আজকাল ওয়েবডেস্কঃ বর্তমানে বদহজম, গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য বা পেটের অস্বস্তির মতো সমস্যা অনেকেরই নিত্যসঙ্গী। তবে এসব সমস্যা দূরে রাখতে প্রতিদিনের খাবারেই লুকিয়ে রয়েছে সমাধান, এমনটাই জানিয়েছেন হার্ভার্ড ও এইমসের প্রখ্যাত গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট ডা. সৌরভ সেঠি। তাঁর মতে, আমাদের আশপাশেই রয়েছে এমন কিছু সহজলভ্য খাবার যা নিয়মিত খেলে অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল থাকে, হজমশক্তি বাড়ে এবং পেটের নানা জটিলতা নিয়ন্ত্রণে আসে। তেমনই সাত খাবারের রইল হদিশ-
১. ডালঃ ডাল প্রোটিনের অন্যতম প্রধান উৎস। বিশেষ করে নিরামিষাশীদের খাদ্যতালিকায় মূলত ডালই প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে। বিভিন্ন ধরনের ডাল প্রিবায়োটিক ও ফাইবারে ভরপুর। এটি শুধু হজমেই সাহায্য করে না বরং অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়াও বাড়ায়।
 
 ২. কেফির: কেফির হল একটি প্রোবায়োটিক পানীয় যা দুধ বা জল এবং কেফির দানা দিয়ে তৈরি করা হয়। এটি গাঁজানো প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি করা হয় এবং এর ঘনত্ব ও স্বাদ দইয়ের মতো। তবে কেফিরে দইয়ের তুলনায় কেফিরে অনেক বেশি প্রোবায়োটিক থাকে। এটি হজমশক্তি, হাড়ের স্বাস্থ্য এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। পেটের স্বাস্থ্য ছাড়াও এটি মানসিক ও ত্বকের উপকারেও কাজ করে।
আরও পড়ুনঃ টগবগিয়ে ফুটবে যৌবন, বয়সের চাকা ঘুরবে উল্টোদিকে! রোজকার ১০ মন্ত্রই বদলে দেবে জীবন
৩. চিয়া বীজ: চিয়া বীজে ওমেগা‑৩ এবং এমন ফাইবার রয়েছে যা জলে ভিজে গেলে জেলের আকার নেয়। এটি অন্ত্রের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডনানা রকম প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজে ভরপুর এই বীজ। নিয়মিত চিয়া খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়। এছাড়াও এই বীজের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। চিয়া বীজ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। পাশাপাশি রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতেও পারে এই বীজ।
 
 ৪. বেগুনি বাঁধাকপিঃ গুনি বাঁধাকপিকে পুষ্টির দিক থেকে উন্নত বলে বিবেচনা করা হয়। অ্যান্থাসায়ানিন নামের ফ্ল্যাভোনয়েড ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের উপস্থিতির কারণে বাঁধাকপিগুলো লালচে বেগুনি রং ধারণ করে। বেগুনি বাঁধাকপি শুধু রঙের জন্যই আকর্ষণীয় নয়; এর স্বাস্থ্যগত উপকারিতাও অনেক। এটি কাঁচা খেলে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট পাওয়া, আর ফার্মেন্টেড করে খেলে পাওয়া যায় প্রাকৃতিক প্রোবায়োটিক। এমনই একটি খাবার হল বাঁধাকপি। 
৫. সবুজ কলা অথবা রান্না করা, ঠান্ডা আলুঃ আপনার রান্নাঘরের সাধারণ সবজিও অস্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যার মধ্যে অন্যতম সবুজ কলা এবং রান্না করা, ঠান্ডা আলু। এই সবজিগুলোয় প্রিবায়োটিক রেজিসস্ট্যান্ট স্টার্চ থাকে যা অন্ত্রে ভাল ব্যাকটেরিয়া এবং ব্লাড সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।

 
 ৬. সামুদ্রিক শৈবালঃ অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার পর অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া পুনরুদ্ধারে দুর্দান্ত কাজ করে সামুদ্রিক শৈবাল। স্যুপে দিয়ে কিংবা স্ন্যাকস হিসেবেও এটি খেতে পারেন। 
 
 ৭. ফ্ল্যাক্স সিডঃ চিয়ার মতো তিসির মধ্যেও রয়েছে ওমেগা-৩ জাতীয় ফ্যাটি অ্যাসিড, যা উচ্চ রক্তচাপ, হাইপারটেনশনের ঝুঁকি কমায়। এই বীজের মধ্যে থাকা ফাইবার পেট অনেক ক্ষণ ভর্তি রাখে। পেট পরিষ্কার রাখতে ও হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় সাহায্য করে ফ্ল্যাক্স সিড। হজমের সমস্যা থাকলে তা নিরাময় করবে ফ্ল্যাক্স সিড বা তিসি বীজ। নিয়মিত তিসি খেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে। এমনকী ক্যানসারের ঝুঁকিও কমায় এই বীজ।
