আজকাল ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে এক মহিলা রিসেপশনিস্টের উপর নির্মমভাবে হামলা করা হয়৷ ঘটনাটি থানে জেলার কল্যাণ এলাকায় এক বেসরকারি হাসপাতালে ঘটেছে। ঘটনাটির ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। ঘটনা ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভুক্তভোগী মহিলা দীর্ঘদিন ধরে ওই বেসরকারি হাসপাতালে রিসেপশনিস্ট হিসেবে কর্মরতা। প্রতিদিনের মতোই সেদিনও তিনি হাসপাতালে রোগীদের রেজিস্ট্রেশন এবং ডাক্তারের সময়সূচি পরিচালনার কাজ করছিলেন। খবর মারফত জানা গিয়েছে, চলতি মাসে কয়েকদিন আগের এক দুপুরবেলা প্রায় ১০ জন রোগী হাসপাতালের ওয়েটিং এরিয়ায় অপেক্ষা করছিলেন। তাঁর মধ্যেই উপস্থিত ছিলেন অভিযুক্ত ব্যক্তি গোপাল ঝা। জানা গিয়েছে তিনি চিকিৎসার কারণে এসছিলেন। একজন রোগীর সঙ্গী হিসেবে তিনি সেখানে এসেছিলেন।

সূত্রে আরও জানা গিয়েছে এক পর্যায়ে গোপাল ঝা হাসপাতাল রিসেপশন ডেস্কে আসেন কিছু বিষয় জানতে। তিনি জিজ্ঞাসা করেন, ওনার নম্বর কত। কখন ডাক্তার আসবেন ও দেখবেন। তখন রিসেপশনিস্ট অত্যন্ত নম্রভাবে জানান, ডাক্তার এক মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভের সঙ্গে আলোচনায় ব্যস্ত আছেন। তাই তাঁকে আরও খানিকটা অপেক্ষা করতে হবে। রিসেপশনিস্ট তাঁকে অনুরোধ করেন।

এই কথায় ক্ষুব্ধ হয়ে গোপাল ঝা আচমকা রেগে যান। রিসেপশন ডেস্ক থেকে বেরিয়ে এসে সরাসরি রিসেপশনিস্ট মহিলার দিকে এগিয়ে যান। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, তিনি মহিলার চুল ধরে টেনে ফেলে দেন। বারবার মেঝেতে ধাক্কা দিতে থাকেন। মাটিতে পড়ে যাওয়ার পরও তিনি থেমে যাননি, বরং একাধিকবার মহিলাকে লাথি মারেন। এহেন সময় উপস্থিত অন্যান্য রোগী ও তাঁদের স্বজনরা দ্রুত এগিয়ে আসেন। তড়িঘড়ি অভিযুক্তকে আটকানোর চেষ্টা করেন। শেষমেশ তাঁকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।

এরপর সুযোগ বুঝে অভিযুক্ত গোপাল ঝা হাসপাতাল থেকে দ্রুত পালিয়ে যান। আহত রিসেপশনিস্টকে তৎক্ষণাৎ স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। জানা গিয়েছে, প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

এই ঘটনার পরপরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মানপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ ইতিমধ্যেই গোপাল ঝার বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করেছে। এগুলির মধ্যে রয়েছে শারীরিক হেনস্থা, হামলা এবং নারী নিরাপত্তা লঙ্ঘনের মতো গুরুতর অভিযোগ। অভিযুক্ত ব্যক্তি পলাতক থাকায় তাঁর খোঁজে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

স্থানীয় মানুষ, হাসপাতালের সহকর্মীরা এমনকি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও শেয়ার করে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি তুলেছেন। মারাঠি মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠছে। ঘটনার জেরে একাংশ দাবি করেছেন, অস্থানীয়দের আইন লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

পুলিশ জানিয়েছে যে, বর্তমানে অভিযুক্তের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হচ্ছে। অভিযুক্তকে দ্রুত জেরা করা হবে৷ খুব শীঘ্রই তাঁকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

প্রসঙ্গত, মুম্বইয়ে ফের 'হিন্দি মারাঠি' দ্বন্দ্ব। ঘাটকোপারে এক মহিলার সঙ্গে ভাষাগত দ্বন্দ্বের এই ঘটনাটি ঘটে। ফলস্বরূপ শহরে ফের ভাষা কেন্দ্রিক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার কেন্দ্রে রয়েছেন সঞ্জিরা দেবী নামের এক মহিলা। জানা গিয়েছে, তিনি তাঁর বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এহেন অবস্থায় কয়েকজন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির মুখোমুখি হন। দু পক্ষের একজন অপরজন কে হিন্দি ও মারাঠি বলতে বলায় বিবাদ তুঙ্গে ওঠে। ঘটনা ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি। ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।