অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান বরাবরই নিজের আধ্যাত্মিক দিক নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেছেন নিজের শান্ত, সংযত অথচ গভীর ছন্দে। কিন্তু খুব কম মানুষই জানেন, আজ যে নামে তাঁকে গোটা বিশ্ব চেনে -আল্লাহরাখা রহমান, সেই নামটি আসলে দিয়েছিলেন এক হিন্দু জ্যোতিষী!
এক পুরনো সাক্ষাৎকারে রহমান জানিয়েছিলেন, তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় রূপান্তর যা এককথায় আত্মিক ও ব্যক্তিগত, তা আসে বাবার মৃত্যুর পরই। সেখান থেকেই শুরু হয় তাঁর নতুন পথচলা। তখন অবশ্য তাঁর নাম ছিল দিলীপ কুমার। রহমানের কথায়, “সত্যি কথা বলতে কী, নিজের নামটা কোনওদিনই আমার ভাল লাগত না। মহান অভিনেতা দিলীপ কুমারের প্রতি পরম শ্রদ্ধা রেখেও বলছি, আমার নামটা যেন আমার নিজের সঙ্গে মানাত না।”
একদিন তাঁর মা ছোট বোনের বিয়ের ব্যাপারে কথা বলার জন্য তাঁকে নিয়ে যান এক জ্যোতিষীর কাছে। সেই সাক্ষাৎই বদলে দেয় রহমানের জীবন। রহমানের ভাষায়, “আমরা তখন সুফিবাদের পথে হাঁটতে শুরু করেছি। মা আমার বোনের কুণ্ডলী দেখাতে চেয়েছিলেন। ঠিক সেই সময় আমি নাম পাল্টানোর কথাও ভাবছিলাম। জ্যোতিষী আমাকে দেখে বললেন, ‘এই ছেলেটা খুব ইন্টারেস্টিং।’ এরপরই তিনি দু’টি নাম প্রস্তাব করেন— ‘আবদুল রহমান’ আর ‘আবদুল রহিম’। আমি সঙ্গে সঙ্গে ‘রহমান’ নামটাই ভালবেসে ফেলি।”
অবশ্য সেখানেই থামেননি সুরকারের মা। তাঁর এক অন্তর্দৃষ্টি থেকেই আসে ছেলের নামের প্রথম অংশ -আল্লাহরাখা। এ প্রসঙ্গে রহমান বলেন, “মা-ই বলেছিলেন, ‘আল্লাহরাখা যোগ কর- অর্থাৎ যাকে আল্লাহ রক্ষা করেন।’ সেভাবেই শুরু হয় আমার নতুন পরিচয়, এ আর রহমান।”
সম্প্রতি রহমান আরেকটি ব্যক্তিগত মুহূর্তের কথা ভাগ করেছেন, যখন তিনি ঠিক করেন যে, তিনি হিন্দি শেখাবেন নিজেকেই। ওই সাক্ষাৎকারে রহমান জানান, একসময় তিনি নিজের তামিল গানের হিন্দি অনুবাদ পড়ে ‘অপমানিত’ বোধ করতেন। সেই অভিজ্ঞতাই তাঁকে অনুপ্রাণিত করে হিন্দি শেখার।
বর্তমানে রহমান প্রস্তুতি নিচ্ছেন বারাণসীতে তাঁর প্রথম লাইভ পারফরম্যান্সের জন্য । এই নিয়ে তিনি যারপরনাই উৎসাহিত। তিনি বলেন, “বারাণসীর শক্তি, ইতিহাস, আর নানান রঙের গল্প আমাকে টানে। আগে এখানে পারফর্ম করার সুযোগ হাতছাড়া হয়েছিল, কিন্তু এবার মনে হচ্ছে সেই ডাকে সাড়া দেওয়ার সময় এসে গিয়েছে।”
 
 অন্যদিকে, এ আর রহমানের সঙ্গে সায়রা বানুর বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে এখনও চর্চা থামেনি। দীর্ঘ ২৯ বছরের বিবাহিত জীবনে এবার বিচ্ছেদের পথে হেঁটেছেন রহমান-সায়রা। একই সঙ্গে রহমানের গানের দলের সদস্য, গিটারিস্ট মোহিনী দের বিয়ে ভাঙায় রহমানের সঙ্গে তাঁর প্রেমচর্চাও শুরু হয়।কিন্তু নিজেদের বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে এখনও পর্যন্ত মুখ খোলেননি সায়না। বরং বারবার রহমানকে 'সেরার সেরা' বলে অভিহিত করেছেন। এর আগে তাঁদের বিচ্ছেদের চর্চায় সায়রা বানু, জানিয়েছিলেন গত কয়েক মাস ধরে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। তিনি জানিয়েছিলেন এই মুহূর্তে চেন্নাইতে নেই। কিন্তু রহমানকে কটুক্তি না করতে অনুরোধ করেছিলেন।রহমানকে একজন রত্ন, বিশ্বের সেরা মানুষ বলেও অভিহিত করেছিলেন সায়রা।এদিকে, অস্কারজয়ী সঙ্গীত পরিচালক এ আর রহমান দীর্ঘদিন ধরে কর্মব্যস্ত জীবনের কারণে পরিবার ও ব্যক্তিগত জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলো হারিয়ে ফেলেছেন বলে স্বীকার করেছেন। তাই তিনি এখন সচেতনভাবে নিজের কর্মজীবনের গতি ধীরে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর মতে, সাফল্যের পেছনে ছুটতে গিয়ে মানুষ কখনও কখনও জীবনকেও মিস করে ফেলে।
