বর্ষাকালে চুল ওঠার সমস্যা সাধারণ। মাথায় চিরুনি দিলেই উঠে গোছা গোছা চুল। দামি শ্যাম্পু-কন্ডিশনারেও হয় না কাজ। কী করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়? রইল টিপস।
বর্ষাকালে বায়ুমণ্ডলে প্রচুর আর্দ্রতা থাকে, যার কারণে মাথার ত্বকে ঘাম এবং তেল জমা হতে শুরু করে। এই তেল এবং ময়লা একসাথে মাথার ত্বকের ছিদ্রগুলিকে আটকে দেয়, যার ফলে চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে যায় এবং চুল পড়তে শুরু করে। এ ছাড়া, বৃষ্টির জল প্রায়শই দূষিত হয়, যা চুলের উপর পড়ে এবং তাদের আরও ক্ষতি করে। বর্ষায় ঠান্ডা জল দিয়ে চুল ধোয়ার পরিবর্তে হালকা গরম জল ব্যবহার করুন। এটি মাথার ত্বক পরিষ্কার করে এবং চুলের গোড়া দুর্বল করে না।
বর্ষাকালে মাথার ত্বকে ঘাম এবং ধুলো জমে। এমন পরিস্থিতিতে সপ্তাহে অন্তত দু'বার হালকা এবং প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি শ্যাম্পু (যেমন রিঠা, শিকাকাই) দিয়ে আপনার মাথা ধুয়ে নিন। এতে মাথার ত্বক পরিষ্কার থাকবে এবং চুল আরও শক্তিশালী হবে।
নিয়মিত নারকেল, বাদাম বা আমলকির তেল লাগান। এটি আর্দ্রতা দ্বারা প্রভাবিত চুলকে পুষ্টি জোগায় এবং এর শিকড়কেও শক্তিশালী করে। বর্ষাকালে চুলের জেল, হেয়ার স্প্রে এবং রঙের মতো রাসায়নিক পণ্য ব্যবহার করবেন না। এগুলো চুলকে শুষ্ক এবং দুর্বল করে তুলতে পারে। হেয়ার ড্রায়ার, স্ট্রেইটনার বা কার্লিং আয়রনের মতো সরঞ্জাম অনেক সময় চুলের ক্ষতি করে। যদি একান্ত প্রয়োজন হয়, তাহলে প্রথমে তাপ-প্রতিরোধী স্প্রে ব্যবহার করুন।
সবস ময় চুল আলগা করে বেঁধে রাখুন। টাইট বিনুনি বা খোঁপা চুলের গোড়ায় চাপ দেয় এবং তাতে চুল ভেঙে যেতে পারে। খোলা চুল স্কার্ফ দিয়ে ঢেকে রাখুন যাতে নোংরা জল বা বাতাসের সংস্পর্শে না আসে।
চুলকে ভিতর থেকে মজবুত করতে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াও গুরুত্বপূর্ণ। জিঙ্ক, আয়রন, বায়োটিন, ভিটামিন-ই এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খান। ডিম, পালং শাক, বাদাম, আখরোট, দই এবং সবুজ শাকসবজি অবশ্যই খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
বর্ষাকালে অনেক সময়ই জল পিপাসা কম পায়। কিন্তু শরীর এবং চুলকে হাইড্রেটেড রাখা গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন কমপক্ষে সাত-আট গ্লাস জল পান করুন যাতে আপনার মাথার ত্বক শুষ্ক না থাকে এবং আপনার চুল পুষ্ট থাকে।
কেন বর্ষায় চুল বেশি পড়ে?
র্ষাকালে বাতাসে প্রচুর আর্দ্রতা থাকে। এমন পরিস্থিতিতে, যদি আপনি আপনার চুল বেঁধে রাখেন বা ধুয়ে নেওয়ার পরে সঠিকভাবে শুকিয়ে না রেখে খোলা রাখেন, তাহলে চুলের গোড়ায় ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, এই জিনিসগুলি চুলের গ্রিপ দুর্বল করে দেয় এবং ধীরে ধীরে চুল পড়তে শুরু করে। চুল যখনই ধোবেন, তখন তোয়ালে দিয়ে মুছে ফেলুন। এবং সম্পূর্ণ শুকিয়ে যাওয়ার পরেই চুল বেঁধে রাখার চেষ্টা করুন। ভেজা চুল আঁচড়ানো এড়িয়ে চলুন।
অনেকেই মনে করেন, চুল পড়া রোধ করার জন্য বেশি তেল ব্যবহার করা প্রয়োজন। বিশেষ করে বর্ষাকালে, যখন চুল শুষ্ক বোধ হয়, তখন লোকেরা ক্যাস্টর অয়েল বা ঘি-তেলের মতো ভারী তেল ব্যবহার শুরু করে, কিন্তু এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। এই তেলগুলি চুলের আঠালো করে। এবং মাথার ত্বককে শ্বাস নিতে দেয় না। যার ফলে চুল পড়ে।
বর্ষাকালে ধুলো, ঘাম এবং ময়লা বেশি লেগে থাকে। কিন্তু অনেকেই নিয়মতি চুল ধোন না। যার কারণে মাথার ত্বক নোংরা থাকে। আবার রোজ চুল ধোওয়াও ভাল না। এতে চুল এবং মাথার ত্বক উভয়ই শুষ্ক হয়ে যায়।
