আজকাল ওয়েবডেস্ক: তেলেঙ্গানার হানামকোন্ডায় এক মর্মান্তিক ঘটনা। রাস্তায় সাত বছর বয়সী এক শিশুর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল দলবদ্ধ বেওয়ারিশ কুকুর। কুকুরের কামড়ে গুরুতর আহত হয়েছে শ্রীজা নামের ওই শিশু। ভয়াবহ এই ঘটনার পর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে ঘটনা ঘিরে চরম বিক্ষোভ এলাকাবাসীর। 

 

এলাকার একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে, শনিবার সকাল আনুমানিক ৭টা ৫০ মিনিট নাগাদ শ্রীজা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। ফুটেজে অন্তত তিনটি কুকুরকে রাস্তায় শুয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। শ্রীজা কিছুটা এগোতেই আরও চারটি কুকুর একসঙ্গে তার দিকে তেড়ে আসে। ভয়ে সেখান থেকে পালাতে গিয়ে সে হোঁচট খেয়ে মাটিতে পড়ে যায়। এই সময়ে রাস্তায় শুয়ে থাকা বাকি কুকুরগুলিও এসে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় এবং শিশুটিকে ঘিরে ধরে।

 

এরপরই কুকুরগুলি একত্রিত হয়ে তার উপর হামলা চালায়। প্রাণভয়ে শিশুটি চিৎকার করতেন থাকে। ভয়ে আর্তনাদ চলতে থাকে। এমন সময়ে তার চিৎকার শুনে এক স্থানীয় পথচারী সতর্ক হন। দ্রুত একটি পাথর নিয়ে কুকুরগুলির দিকে তেড়ে আসেন ওই ব্যক্তি। লোকটিকে দেখেই কুকুরগুলি পালিয়ে যায়। এরপর ওই ব্যক্তি কাঁদতে থাকা শিশুটিকে সাহায্য করেন এবং দ্রুত তাকে কাছের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন।

 

এই ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা পুর কর্তৃপক্ষের তীব্র সমালোচনা করেছেন। এলাকায় বেওয়ারিশ কুকুরের এহেন উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে পুরসভার চরম গাফিলতি রয়েছে বলে তাঁরা অভিযোগ তুলেছেন। এলাকার নাগরিক পরিষেবা দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছে গ্রেটার ওয়ারাঙ্গল মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন।

আরও পড়ুন: গাড়ি দিয়ে পিষে কৃষকহত্যা! তাঁর নাবালিকা কন্যাদেরও যৌন নির্যাতন, বিজেপি নেতার কাণ্ডে কলঙ্কিত দেশ

 

হামলার এই ভয়ঙ্কর সিসিটিভি ফুটেজটি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই আবাসিক এলাকায় বেওয়ারিশ কুকুরদের উপস্থিতি নিয়ে বিতর্ক ফের নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে। যেখানে এক পক্ষ আবাসিক এলাকা থেকে কুকুরদের দূরে রাখতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছে, সেখানে অন্যদিকে একদল পশুপ্রেমী এমন পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন।

 

প্রসঙ্গত, দেশের শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয় পথকুকুরদের জীবাণুমুক্ত করার এবং টিকা দেওয়ার বিষয়ে। আদালত জানায়, পথকুকুরদের রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে জীবাণুকরণ প্রতিষেধক এবং বন্ধ্যাত্বকরণ টিকা দেওয়ার পর, আবার যে জায়গার কুকুর, সেই এলাকাতেই ছেড়ে দেওয়া হবে। ব্যতিক্রম হিসেবে, হালমা চালাতে পারে, অর্থাৎ হিংস্র কিংবা জলাতঙ্ক ঘটাতে পারে, এমন কুকুরদের ছাড়া যাবে না বলেও জানানো হয়। পথকুকুরদের মামলায়, তাদের বিপদ সম্পর্কে শীর্ষ আদালত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির থেকে হলফনামা চেয়েছিল। সূত্রের খবর, শীর্ষ আদালত জানিয়েছে বাংলা এবং দিল্লি পুরসভা, তেলেঙ্গানা ওই হলফনামা জমা দিয়েছে।

 

কিন্তু বাকি রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ওই হলফনামা জমা দেয়নি। দিল্লি পুরসভা ব্যাতিত দিল্লি সরকার আলাদাভাবে সামগ্রিক হলফনামা দেয়নি। সূত্রের খবর, যেসব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হলফনামা জমা দেয়নি পথকুকুর মামলায়, তাদের মুখ্যসচিবদের ৩ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে। করতে হবে জবাবদিহিও।

 

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিক্রম নাথ, বিচারপতি সন্দীপ মেহতা এবং বিচারপতি এনভি অঞ্জরিয়ার বেঞ্চে এই মামলা ওঠে সোমবার। সুপ্রিম কোর্ট এদিন পথকুকুর মামলায় কড়া ভর্ৎসনা করে জানায়, দু'মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরেও হলফনামা জমা না দেওয়ায়, দেশের মুখ পুড়ছে, তেমনটাই তথ্য সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে।