আজকাল ওয়েবডেস্ক: একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর মোবাইল ফোন কেড়ে নিলেন তারই স্কুলের শিক্ষক। এরপর তার ব্যক্তিগত তথ্য ঘাঁটার অভিযোগে বরখাস্ত করা হলো যোধপুরের একটি সরকারি সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপালকে। শিক্ষকের এহেন কাজকে 'ছাত্রীর গোপনীয়তার উপর চরম হস্তক্ষেপ' আখ্যা দিয়ে শনিবার এই কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের মাধ্যমিক শিক্ষা দপ্তর। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ার পরেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন। সম্প্রতি এই ঘটনা ঘিরে চরম হইহই। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে যোধপুরের পিএম শ্রী মহাত্মা গান্ধী সরকারি স্কুলে। স্কুল চলাকালীন শনিবার একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী তার মোবাইল ফোন নিয়ে এসেছিল। খবর অনুযায়ী, স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল শাকিল আহমেদ ফোনটি বাজেয়াপ্ত করেন। শুধু তাই নয়, আধিকারিকদের খবর, তিনি ফোনটি খুলে ছাত্রীর হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, কল ডিটেইলস এবং গ্যালারিও পরীক্ষা করেন। লিখিত বিবৃতিতে তিনি নিজে এই কাজ স্বীকারও করেছেন।

 

শাকিল আহমেদের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, তিনি ক্লাসে ছাত্রীর পাশে বসা এক ছাত্র সম্পর্কেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এরপর ছাত্রীটি বাড়ি ফিরে তার পরিবারকে বিষয়টি জানালে, অভিভাবকেরা স্কুলে গিয়ে প্রবল বিক্ষোভ দেখান।

আরও পড়ুন: সামান্য বচসার জেরে আইন পড়ুয়ার পেট চিরে দিল দুষ্কৃতীরা, কাটা গেল আঙুলও! কোনওমতে প্রাণে বাঁচলেন 

 

শিক্ষা দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়ে পরিবারটি দাবি করে, ফোনে যদি কোনও ব্যক্তিগত তথ্য থাকত, তবে প্রিন্সিপাল সেটির অপব্যবহার করতে পারতেন। এর পরই শিক্ষা অধিকর্তার নির্দেশে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়। তদন্ত রিপোর্টে জানা যায়, প্রিন্সিপাল তাঁর কাজের কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, পরীক্ষা চলার কারণে ছাত্রীটি কোনও ‘রিলস’ তৈরি করেছে কি না, শুধু তা নিশ্চিত করতেই তিনি ফোনটি দেখেছিলেন। তবে তাঁর এই যুক্তি ধোপে টেকেনি। ছাত্রীর ব্যক্তিগত তথ্যে অনধিকার প্রবেশের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে সাসপেনশনের খাঁড়া নেমে আসে।

 

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাজ্যে আরেক হাড়হিম ঘটনা। ফোনে গোপন ছবি তুলে রেখে, দিনের পর দিন সেইসব ছবি ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি এবং জোর করে ধর্ষণ নাবালিকাকে। নাবালিকার পরিবারের অভিযোগ পেয়ে, সন্ধেয় উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া থানার মোহনপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বাবা-ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

 

হাড়োয়া থানার মোহনপুর এলাকায় ওই যুবকের পরিচিতি রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তথ্য, এলাকায় পরিচিত ইউটিউবার হিসেবে। ইউটিউবার ও তাঁর এক নাবালক ছেলে প্রতিবেশী এক নাবালিকাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও ও রিলস বানানোর নাম করে গত কয়েক মাস আগে বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান বলে অভিযোগ ৷

 

জানা গিয়েছে ওই যুবকের নাম অরবিন্দু মণ্ডল। তিনি এবং তাঁর ছেলে, ওই নাবালিকাকে ভিডিও এবং ছবি তোলার নাম করে নানা জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন গত কয়েকমাসে। সেখানে বিভিন্ন ভিডিও বানানোর পাশাপাশি ওই নাবালিকার কিছু গোপন ছবি ও ভিডিও তোলেন অরবিন্দু। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, মাঝেমধ্যেই ওই নাবালিকাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে বাবা-ছেলে মিলে চালাতেন অত্যাচার। যৌন নিগ্রহ এবং ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছে নাবালিকার পরিবার।

 

তথ্য, ওই নাবালিকা সমস্ত ঘটনার কথা তার পরিবারের লোকেদের জানায়। তার পরিবারে পক্ষ থেকে হাড়োয়া থানায় বাবা ও ছেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ জানানো হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তে নেমে হাড়োয়া থানার পুলিশ শনিবার সন্ধেয় ওই এলাকা থেকে অরবিন্দু ও তাঁর নাবালক ছেলেকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানিয়ে অরবিন্দুকে রবিবার দুপুরে পাঠানো হয়েছে বসিরহাট মহকুমা আদালতে ও নাবালোক ছেলেকে জুবিনাল কোর্টে পাঠানো হয় ৷