং হয়েছে। লোকেরা "প্রতিবাদের চেয়ে দেশপ্রেমিক আর কিছু নেই" বা "ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ করুন" এর মতো স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে ধরে রেখেছিল। সান ফ্রান্সিসকোতে, শত শত মানুষ ওশান বিচে তাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে। বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল "কোন রাজা নেই!"প্ল্যাকার্ড।
আরেকজন বিক্ষোভকারী, যিনি ২০ বছর ধরে সিআইএতে কাজ করেছেন, তিনি বলেছেন, "আমি স্বাধীনতার জন্য এবং বিদেশে এই ধরণের চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আর এখন আমি আমেরিকায় এমন একটি মুহূর্ত দেখতে পাচ্ছি, যেখানে সর্বত্র চরমপন্থীরা রয়েছে যারা আমার মতে, আমাদের এক ধরণের নাগরিক সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।"
হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর ট্রাম্প সরকারের বিরুদ্ধে এটি তৃতীয় গণ-বিক্ষোভ। এই বছরের জুনে পূর্ববর্তী 'নো কিংস' বিক্ষোভ ২,১০০টি স্থানে পরিচালিত হয়েছিল।
