গোপাল সাহা: রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে ভয়ঙ্কর সংঘর্ষে কেঁপে উঠল দক্ষিণ কলকাতার চেতলা। পেয়ারী মোহন রোডের ফুটপাতে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড। শনিবার গভীর রাতে ঘটে গেল এক নৃশংস খুন। সামান্য বচসার জেরে যুবকের গলায় লোহার রড ঢুকিয়ে খুনের অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম, অশোক পাশওয়ান (৪০)। বাবার নাম, সাধন পাশওয়ান। মৃত যুবক কলকাতার চেতলা রোড এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে। গতকাল রাত সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে যুবককে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন দেবু দিকপতি (৬০) নামের এক ব্যক্তি। তিনি সম্পর্কে মৃত যুবকের ভগ্নীপতি। তিনি অভিযোগ জানিয়েছেন, স্থানীয় কয়েকজন যুবক গতকাল রাতে সামান্য বচসার পরেই অশোকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এবং নির্মমভাবে তাঁকে আঘাত করা হয়। শারীরিক হেনস্থার জেরেই মৃত্যু হয়েছে অশোকের। অভিযুক্তরা নৃশংসভাবে হত্যা করেছে তাঁকে।
ঘটনাস্থল ৮৭/বি, পেয়ারী মোহন রায় রোডের সংলগ্ন ফুটপাত। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, যুবকের গলায় লোহার রড ঢুকিয়ে নির্তযাতন করে অভিযুক্তরা। তার জেরে কয়েক মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় অশোকের। রক্তাক্ত অবস্থায় অশোককে স্থানীয়রা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
রাতেই খবর পেয়ে চেতলা থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। মৃতদেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, ব্যক্তিগত বিবাদ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে চেতলা থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৩(১)/৩(৫) ধারায় মামলা করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, অশোককে অভিযুক্তরা গাড়ির চাকা খোলার জন্য ব্যবহৃত রড বা সাবল দিয়ে আঘাত করে প্রথমে। এবং তারপর তাঁর মুখের মধ্যে দিয়ে ওই সাবল ঢুকিয়ে দেয় খুবই নৃশংসভাবে। ফলে ভয়ংকর ভাবে আহত হন অশোক। সঙ্গে সঙ্গে ফুটপাতে লুটিয়ে পড়েন যন্ত্রণায়। রক্তে ভেসে যায় ফুটপাত এবং সংজ্ঞা হারান তিনি।
চেতলার মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয়দের বক্তব্য, 'অশোক খুবই চুপচাপ মানুষ ছিলেন। তাঁর সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটতে পারে, তা বিশ্বাসই হচ্ছে না।' এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়েছে। এবং তাদের গ্রেপ্তারের জন্য তল্লাশি চলছে। ঘটনার সঙ্গে যুক্ত অন্য কেউ আছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
চেতলার এই খুনের ঘটনায় নতুন করে প্রশ্ন উঠছে— শহরের ব্যস্ত এলাকায় রাতের নিরাপত্তা কতটা নিশ্চিত? কলকাতা বাসীদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা নিয়ে পুলিশের ভূমিকা ফের প্রশ্নের মুখে!
