আজকাল ওয়েবডেস্ক: গায়ে পেট্রল ঢেলে এক যুবককে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ তাঁরই বন্ধুদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে নাগেরবাজার থানা এলাকার বেদিয়াপাড়া তারকনাথ কলোনিতে। স্থানীয় বাসিন্দা রঞ্জিত কর্মকারকে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে তাঁরই ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে সুমন ব্যানার্জি ওরফে বাগান, সুশান্ত দাস এবং সাগর নামে তিন যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাতে, কালীপূজার বিসর্জন শেষে।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিসর্জন শেষে বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে কোনও ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে বচসা বাঁধে। সেই বচসা মুহূর্তের মধ্যে মারাত্মক আকার ধারণ করে। অভিযোগ, উত্তেজনার বশে রঞ্জিতের গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় অভিযুক্তরা। মুহূর্তের মধ্যে আগুনে ঝলসে যায় রঞ্জিতের শরীরের প্রায় ২০ শতাংশ। চিৎকার চেঁচামেচিতে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন এবং দ্রুত রঞ্জিতকে দমদম মিউনিসিপালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান।

আরও পড়ুন: মেয়ের শখ মেটাতে বস্তাভর্তি কয়েন নিয়ে শোরুমে বাবা, ধনতেরাসে মন ছুঁয়ে যাওয়া কাহিনির সাক্ষী ছত্তিশগড় 

অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে তাঁকে আরজি কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। যেখানে তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, অভিযুক্ত তিন বন্ধু ওই এলাকারই বাসিন্দা। নাগেরবাজার থানার পুলিশ ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তরা সকলেই পলাতক বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ তাদের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে।

 

এই নৃশংস ঘটনায় আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যক্তিগত বিবাদ থেকেই এই নৃশংস ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তরা প্রায়ই এলাকায় উশৃঙ্খল আচরণ করত এবং স্থানীয়দের সঙ্গে নানা বিবাদেও জড়িয়ে পড়েছিল।

 

রঞ্জিত কর্মকারের দুই আত্মীয়া সোনালি দাস এবং শেফালি মণ্ডল—অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় কোনও রাজনৈতিক দল ঘটনার পর এগিয়ে আসেনি। তাঁদের আশঙ্কা, রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হতে পারে।

 

স্থানীয় বাসিন্দারাও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, 'বন্ধুত্বের মধ্যে যে এমন নিষ্ঠুরতা লুকিয়ে থাকতে পারে, তা ভাবতেই শিউরে উঠছি। অপরাধীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হোক।'

 

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিকভাবে এটি ব্যক্তিগত বিবাদের ফলেই ঘটেছে বলে তাদের মনে হচ্ছে। তবে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এলাকায় এখনও টানটান উত্তেজনা রয়েছে।

ঘটনাটি নিয়ে ১১ নম্বর ওয়ার্ডের পৌরপিতা মৃন্ময় দাস বলেন, প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার পর গাড়ির তেল শেষ হয়ে যায় এবং অন্য গাড়ি থেকে তেল নিয়ে গাড়িতে ঢালার সময় অসতর্কতাবশত সিগারেটের থেকে আগুন লেগে যায়। এর সাথে অন্য কোন কিছু যোগ নেই।