বাংলা সিনেমায় এর আগে এমন ঘটনা খুব একটা দেখা যায়নি। ৫৪টা কাটছাঁটের পর সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র মিলল ‘দি অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস’ ছবির। অবশ্য অ্যাডাল্ট সার্টিফিকেটের সঙ্গে! অর্থাৎ শুধুই প্রাপ্তবয়স্করা দেখতে পারবেন ঋষভ-সৌরভ-পায়েলের ‘দি অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস’। ছবি মুক্তি পাচ্ছে আগামী ১৪ই নভেম্বর ২০২৫। এবং সেই ছবিই এবার মুক্তি পাচ্ছে ‘শিশু দিবস’-এ! তাই আগেভাগেই পরিচালক জয়ব্রত দাশের বিধিসম্মতি সতর্কীকরণ, “সপরিবারে দেখবেন না এই ছবি!”

 

 


জয়ব্রত দাশ পরিচালিত ‘দি অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস’-এর মুক্তি স্থগিত হয়েছিল সেন্সর অনুমোদন ও অ্যানিম্যাল পারমিশনের জটিলতার কারণে। গত জুলাই মাসেই ছবি মুক্তির কথা থাকলেও, সবুজ সংকেত মেলে অবশেষে অক্টোবরে। মুক্তির নতুন তারিখ, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, অর্থাৎ শিশু দিবসেই।

 

 

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ‘শিশু দিবস’-এ অ্যাডাল্ট ছবি মুক্তি পাবে কেন? ছবির সহ-প্রযোজক সৌম্য সরকার ও সংকেত মিশ্রের যৌথ উত্তর, “প্রতি বছরই শিশুদের জন্য সিনেমা মুক্তি পায়, এবার নাহয় বড় হয়ে যাওয়া বাচ্চাদের জন্য একটা সিনেমা আসুক!” অর্থাৎ তাঁদের উত্তরেই যেন ঝরে পড়ছে হালকা দুষ্টুমি ও প্রচারের নিখুঁত কৌশল।

 

ছবির নির্মাণ প্রক্রিয়াটাও কম টালমাটাল নয়। ফিল্ম ইনস্টিটিউটের বন্ধুদের সঙ্গে মিলে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে, নিজের অর্থেই চার বছর ধরে এই ছবি তৈরি করেছেন জয়ব্রত। কখনও ফান্ড শেষ, কখনও শুট বন্ধ— তবুও হাল ছাড়েননি পরিচালক। অবশেষে ছবিটি দাঁড়িয়েছে এক নিখাদ টিমওয়ার্কের প্রতীক হিসেবে।ছবিতে অভিনয় করেছেন রুদ্রনীল ঘোষ, সৌরভ দাস, পায়েল সরকার, ঋষভ বসু, রাহুল অরুণোদয় ব্যানার্জি, অনুরাধা মুখার্জি, সুদীপ মুখার্জি, অমিত সাহা, অনিন্দ্য পুলক ব্যানার্জি, রানা বসু ঠাকুর ও অঞ্জন রায় চৌধুরী প্রমুখ।

 

 

জয়ব্রত দাশের কথায়, এটি একটি পাল্প অ্যাকশন থ্রিলার, পরিচালক কুইন্টিন ট্যারান্টিনোর প্রতি ভালবাসা থেকেই প্রেরণা। তবে থ্রিলারের সঙ্গে এখানে রয়েছে কমেডির এক ঠিকঠাক মিশেল- বাংলা দর্শকের জন্য একদমই নতুন অভিজ্ঞতা।

 

গল্প ঘোরে এক বিরল ও অমূল্য অ্যান্টিক মদের বোতল ঘিরে। কিছু ক্রিমিনাল মিলে সেই বোতল চুরির প্ল্যান করে, আর তারপরই শুরু হয় প্রতারণা, পরকীয়া, চুরি-ডাকাতি ও বিশ্বাসঘাতকতার টানটান দৌড়। নির্মাতাদের দাবি, পরিকল্পনা, অ্যান্টি-প্ল্যান, প্রতিশোধ, এবং প্রলোভনের খেলার পরতে পরতে উত্তেজনায় ভরা চিত্রনাট্য দর্শককে নিঃশ্বাস নিতে দেবে না।

 

 

টলিপাড়ায় গুঞ্জন, বাংলা ছবিতে এরকম ‘বোল্ড’ ও ‘বিস্ফোরক’ যৌন দৃশ্য আগে খুব একটা দেখা যায়নি। ফলে দর্শকও অপেক্ষায় অন্য ধারার পরীক্ষামূলক  সিনেমা দেখতে।

 

ছবিটি শেষ পর্যন্ত প্রযোজনা সহায়তা পেয়েছে সৌম্য সরকার ও প্রমোদ ফিল্মসের কর্ণধার প্রতীক চক্রবর্তীর। প্রতীকের কথায়, “বাংলায় পাল্প অ্যাকশন কমেডি জঁরটা এখনও অজানা। আমরা চাই এই সাহসী ছবিটা দর্শকের কাছে পৌঁছোক।”