আজকাল ওয়েবডেস্ক: হোলি, দীপাবলি ও গণেশ উৎসব যখন পরিবেশবান্ধবভাবে পালিত হচ্ছে, তখন বকরি ঈদও কি পরিবেশরক্ষার বার্তা নিয়ে পালন করা যায় না?—এই প্রশ্ন তুলে মুসলিম ধর্মগুরুদের কাছে এক ব্যতিক্রমী অনুরোধ জানিয়েছে হিন্দু সংগঠন ‘সংস্কৃতি বাঁচাও মঞ্চ’। সংগঠনের আহ্বায়ক চন্দ্রশেখর তিওয়ারি দাবি করেছেন, বকরি ঈদে প্রতীকী কুরবানি হিসেবে মাটির তৈরি ‘ইকো-ফ্রেন্ডলি ছাগল’ ব্যবহার করা হোক।

সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিওয়ারি বলেন, “গত চার বছর ধরে আমরা মাটির তৈরি ছাগল তৈরি করছি যাতে কুরবানির প্রথার পরিবেশবান্ধব বিকল্প তৈরি হয়। প্রতি ছাগলের দাম ১০০০ টাকা। যখন আমরা পরিবেশবান্ধব দীপাবলি, হোলি এবং গৃহবন্দি প্রতিমা নিরঞ্জনের মাধ্যমে গণেশ উৎসব পালন করি, তখন কেন ঈদ-উল-আধাও পরিবেশবান্ধবভাবে পালিত হবে না?”

তিওয়ারি জানান, পশু কুরবানির ফলে রাস্তাঘাটে রক্তপাতের কারণে হাজার হাজার গ্যালন জল অপচয় হয়। সেই জল অপচয় রোধেই এই উদ্যোগ। “ভারত মায়ের চার সৈনিক—হিন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান—সকলেরই দায়িত্ব পরিবেশ রক্ষা করা,”—বলেন তিনি।

তিনি আরও জানান, “আমরা পরিবেশবান্ধব হোলিকা দহন শুরু করেছি গোবরের উপরে আগুন জ্বালিয়ে, যাতে গাছ কাটা না পড়ে। দীপাবলিতে মাত্র একটি ফুলঝুরি জ্বালাই। দুর্গা ও গণেশ প্রতিমা এখন মাটির তৈরি হয়, এবং আমরা সেগুলি আমাদের বাগানের কিয়ারিতে বিসর্জন দিই, যাতে জলাশয় নষ্ট না হয়।”

তিওয়ারি জানান, এই প্রস্তাবে কারও আঘাত লাগার কথা নয়। বরং সমাজের সব অংশের মানুষ মিলে এক ইতিবাচক বার্তা ছড়াতে পারেন। “আমরা কোনো হিংসা বরদাস্ত করি না। পশুদের প্রতি নিষ্ঠুরতা প্রতিরোধ আইন প্রয়োগ হওয়া উচিত। আমরা শুধু বলছি—এই প্রথাকে বন্ধ করা হোক,”—জানিয়েছেন তিনি।

এই উদ্যোগকে ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে ইতিমধ্যেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ একে সহিষ্ণুতা ও পরিবেশ সচেতনতার অনন্য বার্তা বললেও, কেউ একে ধর্মীয় বিশ্বাসে হস্তক্ষেপ বলেও মনে করছেন। তবে চিঠিটি মুসলিম ধর্মীয় নেতৃত্ব কীভাবে গ্রহণ করেন, সেটিই এখন দেখার বিষয়।