আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির মধ্যে একটি হল কিডনি। মূত্র থেকে শুরু করে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য, ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ সহ একাধিক জরুরি কাজ একা হাতে সামলায় এই অঙ্গ। তাই সুস্থ থাকতে বৃক্কের হাল ঠিক রাখা জরুরি। আজকাল আধুনিক জীবনের অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে বাড়ছে কিডনিতে পাথর তৈরির ঝুঁকি। যার জন্য খাদ্যাভাসের প্রভাব রয়েছে বলে মনে করেন চিকিৎসকেরা। বেশ কয়েকটি খাবার স্বাস্থ্যকর হলেও অতিরিক্ত খেলে কিডনিতে পাথর তৈরির ঝুঁকি বাড়ে। আসলে এই সব খাবারগুলোতে থাকা উচ্চমাত্রার অক্সালেট ক্যালশিয়ামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ক্যালশিয়াম-অক্সালেট স্টোন তৈরি করে। তাহলে কিডনির সমস্যা এড়াতে কোন কোন খাবার সীমিত খাবেন, জেনে নিন বিশদে-
১. পালং শাকঃ ভিটামিন ও খনিজে ভরপুর হলেও পালং শাকে প্রচুর অক্সালেট থাকে। অতিরিক্ত কাঁচা বা রান্না করা পালং শাক খেলে মূত্রে অক্সালেটের মাত্রা বেড়ে স্টোন গঠনের আশঙ্কা তৈরি হয়।
২. বাদামঃ কাজুবাদাম, আমন্ড বা অন্যান্য বাদাম শরীরের জন্য উপকারী হলেও এগুলোতে অক্সালেটের মাত্রা অনেক বেশি। বেশি পরিমাণে খেলে কিডনিতে স্টোন জমার ঝুঁকি বাড়ে। তাই সীমিত পরিমাণে খাওয়াই ভাল।
৩. বিটঃ বিটে প্রচুর অক্সালেট রয়েছে। নিয়মিত বিট খাওয়া বা বিটের রস পান করলে মূত্রে অক্সালেট হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে, যা স্টোনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে।
৪. মিষ্টি আলুঃ ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ মিষ্টি আলু সাধারণত স্বাস্থ্যকর। তবে এই খাবারেও অক্সালেট রয়েছে। বেশি খেলে স্টোন তৈরি হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মিষ্টি আলু সেদ্ধ করে সেই জল ফেলে দিলে কিছুটা ঝুঁকি কমে।
৫. ডার্ক চকলেট ও কোকোঃ অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর হলেও ডার্ক চকলেট ও কোকোতেও উচ্চমাত্রায় অক্সালেট রয়েছে। অতিরিক্ত সেবনে কিডনিতে স্টোনের আশঙ্কা বেড়ে যায়। তবে পর্যাপ্ত জল ও সুষম খাদ্যাভ্যাস ঝুঁকি কিছুটা কমাতে পারে।
৬. চা (বিশেষ করে ব্ল্যাক টি)ঃ চা দৈনন্দিন অভ্যাস হলেও ব্ল্যাক টি-তে অক্সালেটের মাত্রা বেশি। নিয়মিত ও অতিরিক্ত ব্ল্যাক চা পান কিডনি স্টোনর আশঙ্কা বাড়িয়ে দিতে পারে। পরিবর্তে গ্রিন টি বা হার্বাল টি বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষ করে কিডনি স্টোনের ইতিহাস থাকলে এই খাবারগুলো সীমিত পরিমাণে খাওয়ারই শ্রেয়। পাশাপাশি প্রচুর জল পান করা, সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোই হল মূল প্রতিরোধ।
