ইস্টবেঙ্গল - ০

পাঠচক্র - ১ (ডেভিড)

আজকাল ওয়েবডেস্ক: নাটকীয় হার। মঙ্গলবার ব্যারাকপুরের বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় স্টেডিয়ামে ডেভিড মোটলার একমাত্র গোলে পাঠচক্রের কাছে ০-১ গোলে হারল ইস্টবেঙ্গল। ডার্বির আগে বড় ধাক্কা লাল হলুদ শিবিরে। গত কলকাতা লিগে গ্রুপ পর্ব এবং সুপার সিক্স মিলিয়ে একটিও ম্যাচ হারেনি ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু এবার শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়ল গতবারের চ্যাম্পিয়নরা। ম্যাচের ৮৭ মিনিটে একমাত্র গোল ডেভিড মোটলার। ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণের ভুলকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যায় পাঠচক্র। গোল ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন আদিত্য পাত্র। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে গোল তুলে নেন ডেভিড। কলকাতা লিগে নিজের চতুর্থ গোল করলেন হিমাচলের স্ট্রাইকার। 

দুটো ড্রয়ের পর হার। কাস্টমসের কাছে আটকে যাওয়ার পর পাঠচক্রের কাছে হার ইস্টবেঙ্গলের। শনিবার কল্যাণীতে ডার্বি। ঘরোয়া লিগে মোহনবাগানের মুখোমুখি হওয়ার আগে তিন পয়েন্ট ঘরে তুলতে চেয়েছিল লাল হলুদ। বড় ম্যাচের আগে কোনও দলই পয়েন্ট হারাতে চায় না। কিন্তু বিনো জর্জের পরিকল্পনা কাজে লাগল না। তিন পয়েন্ট হারিয়েই মাঠ ছাড়ল ইস্টবেঙ্গল। মুহুর্মুহু ক্রস, সেন্টার সবই ছিল। শুধু গোলটাই এল না। কলকাতা লিগে এখনও পর্যন্ত অপরাজেয় তকমা বজায় রাখল পাঠচক্র। অনবদ্য গোলকিপিং অর্ণব দাসের। ক্লিনশিট রাখলেন সদ্য মাতৃহারা গোলকিপার। চারটে ম্যাচ জিতে টেবিল শীর্ষে পাঠচক্র। অন্যদিকে সাত গোল দিয়ে কলকাতা লিগ শুরু করলেও, পারফরমেন্স গ্রাফ পড়তির দিকে ইস্টবেঙ্গলের। এদিন ব্যারাকপুর স্টেডিয়াম ভরায় সমর্থকরা। ডার্বির আগে দলের হারের সাক্ষী থাকতে হল। সুরুচি সংঘের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছিল ইস্টবেঙ্গল। তারপর কলকাতা কাস্টমসের সঙ্গে ২-২। এবারের কলকাতা লিগে প্রথম হার লাল হলুদের। 

ম্যাচের স্কোরলাইন দেখে অবশ্য খেলার গতিপ্রকৃতির আন্দাজ করা যাবে না। আধিপত্য ছিল ইস্টবেঙ্গলের। একাধিক গোলে জিততে পারত। অসংখ্য সেট পিস পায়। কিন্তু অ্যাটাকিং থার্ডে ব্যর্থতা। অন্যদিকে পরিকল্পিত ফুটবলে বাজিমাত মামনি গ্রুপ পাঠচক্রের। আগাগোড়া রক্ষণাত্মক ফুটবল। বক্সের মধ্যে ইস্টবেঙ্গলের একজন বল পেলেই তিনজন ঘিরে ধরে। যার ফলে বিপক্ষের পায়ের জঙ্গল ভাঙতে পারেনি। শেষলগ্নে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে গোল তুলে নেয়। এদিন শুরু থেকেই সচল ছিল লাল হলুদ। যথেষ্ঠ আক্রমণ করে। রক্ষণ গুছিয়ে নেমেছিল বিনোর দল। ম্যাচের ২৩ মিনিটে প্রভাত লাকরার শট বাঁচায় পাঠচক্রের গোলকিপার অর্ণব। ইস্টবেঙ্গলের মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণে ছিলেন তন্ময়। আগের ম্যাচে কাস্টমসের কাছে আটকে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। দু'বার পিছিয়ে পড়ে ম্যাচে ফেরে। কিন্তু এবার যেই সময় গোল হজম করে, ফেরা কঠিন ছিল। শুরুতে বাঁ দিকে সায়ন, বিক্রমের কম্বিনেশন চোখে পড়ে। কিন্তু একাধিক বার বিপক্ষের বক্সে প্রবেশ করেও বল তেকাঠিতে রাখতে পারেনি। একপেশে ম্যাচ হলেও ইমতিয়াজ, ডেভিড সুযোগ পেলেই ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণকে চাপে ফেলে দিচ্ছিল। প্রথমার্ধে খুব বেশি ওপেন চান্স না পেলেও, বিরতির পর জেসিন টিকে, অমন সিকে নামার পর আক্রমণ বাড়ে লাল হলুদের। বেশ কয়েকটা সুযোগ পান জেসিন এবং অমন। সহজ সুযোগ নষ্ট চাকু মান্ডির। শেষ মিনিটে অমনের শট বাঁচান বিপক্ষের কিপার। নয়তো অন্তত এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারত ইস্টবেঙ্গল। পাঠচক্রের গোলকিপার অর্ণবের প্রশংসা করতেই হবে।