আজকাল ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি ভয়াবহ ঘটনা ঘটল মহারাষ্ট্রের পালঘর জেলায়। মাত্র ১৩ বছর বয়সি এক আদিবাসী নাবালিকাকে প্রথমে জোর করে বিয়ে দেওয়া এবং পরে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে, যাঁরা প্রত্যেকেই নির্যাতিতার পরিবারের সদস্য৷ কিশোরীর এহেন পরিণতিতে চমকে উঠেছে সবাই।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি আহিল্যানগরের৷ পুলিশ জানিয়েছে, নির্যাতিতা কিশোরীর অভিযোগের ভিত্তিতে বর-সহ আহিল্যানগরে তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পুলিশের কাছে ওই নাবালিকা অভিযোগ করে যে সেপ্টেম্বর মাসে তার দাদু তাকে আহিল্যানগরের এক ব্যক্তির সঙ্গে জোর করে বিয়ে দেন। বিয়ের পর থেকেই শুরু হয় লাগাতার যৌন নির্যাতন। বারবার যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে কিশোরী। এমনকী, বরের বাবা-মাও তাকে মানসিকভাবে হেনস্থা করেছে বলে অভিযোগ।

ওই আধিকারিক আরও বলেন, "আমরা এই নাবালিকার উপর জোর করে বিয়ে, মানসিক অত্যাচার এবং বারবার যৌন নির্যাতনের অভিযোগে পরিবারের সদস্য-সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করেছি। এই ঘটনার সঙ্গে একাধিক এক্তিয়ারের প্রশ্ন জড়িত। আমরা দ্রুত সব অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তদন্তে সমন্বয় রেখে কাজ করছি।"
তিনি আরও জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংবিধানের পকসো আইন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইন এবং তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে ঘটনার পূর্ণ তদন্ত জারি রয়েছে৷
প্রসঙ্গত, চলতি বছরেই বিয়ের শোভাযাত্রা দেখতে বেরিয়েছিলেন ১৯ বছরের দলিত যুবক। তখনই তাঁকে স্থানীয় এক বাস স্ট্যান্ডে ডেকে নিয়ে যায় দুই যুবক। দলিত ছেলেটির কোনওরকম উস্কানি ছাড়াই তাঁকে প্রথমে বেধরক মারাধর করে ওই দু'জন। তারপর ছেলেটির গায়ে প্রস্রাব করে দেয় বলে অভিযোগ। একানেই সেষ নয়। ১৯ বছর বয়সী ওই দলিত যুবকের উপর চলে যৌন নির্যাতনও।
নির্মম এই ঘটনাটি ঘটেছে গত ৮ এপ্রিল রাজস্থানের সিকারের ফতেহপুর এলাকায়। ওই ঘটনায় রীতিমত শিউরে উঠেছিল দলিত যুবকটি। ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পরে ১৬ এপ্রিল নির্যাতিতের পরিবারের পক্ষ থেকে এফআইআর দায়ের করা হয়। অভিযোগে বলা হয়েছে যে, ওই দুটি লোক তাঁকে আঘাত করেছিল, পোশাক খুলতে তাঁকে বাধ্য করেছিল এবং তাঁর উপর অস্বাভাবিক যৌন আচরণ করেছিল।
নির্যাতিতের অভিযোগ, অভিযুক্তরা মদ্যপ ছিলেন। তারা যুবকটিকে বোতল দিয়ে আঘাত করেছিল। তাঁর গায়ের উপর প্রস্রাব করে এবং জাতিগত কটুক্তি করেছিল। ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন, অভিযুক্তরা নিজেদের কীর্তির একটি ভিডিও রেকর্ড করেছিল এবং ঘটনাটি কাউকে জানালে তা সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইনের প্রাসঙ্গিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন ডেপুটি পুলিশ সুপার (ডিএসপি) অরবিন্দ কুমার বলেছেন, "আমরা এই ঘটনায় একটি এফআইআর দায়ের করেছি। ভুক্তভোগীর মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়েছে এবং তাঁর বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।"
রাজস্থানের বিরোধী দলনেতা তথা দলিত নেতা টিকা রাম জুলি বলেছেন যে, এই ঘটনা রাজ্যের "প্রকৃত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি" স্পষ্ট করেছে। তিনি বলেন, "এটি আজকের রাজস্থানের বাস্তবতা। একজন দলিত যুবককে অপহরণ করা হয়েছিল, মারধর করা হয়েছিল, যৌন নির্যাতন করা হয়েছিল, প্রস্রাব করা হয়েছিল এবং হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এটি কোনও সিনেমার দৃশ্য নয়, এটি একটি লজ্জাজনক বাস্তবতা।"
