আজকাল ওয়েবডেস্ক: আধুনিক সম্পর্কের জগতে প্রেম, ঘনিষ্ঠতা ও যৌনতার পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে নতুন নতুন প্রশ্ন সামনে আসছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের এক তরুণীর অভিজ্ঞতা, যা নিউ ইয়র্ক টাইমস-এ প্রকাশিত হয়েছে, সেই আলোচনাকেই আরও জোরালো করেছে। তরুণী জানাচ্ছেন, সঙ্গী এস-এর (ছদ্মনাম) সঙ্গে সম্পর্কের প্রথম দিকে টেক্সটিং, আলাপচারিতা, ছোঁয়া—সবই ছিল প্রবল। কয়েক সপ্তাহ পর তারা শারীরিক সম্পর্কে আবদ্ধ হন, এবং সেই সময় একে অপরের শরীরকে বোঝা ও সুখ দেওয়ার ক্ষেত্রে দুজনই ছিলেন সমান আগ্রহী। তাদের এক বিশেষ রোমান্টিক রুটিন ছিল "ডিনারের আগে লাউঞ্জ সেশন"—যেখানে প্রায়শই ডেটের আগেই ঘনিষ্ঠতা তৈরি হতো।
কিন্তু ছ’মাসের মাথায় তরুণী খেয়াল করেন, সেই লাউঞ্জ সেশন ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। আগে যেখানে প্রায়শই শারীরিক সম্পর্ক হতো, সেখানে এখন তা সপ্তাহে একবার কিংবা দুই সপ্তাহে একবারে নেমে এসেছে। এ নিয়ে তিনি মজা করে সঙ্গীকে "উট" বললে, সঙ্গী তা ভালোভাবে নেননি। মজার মাধ্যমে ইঙ্গিত দেওয়ার চেষ্টায় ফল আসেনি। যদিও শারীরিক সম্পর্কের ঘনত্ব কমে যাচ্ছিল, তবু সঙ্গী এস ছিলেন যথেষ্ট মনোযোগী ও স্নেহশীল—বারবার যোগাযোগ, আলিঙ্গন, চুম্বন ও একসঙ্গে সময় কাটানো। অর্থাৎ সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছিল না। সমস্যাটা শুধু যৌনতার ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ ছিল।
আরও পড়ুন: ঘামের দুর্গন্ধে টেকা দায়? জানেন আপনার গায়ের গন্ধই বলে দিতে পারে শরীরে বাসা বেঁধেছে কোন রোগ?
বন্ধুর পরামর্শে তরুণী অবশেষে সরাসরি নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন। এক রাতে অন্তরঙ্গতার পর তিনি জানান—যৌনতা তাঁর কাছে শুধু শারীরিক নয়, মানসিক ভারসাম্য ও ঘনিষ্ঠতারও উৎস। এস উত্তর দেন: “এটা কেন্দ্রবিন্দু ও আশ্বাসের মতো।” এরপর তারা যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরও সচেতন ও পরিকল্পিত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এক রোমান্টিক ইতালি সফরে নারীটি আশা করেছিলেন প্রতিদিনই অন্তরঙ্গতা হবে। কিন্তু বাস্তবে পাঁচতারা হোটেলের বিলাসবহুল ভ্রমণেও ঘটেছিল মাত্র একবার। রাতের পর রাত শারীরিক ক্লান্তি, ভ্রমণের ব্যস্ততা আর অনিচ্ছার কারণে সুযোগ নষ্ট হয়। এমনকি কালো সিল্কের নাইটগাউনও পরিস্থিতি বদলাতে পারেনি। তরুণীর মন্তব্য: “রাভেলোতে রোমাঞ্চের পরিবর্তে ঘুমাল।”
চিকিৎসা ও গবেষণা বলছে, সব দম্পতির যৌন চাহিদা একরকম হয় না। WebMD-এর তথ্য অনুযায়ী, প্রায় অর্ধেক দম্পতির যৌন ইচ্ছার মাত্রা মিলে যায়। কিন্তু বাকিদের ক্ষেত্রে পুরুষ কিংবা নারী—দুজনেরই যে কারও ইচ্ছা কম হতে পারে। যদিও নারীটি একসময় ভেবেছিলেন গোপনে অন্য সম্পর্কে জড়াতে পারেন, বাস্তবে তিনি তা করেননি। বরং নিজের যৌন ইচ্ছা পূরণের দায়িত্ব নিজের হাতে নেন। শয্যার পাশের টেবিলে রাখা ইলেকট্রনিক সঙ্গী—একটি ভাইব্রেটর—তাঁকে সেই চাহিদা পূরণে সাহায্য করে। তাঁর ভাষায়, “এটা রোমান্স বা স্নেহের বিকল্প নয়, কিন্তু আমাকে নিজের যৌন আকাঙ্ক্ষার নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে দিল।”
এই অভিজ্ঞতা সামনে আনে একটি বড় প্রশ্ন—সম্পর্কে যৌনতার ভূমিকা কতটা, এবং যখন দুই সঙ্গীর যৌন আকাঙ্ক্ষা ভিন্ন হয়, তখন সেটি সম্পর্ককে কীভাবে প্রভাবিত করে? মনোবিদদের মতে, খোলাখুলি যোগাযোগই একমাত্র সমাধান। দম্পতিদের উচিত চাহিদা ও সীমাবদ্ধতা নিয়ে নির্দ্বিধায় আলোচনা করা।
