করণ জোহর থেকে কপিল শর্মা, রাম কাপুর, সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকজন বলিউড তারকার চেহারায় যে পরিবর্তন লক্ষ্য করা গিয়েছে, তাকে অস্বাভাবিক বলে দাগিয়ে দিয়েছেন অনেকেই। খুব কম সময়ে মেদ কমিয়ে রোগা হয়েছেন তাঁরা। চোয়াল ভেঙে গিয়েছে। ভুঁড়িও প্রায় গায়েব।  কেউ কেউ মনে করছেন, এ সবই হচ্ছে ওজেম্পিকের মঙ্গলে। এবার প্রশ্ন হল, এই ওজেম্পিক বস্তুটি আসলে কী?

বিদেশের বাজারে সহজলভ্য এই ওষুধ এখন ভারতেও পাওয়া যাচ্ছে। সাময়িক ভাবে ওজন ঝরাতে এটি কার্যকরী হলেও এই ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে এখনও সন্দিহান স্বাস্থ্য় বিশেষজ্ঞেরা। হেলথলাইনের মতে, ওজেম্পিক, যাতে সক্রিয় উপাদান সেমাগ্লুটাইড রয়েছে, মূলত টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ওষুধ। কিন্তু এটি খেলে ওজন হ্রাসও হতে পারে। ওজন কমানোর জন্য সরাসরি অনুমোদিত না হলেও, অনেকেই এটি রোগা হওয়ার ওষুধ হিসাবে ব্যবহার করেন। এটি  দেহে এমন একটি হরমোনকে অনুকরণ করার ক্ষমতা রাখে যা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে এবং খিদে কমায়। যার ফলে খাদ্য গ্রহণ হ্রাস পায় এবং উল্লেখযোগ্য ভাবে ওজন হ্রাস পায়।

ওজেম্পিক প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন হরমোন জিএলপি-১ এর মতো কাজ করে, যা রক্তে শর্করা এবং খিদে নিয়ন্ত্রণ করে। এটি পেট খালি করার প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয় এবং আপনাকে পেট ভরা অনুভব করায়, যার ফলে খাবার গ্রহণের পরিমাণ কমে যায়। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এটি পরোক্ষভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, ওজেম্পিক গ্রহণের সময় কমে যাওয়া ওজন ওষুধ বন্ধ করার পরে ফিরে আসতে পারে।

আরও পড়ুন: ক্যানসার শুরু থেকেই জানান দেয় উপস্থিতি! অবহেলা করলেই বিপদ! কী কী লক্ষণ দেখে বুঝবেন শরীরে বাসা বেঁধেছে মারণরোগ

শুধু তাই নয়। একটি গবেষণায় জানা গিয়েছে, ওজেম্পিকের কারণে অন্ধত্ব, পেট এবং মস্তিষ্কের সমস্যা, মানসিক অবসাদস, লিভার ড্যামেজ এবং গলব্লাডারের রোগ পর্যন্ত দেখা দিতে পারে। ওয়েব এমডি-র এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওজেম্পিক অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে, যাকে প্যানক্রিয়াটাইটিস বলা হয় । যদি প্যানক্রিয়াটাইটিসের লক্ষণ দেখা দেয়, যেমন বমি অথবা পেটের উপরের অংশে তীব্র ব্যথা যা পিঠ পর্যন্ত যায়, তাহলে অবিলম্বে ওজেম্পিক ব্যবহার বন্ধ করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

আরও পড়ুন: দাঁতে পুরু হলুদ চর! প্রাণ খুলে হাসতেও লজ্জা? কম সময় আর খরচেই পাবেন মুক্তঝরা হাসি, জানুন টিপস

ওজেম্পিক থাইরয়েড টিউমারের কারণ হতে পারে। যার মধ্যে মেডুলারি থাইরয়েড কার্সিনোমা (MTC) নামক এক ধরনের ক্যানসার। যদি মেডুলারি থাইরয়েড কার্সিনোমার লক্ষণ দেখা দেয় যার মধ্যে রয়েছে ঘাড়ে ফোলাভাব বা পিণ্ড, গিলতে সমস্যা, শ্বাসকষ্ট, তা হলে অবিলম্বে ওজেম্পিক ব্যবহার বন্ধ করুন।

ওজেম্পিক উচ্চ মাত্রায় ব্যবহার শুরু করলে আপনার দৃষ্টিশক্তির অবনতি হতে পারে। যদি আপনার ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি নামক কোনও রোগ থাকে , তবে ওজেম্পিকের ব্যবহার দৃষ্টিশক্তি সাময়িকভাবে খারাপ হতে পারে। এটি ব্যবহারের ফলে পিত্তথলির সমস্যা হতে পারে। যার মধ্যে রয়েছে কোলেসিস্টাইটিস এবং কোলেলিথিয়াসিস।