সময়কে থামিয়ে দেওয়ার গল্প এতদিন ছিল কেবল সিনেমা বা উপন্যাসে। কিন্তু এবার সেই কল্পনাই বিজ্ঞানীজের হাতে রূপ নিল বাস্তবে। যুক্তরাজ্যের বাবরাহাম ইনস্টিটিউট-এর গবেষকেরা প্রথমবারের মতো এক আশ্চর্য সাফল্য অর্জন করেছেন। যেখানে ৫৩ বছর বয়সী এক মহিলার ত্বকের কোষকে পুনর্জীবিত করে ২৩ বছরের তরুণ ত্বকের মতো করে তোলা হয়েছে।

এই যুগান্তকারী গবেষণায় বিজ্ঞানীরা ব্যবহার করেছেন ‘পার্শিয়াল সেলুলার রি-প্রোগ্রামিং’ নামে এক উন্নত পদ্ধতি। এতে কোষে প্রয়োগ করা হয় বিশেষ প্রোটিন উপাদান, যেগুলোকে বলা হয় ‘ইয়ামানাকা ফ্যাক্টর’। জাপানি বিজ্ঞানী শিনিয়া ইয়ামানাকার নামানুসারে এদের নামকরণ করা হয়। এই ফ্যাক্টরগুলির নিয়ন্ত্রিত প্রয়োগে ত্বকের কোষগুলোকে মাত্র ১৩ দিনের মধ্যেই “যৌবনে ফিরিয়ে” আনা সম্ভব হয়েছে, অথচ তাদের মূল বৈশিষ্ট্য ত্বক হিসেবে কাজ করার ক্ষমতা অক্ষুণ্ণ থেকেছে।

বিজ্ঞানীদের গবেষণার ফলাফল সত্যিই চমকে দেওয়ার মতো। পুনর্জীবিত কোষগুলো আগের তুলনায় অনেক দ্রুত ক্ষত সারিয়েছে, আরও বেশি কোলাজেন উৎপন্ন করেছে আর এমন জিন সক্রিয় করেছে যা সাধারণত তরুণ বয়সে সক্রিয় থাকে। মাইক্রোস্কোপে দেখা গেছে, এই কোষগুলো আগের চেয়ে বেশি দৃঢ়, স্থিতিশীল ও নমনীয় হয়ে উঠেছে।

সবচেয়ে অবাক করার বিষয়, এই পরিবর্তনটি সাময়িক নয়। কয়েক সপ্তাহ পরেও কোষগুলো তাদের নবযৌবনের বৈশিষ্ট্য বজায় রেখেছে। যা প্রমাণ করে এটি কেবল বাহ্যিক পরিবর্তন নয়, বরং এক বাস্তব জৈব পুনরুজ্জীবন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আবিষ্কার ভবিষ্যতে বার্ধক্য রোধ, ক্ষত সারানো এবং এমনকি বয়সজনিত রোগের চিকিৎসায় এক নতুন যুগের সূচনা করতে পারে।