আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত একটি সাধারণ উপাদান হল ধূপকাঠি। গৃহস্থ বাড়ি, পুজোর ঘর কিংবা মন্দির-সব জায়গাতেই ধূপ জ্বালানোর প্রচলন রয়েছে। শুধু ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের অংশই নয়, ঘরের সুবাসের জন্যও অনেকে ধূপ ব্যবহার করেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, ধূপ ও ধূপকাঠির ধোঁয়া স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক।ধূপ ও ধূপকাঠির ধোঁয়া ভারতীয় সংস্কৃতি ও ধর্মীয় আচারের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত ঠিকই। তবে এটিকে নিরাপদভাবে ব্যবহার না করলে এর ক্ষতিকর প্রভাব জীবনঘাতী হতে পারে।  দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারে এটি শরীরে নানা মারাত্মক রোগের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে৷ এমনকি শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে ক্যানসারের বিষও। 


কোন কোন ক্ষতিকর উপাদান থাকে এই ধোঁয়ায়? গবেষণায় দেখা গেছে, ধূপ বা ধূপকাঠি পোড়ালে যে ধোঁয়া বার হয়, তাতে থাকে একাধিক বিষাক্ত রাসায়নিক। যেমন কার্বন মনোক্সাইড, বেনজিন, ফর্মালডিহাইড। এসব উপাদান আমাদের ফুসফুস, শ্বাসনালী, চোখ ও ত্বকের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।


কী কী স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে


বিশেষজ্ঞদের মতে, ধূপ ও ধূপকাঠির ধোঁয়া নিয়মিত শ্বাসের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করলে একাধিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। যেমন-

*শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানির সমস্যা বাড়তে পারে।

*ব্রঙ্কাইটিস ও অন্যান্য শ্বাসনালীর প্রদাহজনিত রোগ হতে পারে।

*চোখ ও ত্বকে জ্বালা, লালভাব ও অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে।

*হৃদপিণ্ডে বাড়তি চাপ পড়ে, অক্সিজেন নেওয়ার ক্ষমতা কমে যায়।

*দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারে ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়তে পারে।


কীভাবে সতর্ক থাকবেন? ধর্মীয় রীতি বা অভ্যাসকে একেবারে বাদ দেওয়া সম্ভব নয়। তবে কিছু সাধারণ সাবধানতা অবলম্বন করলে ঝুঁকি অনেকটাই কমানো যায়। যা হল- 

*ধূপ বা ধূপকাঠি জ্বালালে ঘরের জানালা-দরজা খোলা রাখুন, যাতে বাতাস চলাচল হয়।

*নিয়মিত ও দীর্ঘ সময় ধরে ধূপ জ্বালানো এড়িয়ে চলুন।

*শিশু ও বৃদ্ধদের ধোঁয়া থেকে দূরে রাখুন।

*মৃদু সুগন্ধ বা কম ধোঁয়া বার হয় এমন ধূপকাঠি ব্যবহার করুন।


বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘরকে সুগন্ধি করার জন্য সবসময় ধূপের ওপর নির্ভর করার প্রয়োজন নেই। এর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে এসেনশিয়াল অয়েলের ঘ্রাণ, নিমপাতা বা অন্যান্য ভেষজ উপাদান।