বয়স তাঁর কাছে শুধুই সংখ্যা। জীবনের ৭৫ বসন্ত পার করে ফেলেছেন শাবানা আজমি। তবু তাঁকে দেখে তা বোঝার উপায় নেই। পর্দায় একের পর এক কাজ করে চলেছেন অবলীলায়। থ্রিলার থেকে রোম্যান্স, নিজেকে নিয়ে কাটাছেঁড়া চালিয়ে যাচ্ছেন এখনও। কিন্তু স্বাস্থ্যকর জীবনধারা, সুষম খাবার এবং নিজের প্রতি সচেতনতা সত্ত্বেও কখনও কখনও বয়সজনিত সমস্যা ঘিরে ধরতে পারে। সেগুলির মধ্যে অন্যতম কোমর ব্যথা। শাবানার স্বামী গীতিকার জাভেদ আখতারও এই সমস্যার কবলে। তাই নিজের মতো করে বেছে নিয়েছেন ঘরোয়া টোটকা। আর তা-ই এবার তিনি ভাগ করে নিলেন অনুরাগীদের সঙ্গে।
এক ফেসবুক পোস্টে শাবানা জানান, দীর্ঘ সময় ধরে কোমর ব্যথায় ভুগছিলেন জাভেদ। এক সদয় ব্যক্তি সেই ব্যথা সারানোর একটি ঘরোয়া টোটকা বাতলে দেন। তা কাজে লাগিয়ে মাত্র ১৪ দিনের মধ্যেই ব্যথা থেকে মুক্তি পেয়েছেন জাভেদ।
উপকরণ:
মেথি দানা – ১০০ গ্রাম
মৌরি – ৫০ গ্রাম
মিছরি – ৫০ গ্রাম
প্রস্তুত প্রণালী:
সব উপকরণ একসাথে মিক্সারে দিয়ে মিহি গুঁড়ো করে নিন।
সেই গুঁড়ো একটি পরিষ্কার, বায়ুরোধী পাত্রে সংরক্ষণ করুন।
প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে আধা চা চামচ গুঁড়ো অর্ধেক গ্লাস গরম দুধে মিশিয়ে পান করুন।
বিশেষ টিপস:
মিছরি ও গরম দুধ এই টোটকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ— এগুলো বাদ দেবেন না।
চাইলে দুধের পরিবর্তে আমন্ড দুধ ব্যবহার করলেও কার্যকারিতা বজায় থাকবে।
নিয়মিত এই উপায়ে চললে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ব্যথা কমে আসবে এবং শরীরে নতুন উদ্যম ফিরে আসবে।
আজকের দ্রুতগতির জীবনে, যেখানে ছোট-বড় ব্যথায় আমরা ওষুধের দিকে ছুটে যাই, সেখানে এমন এক সহজ, প্রাকৃতিক উপায় আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে প্রকৃত চিকিৎসা অনেক সময় প্রকৃতির মধ্যেই লুকিয়ে থাকে।
মেথি দানায় আছে প্রদাহনাশক গুণ, যা শরীরের ভিতরে জমে থাকা প্রদাহ কমায় ও পেশীর টান হালকা করে। মৌরি হজমে সাহায্য করে, শরীরকে ঠান্ডা রাখে, এবং স্নায়ুর চাপ কমায়। অন্য দিকে, মিছরি শরীরকে তাৎক্ষণিক শক্তি দেয়। গরম দুধের সঙ্গে মিশে এই পানীয়টিকে আরও মোলায়েম এবং উপভোগ্য করে তোলে।
এই টোটকাটি শুধু কোমর ব্যথার জন্য নয়, বরং, হাঁটুর ব্যথা, ঘাড়ের ব্যথা ও পেশির স্টিফনেস— এসব ক্ষেত্রেও কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। তবে মনে রাখা দরকার, যে কোনও প্রাকৃতিক চিকিৎসা ধৈর্য ও নিয়মের সঙ্গে করতে হয়। এর ফল ধীরে আসে, কিন্তু একবার শরীর অভ্যস্ত হয়ে গেলে এর প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হয়।
একই সঙ্গে, এই টোটকার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনও অপরিহার্য। প্রতিদিন সামান্য যোগব্যায়াম, হালকা স্ট্রেচিং, হাঁটাচলা, এবং সঠিক ভঙ্গিতে বসা-ওঠা— এসব অভ্যাস কোমর ও মেরুদণ্ডকে শক্তিশালী রাখে। প্রয়োজনে গরম জল দিয়ে সেঁক দেওয়া, পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখাও শরীরের আরোগ্য প্রক্রিয়াকে দ্রুত করে তোলে।
সবচেয়ে বড় কথা, এই ঘরোয়া উপায়টি একেবারেই সহজ, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী। এতে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। এবং ঘরে বসেই এটি তৈরি করে খাওয়া যায়। নিয়মিত সেবনে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন শরীরের পরিবর্তন। ব্যথা কমে আসবে, শরীর হালকা লাগবে, ঘুম হবে আরামদায়ক, আর মনও থাকবে শান্ত।
