দীর্ঘ দু’বছর পর বড়পর্দায় ‘সিকান্দর’ নিয়ে ফিরেছিলেন  সলমন খান। ‘কিসি কা ভাই কিসি কি জান’-এর ভরাডুবির পর টাইগার’-এর এই ছবি নিয়ে ভক্তদের প্রত্যাশা ছিল আকাশছোঁয়া। কিন্তু পুরোপুরি আশাহত করেছে এই ছবি—দর্শকের মনে একেবারেই দাগ কাটেনি এই ছবি। সহজ কথায়, বক্স অফিসে ভরাডুবি হয়েছে ‘সিকান্দর’-এর। আর এবার এক সাক্ষাৎকারে এই ছবির ব্যর্থতার দায় খোলাখুলিভাবে নিজের কাঁধে নিলেন ছবির পরিচালক এ আর মুরুগাদোস। স্পষ্টভাবে জানালেন, এ ছবির ব্যর্থতার দায় বর্তায় পুরোপুরি তাঁর উপর। 

তিনি স্পষ্টই জানালেন, গল্প আবেগঘন হলেও কার্যকরীভাবে তা তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। “আসলে ছবির মূল গল্প ছিল আবেগঘন। এক রাজার কাহিনি, যে নিজের স্ত্রীকে কোনওদিন বোঝেনি। আমরা সবাই কমবেশি এমনই—মা, বন্ধু বা স্ত্রী, সম্পর্কের মূল্য অনেক সময় বুঝতে পারি না। যখন তাঁরা আমাদের ছেড়ে চলে যান, তখনই অপরাধবোধ চেপে ধরে। ছবিতে রাজা যখন স্ত্রীর মৃত্যুতে ভেঙে পড়ে, তাঁর অঙ্গ দান হয়ে যায় তিনজনের শরীরে। এরপর রাজা তাঁদের খুঁজে বের করেন, স্ত্রীর জন্য যা যা করতে পারেননি, সেই সব পূরণ করার চেষ্টা করেন। এভাবেই গোটা একটি গ্রাম তাঁর আপন হয়ে ওঠে। গল্পটা ছিল আবেগঘন, কিন্তু আমি ঠিকমতো তা পর্দায় ফুটিয়ে উঠতে পারিনি।”

মুরুগাদোস 'সিকান্দর'-এর সঙ্গে তুলনা টানেন গজিনির সঙ্গে। “আমি ‘গজিনি’ করতে পেরেছিলাম কারণ ওটা রিমেক ছিল। আগে থেকেই সেটার উপর আমার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল। কিন্তু সিকন্দর ছিল অরিজিনাল, তাই সেই জায়গায় আমি স্বচ্ছন্দ ছিলাম না। আমি এটা বলছি না যে আমি হিন্দি সিনেমায় আর ফিরব না। অবশ্যই ফিরব, তবে নিজের কমফর্ট জোনে। দর্শক যখন আমার ভাবনার সঙ্গে সংযোগ খুঁজে পায় না, তখন সেটা আমায় খুব আঘাত করে।”

 ২০০৮ সালে মুরুগাদোস প্রথম বলিউডে পা রাখেন ‘গজিনি’ দিয়ে। নিজের তামিল ছবির রিমেক হিসেবে নির্মিত এই থ্রিলার হিন্দি সিনেমায় ব্লকবাস্টার হয়। আমির খান, আসিন, জিয়া খান এবং প্রদীপ রাওয়াত অভিনীত ছবিটি বাজেট ছিল ৫২ কোটির, আর আয় করেছিল প্রায় ১৯৪ কোটিরও বেশি!

অন্যদিকে ‘সিকান্দর’-এর গল্পে রাজকোটের রাজা সঞ্জয় রাজকোট ওরফে ‘সিকান্দর’ (সলমন খান)। তাঁর স্ত্রী সাইশ্রী (রশ্মিকা মন্দানা) ছিলেন তাঁর শক্তির স্তম্ভ, গোপনে তাঁকে সব বিপদ থেকে আড়াল করতেন। স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিন জন মানুষ, যাঁরা তাঁর স্ত্রীর অঙ্গ প্রতিস্থাপন পেয়েছেন—তাঁদের রক্ষা করাই হয়ে ওঠে রাজার জীবনের লক্ষ্য। সেই সঙ্গে লড়াই তাঁকে মুখোমুখি করে এক প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতিকের।

তবুও শক্তিশালী কাস্ট আর আবেগঘন প্লট থাকা সত্ত্বেও ‘সিকান্দর’ দর্শকের মনে ঝড় তুলতে পারেনি। আর তার দায় এবার নিজের কাঁধে তুলে নিলেন পরিচালক নিজেই।